×
প্রশ্ন: আমি দুবাই বসবাস করি, আমাদের আশে-পাশে অনেক শিয়া রয়েছে, তাদের সর্বদা বলতে শুনি: মুাহর্‌রমের নয় ও দশ তারিখে শিয়াদের কর্মকাণ্ড হুসাইনের প্রতি তাদের মহব্বতের বহিঃপ্রকাশ। তাতে কোনো সমস্যা নেই ইসলামের দৃষ্টিকোন থেকে, যেমন ইতোপূর্বে পুত্র ইউসুফকে হারিয়ে ইয়াকূব আলাইহিস সালাম দুঃখ প্রকাশ করেছেন। অতএব, আমাদেরকে শিয়াদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানিয়ে বাধিত করবেন, আরও বলবেন বুকে আঘাত করার বিধান কী?

আশুরার দিন শিয়াদের কর্মকাণ্ড বিদ'আত ও গোমরাহী

ما يفعله الشيعة في عاشوراء بدعة وضلالة


প্রশ্ন: আমি দুবাই বসবাস করি, আমাদের আশে-পাশে অনেক শিয়া রয়েছে, তাদের সর্বদা বলতে শুনি: মুহর্রমের নয় ও দশ তারিখে শিয়াদের কর্মকাণ্ড হুসাইনের প্রতি তাদের মহব্বতের বহিঃপ্রকাশ। তাতে কোনো সমস্যা নেই ইসলামের দৃষ্টিকোন থেকে, যেমন ইতোপূর্বে পুত্র ইউসুফকে হারিয়ে ইয়াকূব আলাইহিস সালাম দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন:

﴿ يَٰٓأَسَفَىٰ عَلَىٰ يُوسُفَ وَٱبۡيَضَّتۡ عَيۡنَاهُ مِنَ ٱلۡحُزۡنِ فَهُوَ كَظِيمٞ ٨٤ قَالُواْ تَٱللَّهِ تَفۡتَؤُاْ تَذۡكُرُ يُوسُفَ حَتَّىٰ تَكُونَ حَرَضًا أَوۡ تَكُونَ مِنَ ٱلۡهَٰلِكِينَ ٨٥ قَالَ إِنَّمَآ أَشۡكُواْ بَثِّي وَحُزۡنِيٓ إِلَى ٱللَّهِ وَأَعۡلَمُ مِنَ ٱللَّهِ مَا لَا تَعۡلَمُونَ ٨٦ ﴾ [يوسف: ٨٤، ٨٦]

“ইউসুফের জন্য আফসোস, আর দুঃখে তার চক্ষুদ্বয় সাদা হয়ে গেল, কিন্তু সে তো সংবরণকারী। তারা বলল: 'আল্লাহর কসম, আপনি তো ইউসুফকে স্মরণ করতেই থাকবেন, যতক্ষণ না আপনি ধ্বংসের ধারপ্রান্তে পৌঁছবেন অথবা ধ্বংস হয়ে যাবেন। সে বলল: 'আমি আল্লাহর কাছেই আমার দুঃখ বেদনার অভিযোগ জানাচ্ছি। আর আল্লাহর পক্ষ থেকে আমি যা জানি, তোমরা তা জান না"[সূরা ইউসুফ, আয়াত: ৮৪-৮৬] অতএব, আমাদেরকে শিয়াদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানিয়ে বাধিত করবেন, আরও বলবেন বুকে আঘাত করার বিধান কী?

উত্তর: আল-হামদুলিল্লাহ,

আশুরার দিন শিয়ারা যেসব কর্মকাণ্ড করে, যেমন ক্রন্দন ও বিলাপ করা, বুকে ও চেহারায় আঘাত করা, মুখ খামচানো, চেইন ও রশি দিয়ে কাঁধে আঘাত করা, ছুরি-চাকু ও ব্লেড দিয়ে মাথা ও দেহ রক্তাক্ত করা ইত্যাদি ইসলামে নতুন আবিষ্কার ও সৃষ্ট বিদ'আত। এসব নিন্দনীয় কাজ থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। মৃত ব্যক্তি যতই মহান কিংবা বড় শহীদ কিংবা মর্যাদা ও সম্মানের পাত্র হোক তার উদ্দেশ্যে এরূপ কিংবা অনুরূপ কোনো কর্মকাণ্ড করার অনুমতি দেন নি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তাঁর জীবদ্দশায় বিখ্যাত অনেক সাহাবী শহীদ হয়েছেন, যাদের মৃত্যুতে তিনি গভীরভাবে শোকাহত হয়েছেন, যেমন হামযা ইবন আব্দুল মুত্তালিব, যায়েদ ইবন হারিসা, জাফর ইবন আবু তালিব ও আব্দুল্লাহ ইবন রাওয়াহা প্রমৃখগণ, কিন্তু তাদের কারও মৃত্যুতে তিনি শিয়াদের ন্যায় কর্মকাণ্ড করেন নি, যদি এতে কোনো কল্যাণ থাকত, অবশ্যই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবার আগে তা আঞ্জাম দিতেন।

ইয়াকূব আলাইহিস সালাম বুকে আঘাত ও চেহারা ক্ষতবিক্ষত করেন নি, শরীর থেকে রক্তও প্রবাহিত করেন নি, এমনকি ইউসুফের হারিয়ে যাওয়ার দিনকে তিনি ঈদ কিংবা শোকের দিন নির্ধারণ করেন নি, তবে নিজের চোখের আড়ালে থাকা প্রিয় পাত্র ইউসুফকে স্মরণ করতেন তিনি এবং তার দুঃখে ব্যথিত হতেন। কারও দুঃখে এরূপ করা দোষণীয় নয়, দোষণীয় হচ্ছে জাহিলি যুগ থেকে কর্জ করে আনা কর্মকাণ্ড, যার থেকে ইসলাম কঠিনভাবে নিষেধ করেছে।

ইমাম বুখারী: (১২৯৪) ও মুসলিম: (১০৩) বর্ণনা করেন, আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَطَمَ الْخُدُودَ وَشَقَّ الْجُيُوبَ وَدَعَا بِدَعْوَى الْجَاهِلِيَّة»

“যে চেহারা আঘাত করে, কাপড় ছিলে ফেলে ও জাহিলি যুগের ন্যায় চিৎকার করে, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়"

মুাহর্রমকে কেন্দ্র করে শিয়ারা যেসব জঘন্য কাজ করে ইসলামের সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কারও মৃত্যুতে এরূপ করেন নি। আর না তার মৃত্যুতে কোনো সাহাবী এরূপ করেছেন, (খোদ শিয়ারাও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুতে এরূপ করে না) অথচ হুসাইনের মৃত্যুর চেয়ে আল্লাহর রাসূলের মৃত্যু অধিক শোকাবহ।

হাফিয ইবন কাসির রহ. বলেন: হুসাইনের মৃত্যুতে সকল মুসলিম দুঃখিত। কারণ, তিনি ছিলেন ভাগ্যবান মুসলিম, একজন আলিম সাহাবী ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদুরী কন্যা ফাতিমার ছেলে। ফাতিমা তাঁর শ্রেষ্ঠ মেয়ে। হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু ছিলেন ইবাদতগোযার, সাহসী ও দানশীল, তার মৃত্যুতে শিয়ারা নির্দিষ্ট এক দিনে যেভাবে দুঃখ প্রকাশ করে ও ব্যথিত হয়, তার সব বানোয়াট ও লোক দেখানো। হুসাইনের বাবা আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু হুসাইন থেকে উত্তম ছিলেন, তাকেও গুপ্ত হামলা করে হত্যা করা হয়, কিন্তু শিয়ারা সে দিন শোক করে না, যেভাবে হুসাইনকে হত্যা করার দিন শোক ও মাতম করে। হুসাইনের বাবা আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু যখন ফজর সালাত পড়াতে জুমু'আর দিন ভোর বেলা মসজিদে যাচ্ছিলেন, তখন খারেজী আব্দুর রহমান ইবন মুলজিম চোরাগোপ্তা হামলা করে তাকে হত্যা করে, সে দিন ছিল ১৭ রমযান ৪০হিজরী। অনুরূপ আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামা'আতের নিকট আলী থেকে উত্তম হলেন উসমান, তাকেও বন্দি অবস্থায় ৩৬হিজরী যিলহজ মাসে তাশরীকের দিনে হত্যা করা হয়। তার এক শাহ রগ থেকে অপর শাহ কেটে ফেলা হয়। সে দিনেও মুসলিমরা শোক প্রকাশ ও আর্তনাদ করার জন্য নির্ধারণ করে নি। অনুরূপ উমার ইবনুল খাত্তাব, যিনি ছিলেন উসমান ও আলী থেকে উত্তম, তাকেও হত্যা করা হয়, যখন তিনি মসজিদের মেহরাবে সালাত অবস্থায় ছিলেন ও কুরআন তিলাওয়াত করছিলেন। তার মৃত্যুর দিনকেও মানুষ শোক প্রকাশের দিন বানায়নি, অনুরূপ আবু বকর সিদ্দিকের মৃত্যুর দিনকেও মানুষ শোক প্রকাশের দিন হিসেবে গ্রহণ করে নি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন দুনিয়া ও আখিরাতে আদম সন্তানদের সরদার, আল্লাহ তাকেও অন্যান্য নবীদের ন্যায় মৃত্যু দিয়েছেন, কোনো মুসলিম তাদের কারও মৃত্যুর দিনকে মাতম ও মর্সিয়ার দিন বানায় নি, যেরূপ করে হুসাইনের মৃত্যুর দিনে মূর্খ ও জাহিল শিয়া সম্প্রদায়... বরং এ জাতীয় মুসীবতের ক্ষেত্রে আলী ইবন হুসাইন তার নানা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যে হাদীস বর্ণনা করেছেন, তার ওপর আমল করাই উত্তম:

«ما من مسلم يصاب بمصيبة فيتذكرها وإن تقادم عهدها فيحدث لها استرجاعا إلا أعطاه الله من الأجر مثل يوم أصيب بها»

“কোনো মুসলিম যদি মুসীবতগ্রস্ত হয়, অতঃপর সে ঐ মুসিবত স্মরণ করে, যদিও অনেক পুরনো হয়, এবং সে সহসা বলে ওঠে ইন্নালিল্লাহ..., আল্লাহ তাকে মুসীবতের দিনের ন্যায় সাওয়াব দিবেন"। ইমাম আহমদ ও ইবন মাজাহ। দেখুন: বিদায়াহ ও নিহায়াহ: (৮/২২১)

ইবন কাসির রাহিমাহুল্লাহ “বিদায়াহ ও নিহায়া": (খণ্ড ৮, পৃষ্ঠা ২২০) গ্রন্থে বলেন: “শিয়া-রাফেযীরা বনু বুহাইয়ের শাসনামলে (৩৩৪-৪৪৭হিজরী) চার শত হিজরী ও তার সমকালীন সময় ১১৩ বছর জুড়ে অনেক সীমালঙ্ঘন করে, তখন বাগদাদ ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ১০ মুহাররম ঢোল বাজাত, রাস্তা-ঘাট ও বাজারে ছাই ও মাটি ছিটাত, দোকানে দোকানে কালো কাপড় উড়াত, অভিনয় করে কেঁদে কেঁদে দুঃখ প্রকাশ করত, অনেকে আবার হুসাইনের সাদৃশ্য গ্রহণ করে সে রাতে পানি পান করত না। কারণ, পিপাসার্ত অবস্থায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। নারীরা তাদের মুখ খুলে খালি পায়ে বাজারে বের হত, চিৎকার করে চেহারা ও বক্ষ খামচাত। এ ছাড়া আরও অনেক বিদ'আত, নৃশংস ও জঘন্য কাজ করত। এ ছাড়া আরও অনেক কিছুই আবিষ্কার ছিল তারা। এ জাতীয় কর্মকাণ্ড দ্বারা তাদের উদ্দেশ্য ছিল বনু উমাইয়াদের শাসনামলকে বদনাম করা, কারণ তাদের আমলে হুসাইনকে হত্যা করা হয়েছে।

এ দিকে শিয়া-রাফেযীদের বিপরীত অবস্থান নিয়েছে শাম দেশের নাসেবি সম্প্রদায়। তারা মুাহররমের ১০ তারিখে নানা রকম খাবার আয়োজন করত। গোসল করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হত এবং সুগন্ধি ব্যবহার করে উন্নত পোশাক পরিধান করত। মুহার্রমের ১০ তারিখকে তারা ঈদের দিন হিসেবে নিয়েছিল। এতে তারা অনেক আনন্দ ফুর্তি করে। এভাবে রাফেজিদের বিরোধিতা ও বিপরীত করার ময়দানে অবর্তীর্ণ হয় তারা"।

১০ মুহার্রম আনন্দ উদযাপন করা যেমন বিদ'আত, তেমন বিদ'আত ও হারাম তাতে মাতম ও শোক প্রকাশ করা। ইবন তাইমিয়্যাহ রহ. বলেন: হুসাইনের হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শয়তান দু'ধরণের বিদ'আত সৃষ্টি করেছে: বিলাপ ও দুঃখ প্রকাশ করার বিদ'আত। যেমন, রক্তারক্তি হওয়া ও চিৎকার করা, কাঁদা ও বিভিন্ন শোক গাথা পাঠ করা। অপর বিদ'আত হচ্ছে আনন্দ ও ঈদ উদযাপন করা। এক পক্ষ দুঃখ ও বিলাপ করে, অপর পক্ষ ঈদ ও আনন্দ প্রকাশ করে, যার অংশ হিসেবে তারা আশুরার দিন সুরমা ব্যবহার ও গোসল করে, পরিবারে সচ্ছলতা দান করে ও উন্নত খাবার-ধাবারের ব্যবস্থা করে। এসবই বিদ'আত গোমরাহী, মুসলিমদের চার ইমামের কেউ এ জাতীয় কর্মকে পছন্দ করেন নি, আর না তাদের ছাড়া কোনো ইমাম এটি পছন্দ করেছেন, না সেটি পছন্দ করেছেন"। মিনহাজুস সুন্নাহ: (৪/৫৫৪)

আরেকটি জরুরি জ্ঞাতব্য যে, ইসলামের শত্রুরা সরল পথ বিচ্যুত শিয়া সম্প্রদায়কে এ জাতীয় হিংস্র ও জঘন্য কর্মকাণ্ডের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে বিশ্বের সামনে ইসলাম ও মুসলিমদের সৌন্দর্য বিনষ্ট করার সুযোগ হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারা করে। “শিয়া ও তাসহীহ" গ্রন্থের লেখক মূসা মুসাবি বলেন: “এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, ১০ মুহার্রম হুসাইনের জন্য মাতম করে ছুরি দিয়ে মাথা ও শরীর রক্তারক্তি করার রেওয়াজ হিন্দুস্তান থেকে ইরান ও ইরাকে পৌঁছেছে, মূলতঃ হিন্দুস্তান দখল করে ইংরেজরা শিয়াদেরকে এর দীক্ষা দেয়। বলার অপেক্ষা রাখে না, শিয়াদের অজ্ঞতা ও সরলতার সুযোগে ইমাম হুসাইনের প্রতি তাদের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশস্বরূপ ইংরেজরা তাদেরকে মাথায় আঘাত করার ভুর পদ্ধতি শিখায়। সম্প্রতি তেহরান ও বাগদাদে নিয়োজিত ব্রিটিশ দূতাবাসগুলো এসব কর্মকাণ্ডে অনেক দান-অনুদান দেয়, যেন শিয়ারা রাস্তায় ও গলিতে এসব ঘৃণিত মিছিল নিয়ে বের হয়। এসব খারাপ ঘটনা উসকে দিয়ে ঔপনিবেশিক ইংরেজী রাজনীতির পিছনের উদ্দেশ্য হচ্ছে, ইন্ডিয়া ও অন্যান্য ইসলামি দেশে ইংরেজ উপনিবেশ গড়ার বিরুদ্ধে যেসব ব্রিটিশ নাগরিক ও সংবাদ পত্রগুলো সরকারের বিপরীতে অবস্থান নিয়ে ছিল, তাদের সামনে একটি যুক্তিসঙ্গত কারণ উপস্থাপন করা, যেন তারাও এসব দেখে এদত অঞ্চলে ব্রিটিশের দখলদারিত্বকে যৌক্তিক স্বীকৃতি দেয়। তাদের সামনে ভারতীয় উপমহাদেশের কুৎসিত ও ভয়ঙ্কর চেহারার এক দৃশ্য উপস্থাপন করে, তাও আবার ইসলামের নামে, যেন ব্রিটেনের জনগণ মনে করে আসলে ভারতীয় উপমহাদেশের জনগণ পিছিয়ে পড়া এক জাতি, তাদেরকে মূর্খতা ও অজ্ঞতার জগত থেকে বের করে আনার জন্য বৃটিনের দখলদারিত্ব যথাযথ।

১০ মুহার্রম আশুরার দিন বিরাট মিছিলে হাজারো মানুষ অংশ নিয়ে রশি ও শিকল দিয়ে নিজের পিঠ রক্তারক্তি করে, ছুরি দিয়ে মাথা জখম করে, যা তারা ইংরেজী ও ইউরোপিয়ান পত্রিকাসমূহে প্রকাশ করে, যেন বিশ্বের সামনে স্পষ্ট হয় সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজরা মানবিক কারণেই এসব দেশ দখল করেছে, যেন তাদের ভেতর প্রগতি ও উন্নত মূল্যবোধ প্রতিস্থাপন করার সুযোগ হয়।

একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে বলা হয়, ইরাকি প্রধানমন্ত্রী "ইয়াসিন আল-হাশেমী" ইরাকে ব্রিটিশ দখলদারিত্বের অবসায়ন কল্পে যখন দ্বিপাক্ষিক আলোচনার জন্য লন্ডন সফরে যান, তখন জনৈক ইংরেজ তাকে বলেন: আমরা ইরাক দখল করেছি ইরাকি জনগণকে সহযোগিতা করার উদ্দেশ্যে, যেন তারা বর্বরতা থেকে উঠে সুখী ও উন্নত জীবন লাভ করে। এ কথা শ্রবণ করে ইয়াসীন হাশেমি আলোচনার কক্ষ থেকে রেগে বেরিয়ে যান, তবে ইংরেজ কৌশলে তার নিকট সবিনয় ক্ষমা চান, এবং তাকে ইরাক সম্পর্কে একটি তথ্য চিত্র দেখার অুনরোধ করেন, যেখানে ধারণ করা ছিল কারবালা ও নাজাফের রাস্তায় হুসাইনি ও কাজেমি মিছিলের ভয়ঙ্কর দৃশ্যের ফিল্ম, যা দেখে ভীতি ও বিরক্তির উদ্রেক হয়, যেমন চেইন ও ছুরি দিয়ে আঘাত করা ইত্যাদি। ইংরেজ তাকে বলতে চেয়েছেন: একটি সভ্য জাতি, যারা ন্যূনতম প্রগতির স্বাদ পেয়েছে, তাদের থেকে এরূপ ঘটনা ঘটতে পারে না"। আল্লাহ ভালো জানেন।