বাকী‘ কবরস্থানের যিয়ারত
ক্যাটাগরিসমূহ
Full Description
বাকী‘ কবরস্থানের যিয়ারত
مقبرة البقيع
< بنغالي- Bengal - বাঙালি>
মদীনা আল মুনাওয়ারার আমর বিল মারূফ ওয়ান নাহী আনিল মুনকার সংস্থা
هيئة الأمر بالمعروف والنهي عن المنكر بالمدينة النبوية
অনুবাদক: মুহাম্মাদ আব্দুর রব আফ্ফান
সম্পাদক: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
ترجمة: محمد عبد الرب عفان
مراجعة: د/ أبو بكر محمد زكريا
বাকী‘ কবরস্থানের যিয়ারত
প্রথমত: বাকী‘ কবরস্থানের পরিচয়:
এটি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগ থেকে বর্তমান যুগ পর্যন্ত মদীনাবাসীর কবরস্থান।[1]
দ্বিতীয়ত: বাকী‘ কবরস্থানের ফযীলত:
নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাকী‘উল গারকাদ (যা ভুলবশতঃ জনসাধারণের নিকট জান্নাতুল বাকী নামে প্রসিদ্ধ) যিয়ারত করতেন ও বাকী‘ কবরবাসীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতেন।
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে যখনই তাঁর কাছে অবস্থানের রাত হত, তিনি শেষ রাতে বাকী‘র দিকে বেরিয়ে যেতেন এবং সেখানে গিয়ে বলতেন:
«السَّلَامُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَوْمٍ مُؤْمِنِينَ، وَأَتَاكُمْ مَا تُوعَدُونَ، غَدًا مُؤَجَّلُونَ، وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللهُ بِكُمْ لَاحِقُونَ، اللهُمَّ اغْفِرْ لِأَهْلِ بَقِيعِ الْغَرْقَدِ»
“হে (কবরের) মুমিন সম্প্রদায়! তোমাদের প্রতি সালাম বর্ষিত হোক, তোমাদের নিকট এসেছে যা তোমাদেরকে ওয়াদা দেওয়া হয়েছিল, কাল কিয়ামত পর্যন্ত তোমরা অবশিষ্ট থাকবে এবং ইনশাআল্লাহ নিশ্চয় আমরাও তোমাদের সাথে মিলিত হব। হে আল্লাহ! তুমি বাকী‘উল গারকাদ বাসীদেরকে ক্ষমা করে দাও।”[2]
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে অপর এক দীর্ঘ হাদীসে বর্ণিত আছে যে, জিবরীল আলাইহিস সালাম বলেন,
«إِنَّ رَبَّكَ يَأْمُرُكَ أَنْ تَأْتِيَ أَهْلَ الْبَقِيعِ فَتَسْتَغْفِرَ لَهُمْ»
“নিশ্চয় আপনার রব আপনাকে নির্দেশ দেন যে, আপনি বাকী‘বাসীদের নিকট আসবেন ও তাদের জন্য ক্ষমা চাইবেন।”[3]
পক্ষান্তরে যে সব হাদীসে পাওয়া যায় যে, ‘বাকী কবরস্থান থেকে সত্তর হাজারের একটি দল পুনরুত্থিত হবে যারা বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবেন বা তার অধিবাসীগণ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে পুনরুত্থিত হবেন ও তাঁর সাথেই হাশর হবে এবং তারা কবরের আযাব থেকে নিরাপদ থাকবেন’ ইত্যাদি, বস্তুত এর কোনো কিছুর বিশুদ্ধতা নেই।
তৃতীয়ত: বাকী‘ যিয়ারতের শরী‘আতসম্মত বিধান ও যিয়ারতকারী সেখানে যা বলবে:
কবর যিয়ারত প্রত্যেক স্থানেই শরী‘আতসম্মত। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
«زُورُوا الْقُبُورَ فَإِنَّهَا تُذَكِّرُ الْمَوْتَ»
“তোমরা কবর যিয়ারত কর, কেননা তা তোমাদের মৃত্যুকে স্মরণ করিয়ে দিবে।”[4]
পুরুষের মধ্যে যারা মদীনায় অবস্থান করবে তাদের জন্য বাকী‘উল গারকাদ কবরস্থান যিয়ারত করা শরী‘আতসম্মত। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বাকী‘ কবরবাসীদের জন্য যিয়ারত ও দো‘আ প্রমাণিত, যেমনটি অতিবাহিত হয়েছে; কিন্তু মহিলাদের জন্য বিশুদ্ধ মত হলো তাদের ক্ষেত্রে তা শরী‘আত সমর্থিত নয়। কেননা নবী বলেন,
«لَعَنَ اللَّهُ زَوَّارَاتِ الْقُبُورِ»
“আল্লাহ বেশি কবর যিয়ারতকারী মহিলার প্রতি লা‘নত করেন।”[5]
কবর যিয়ারতের হাদীসগুলো দ্বারা যিয়ারতের ব্যাপারে স্পষ্ট হয় যে, কবর যিয়ারতের দ্বারা মুসলিমরা তিনটি উপকার পেয়ে থাকে।
(১) কবর দেখে মৃত্যুকে স্মরণ হয়, তাতে মুসলিমগণ যেন সৎ আমল করে কবরের জন্য প্রস্তুতি নেয়। আর তা কবর সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী দ্বারা স্পষ্ট, তিনি বলেন,
«فَزُورُوهَا فَإِنَّهَا تُذَكِّرُ الآخِرَةَ»
“সুতরাং তোমরা কবর যিয়ারত কর, কেননা তা পরকালকে স্মরণ করিয়ে দিবে।” (তিরমিযী, হাদীস নং ১০৫৪)
(২) নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ। কেননা কবর যিয়ারত একটি সুন্নাত। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যিয়ারত করেছেন। সুতরাং মুসলিমগণ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণের সাওয়াব অর্জন করবে এবং নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের হুকুমে সাড়া দেওয়ারও সাওয়াব অর্জন করবে। যেমন, তিনি বলেন, زُورُوهَا অর্থাৎ তোমরা কবর যিয়ারত কর।
(৩) যিয়ারতকারীর মুসলিম ভাইদের প্রতি দো‘আ করে ইহসান ও সহানুভূতি প্রদর্শন। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সহীহভাবে যিয়ারতের যে সব দো‘আর শব্দমালা সাব্যস্ত হয়েছে ও তিনি তাঁর সাহাবীগণকে যা শিক্ষা দিয়েছেন তা মুসলিমদের মৃতদের জন্য দো‘আ যুক্ত, যা তাদের জন্য উপকারী এবং তারা ইনশাআল্লাহ তা থেকে উপকৃত হবেন। আর কবর যিয়ারতকারী তার ভাইয়ের জন্য দো‘আ ও তাদের প্রতি ইহসান করার সাওয়াব অর্জন করবে।
কোনো মুসলিম যখন কবরস্থান যিয়ারত করবে, তার উচিৎ সে যেন শরী‘আতসম্মত বৈধ সীমায় অবস্থান করে কবর যিয়ারত করে। সুতরাং সে মৃতের জন্য শরী‘আতে বর্ণিত দো‘আ দ্বারাই যিয়ারত করবে। অতএব, সে বলবে:
«السَّلَامُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الدِّيَارِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُسْلِمِينَ، وَإِنَّا، إِنْ شَاءَ اللهُ لَلَاحِقُونَ،وَيَرْحَمُ اللهُ الْمُسْتَقْدِمِينَ مِنَّا وَالْمُسْتَأْخِرِينَ، أَسْأَلُ اللهَ لَنَا وَلَكُمُ الْعَافِيَةَ»
“হে মুমিন কবরবাসীগণ আপনাদের প্রতি সালাম, নিশ্চয় আমরাও ইনশাআল্লাহ আপনাদের সাথে মিলিত হব। আপনারা যারা অগ্রগামী হয়েছেন ও যারা পরবর্তীতে আসবেন, আল্লাহ তাদের প্রতি রহম করুন! আমরা আমাদের ও আপনাদের জন্য নিরাপত্তা চাই।”[6]
উল্লিখিত ও ইতোপূর্বে বর্ণিত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বর্ণিত হাদীসের শব্দমালায় মৃতের জন্য দো‘আ এসেছে।
চতুর্থত: বাকী‘উল গারকাদে কবরস্থ কারো কারো স্থান নির্ধারণ সম্পর্কিত বিষয়:
এ বিষয়ে সন্দেহ নেই যে বাকী‘ হলো, মদীনাবাসীদের কবরস্থান। এজন্য সেখানে সাহাবী, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীগণ, তাবে‘ঈগণ ও যে সকল ইমাম সেখানে মারা গেছেন তাদেরকে দাফন করা হয়েছে। সুতরাং বলা হয় সেখানে রয়েছে দশ হাজার সাহাবী।[7]
আর সর্বজনবিদিত কথা হচ্ছে, শরী‘আত কোনো কবরকে চিনে স্বতন্ত্র মর্যাদা দিতে উৎসাহিত করে নি; বরং শরী‘আত কোনো আলামত দ্বারা চিহ্নিত করার মাত্র অনুমতি দেয়, যেমন পাথর দ্বারা চিহ্নিত করা। তবে তাতে কিছু নির্মাণ করা, তার উপর লেখা-লেখি করা নিষেধ। যেমন, জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণিত হাদীসে আছে তিনি বলেন,
«سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى أَنْ يَقْعُدَ عَلَى الْقَبْرِ، وَأَنْ يُقَصَّصَ وَيُبْنَى عَلَيْهِ أَوْ أَنْ يُكْتَبَ عَلَيْهِ، أَوْ يُزَادَ عَلَيْهِ»
“আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কবরে বসতে, কবরে নির্মাণ কাজ করতে, প্লাস্টার করতে ও তার উপর লিখতে নিষেধ করতে শুনেছি।”[8]
উল্লিখিত আলামত স্থাপনের অর্থ বুঝায় কিছুকাল অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পর তা অবশ্য নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে। কেননা কবর চেনা-জানার ব্যাপারে শরী‘আতের কোনো বিধি-বিধানের সম্পর্ক নেই। এ জন্যই বাকী‘ কবর স্থানের চিহ্নগুলি বিলুপ্ত হয়ে গেছে, তাই নিশ্চিতভাবে তা চেনা বা জানা যায় না।
ফিরোযাবাদী বলেন, নিসন্দেহে এ কবরস্থান বহু সংখ্যক মুহাজির ও আনসারদের দ্বারা পরিপূর্ণ, তা সত্বেও সালাফে সালেহীনের কবরের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে বাড়াবাড়ি ও তা পাকা-প্লাস্টার করা থেকে বিরত থাকায় একান্ত অল্প সংখ্যক ব্যতীত তাদের কবরের স্থান নির্ধারিতভাবে চেনা যায় না।”[9]
পক্ষান্তরে কোনো কোনো ঐতিহাসিক কতিপয় কবরের নির্ধারণ সম্পর্কে যা কিছু উল্লেখ করেছেন তা নিছক ধারণাপ্রসূত। আর তা মদীনার বাকী‘ কবরস্থানটি মুসলিম জনসাধারণ সবার জন্যে হওয়ার কারণেই। তারপর সেখানে এমন কোনো অংশও কারো জন্য খাস নেই যে সেখানে এত এত দাফন করার পরও তা সংরক্ষিত থাকবে। এতকাল অতিবাহিত হওয়ার পর তা সম্ভবপরও নয়, অনুরূপ বন্যা-বৃষ্টিও ভূ-পৃষ্ঠের অবস্থাকে পরিবর্তন করে ছেড়েছে। বিশেষ করে মাটিযুক্ত এলাকা, যেমন বাকী‘ কবরস্থান এলাকা। এ এলাকা দিয়ে সেই মাহযূর ছোট নদীও অতিবাহিত যা থেকে মদীনাবাসী ডুবে তলিয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা করত।”[10]
এতদসত্ত্বেও সাহাবী, তাবে‘ঈ ও তাবে-তাবে‘ঈগণের সে সব দলীলের প্রতি গুরুত্ব প্রদান, যেগুলো কবরের উপর নির্মাণ-প্লাস্টার লেখা-লেখি ইত্যাদি নিষেধের প্রমাণ বহন করে। মুসলিমগণ যদি বাকী‘ কবরস্থানের যিয়ারত করে বা সেখান দিয়ে অতিবাহিত হয়, তবে সেখানকার কবরবাসীদের জন্য দো‘আ ব্যতীত কবরের সাথে কোনো ধরণের সংশ্লিষ্টতা শরী‘আতে প্রমাণিত নয় এবং এতে শরী‘আতের দৃষ্টিতে বিশেষ কোনো উপকারও অর্জন হবে না।
এজন্য মুসলিমের জন্য জরুরি হলো, সে যখন বাকী‘ গোরস্থান যিয়ারত করবে তখন সে সাধারণভাবে সেখানকার কবরের অধিবাসীদের জন্য দো‘আ করবে। কোনো নির্ধারিত অংশের এমন করে উদ্দেশ্য করবে না যে, লোকদের মাঝে এটি অমুকের কবর। কেননা এর প্রমাণ করা অসম্ভব। যদিও তা কোনো নিকটাত্মীয়ের কবর হয় বা তা অল্প সময়ের ব্যবধানে হয়ে থাকে। অতএব, যে ব্যক্তি বাকী‘ কবরস্থান যিয়ারত করবে সে যেন এমন বিশ্বাস করে যে, নিশ্চিতভাবে কারো কবর জানা সম্ভব নয়।
পঞ্চমত: বাকী কবরস্থানে যে সমস্ত বিদ‘আত সংঘটিত হয়:
যিয়ারতকারীর জন্য জরুরী হল, সে যেন তার যিয়ারতের মধ্যে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাতি পদ্ধতি অন্বেষণ করে এবং সে এমন শরী‘আত পরিপন্থী বিষয় থেকে সতর্ক হবে যা তাকে গুনাহে লিপ্ত করবে বা তার নেকী কমে যাবে। নিম্নে এমন কতিপয় বিদ‘আত ও কুসংস্কার উল্লেখ করা হলো, যাতে অনেক যিয়ারতকারীই লিপ্ত হয়ে থাকে। এ থেকে যেন যিয়ারতকারীগণ সতর্ক হন:
১। কবরস্থানে গিয়ে মৃতদের উসীলা করা, তাদের নিকট ফরিয়াদ করা ও তাদের নিকট সুপারিশ তলব করা।
২। কবরের সম্মুখে দীর্ঘক্ষণ দণ্ডায়মান হওয়া, বিনয়-নম্রতা প্রকাশ ও এমন বিশ্বাসে নীরবতা পালন যে, এমন করা শরী‘আত নির্দেশিত আদবের অন্তর্ভুক্ত। এসব হলো বাড়াবাড়ি ও কবরবাসীদের ক্ষেত্রে সীমালঙ্ঘন করা। কবরবাসীর সাথে এমন করা শির্কের উসীলা ও মাধ্যম।
৩। কবরবাসীর জন্য সিজদা ও রুকু করা, অথচ সাজদাহ ও রুকু ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং তা আল্লাহ ব্যতীত কারো জন্য করা জয়েয নয়।
৪। কবরস্থানের ভিতরে-বাইরে কবুতরের জন্য এমন বিশ্বাসে শস্য দানা নিক্ষেপ করা যে, তাতে রয়েছে নেকী ও প্রতিদান। বিশেষ করে তা কবুতরকে খাওয়ানোর মধ্যে বা তাতে বরকত রয়েছে এমন বিশ্বাস করা। কারণ এমন কোনো কাজ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম করেন নি, না কোনো সাহাবী করেছেন আর না করেছেন কোনো তাবে‘ঈ বা সালাফে সালেহীন। সুতরাং তা হলো দীনের মধ্যে নব আবিস্কৃত বিদ‘আত। অনুরূপ এতে খাদ্যের অবমাননা ও পথিককে কষ্ট দেওয়া হয় এবং মসজিদের চত্তর ময়লা করা হয়। আর যে ময়লা মসজিদে নববীর ভিতর পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
৫। সেখানে উচ্চস্বরে বিলাপ করা, মুখে মারা বা গাল চাপড়ানো ইত্যাদি। আর সর্বজনবিদিত যে, এসব কর্ম হারাম; বরং কবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত।[11]
৬। সালাতে বাকী‘ কবরস্থানকে সামনে করে সালাত আদায় করা এবং এ সালাতকে “সালাতে যিয়ারা” নামকরণ করা অথচ কবরের দিকে সালাত আদায় করা উলামায়ে কিরামের ঐকমত্যে হারাম।
৭। নারী-পুরুষের সংমিশ্রন, যা হারাম ও নাজায়েয।
৮। সম্মিলিতভাবে সেখানে দো‘আ ও যিকির, অথচ তা এমন আমল যা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম করেন নি, না করেছেন তাঁর সাহাবীগণ, না তাবে‘ঈগণ।
৯। কবর হতে চুম্বন-স্পর্শ করার জন্য বা বরকত বা রোগ মুক্তি কামনায় অন্য কিছুর সাথে মিশানোর জন্য মাটি গ্রহণ করা।
১০। কবরবাসীকে নিজের হাজত পূরণ ও তাদের দ্বারা বালা-মুসীবত দূর করার জন্য বিভিন্ন ম্যাসেজ প্রদান করা।
১১। কবরের সাথে বরকত হাসিলের জন্য সুতা ও নেকড়া প্যাঁচানো এবং দরজা ও জানালায় তালা লাগান।
১২। অনুরূপ বরকত গ্রহণের জন্য কবরস্থানের দেওয়াল, দরজা ও তার মধ্যে যে জিনিস রয়েছে তা স্পর্শ করা।
১৩। কোনো কোনো কবরে পয়সা দেওয়া অথচ তা হল, আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নামে মান্নতের অন্তর্ভুক্ত।
১৪। ফাতেহাখানী, কুলখানী, সূরা ইয়াসীন ও সূরা বাকারার শেষ দু’ আয়াত পাঠ করে মৃতের রূহের জন্য বখশে দেওয়া।
১৫। বরকত গ্রহণের আশায় নখ, চুল, দাঁত কবরে পুঁতে রাখা।
১৬। কবরবাসীর নৈকট্য অর্জনের জন্য কবরে আতর, গোলাপ জল ছিটানো। অথচ এটি আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নৈকট্য অর্জন করার অন্তর্ভুক্ত যা হারাম, কখনো জায়েয নয়।
[1] ওফাউল ওফা: ২/১১৫৪ ইত্যাদি গ্রন্থ।
[2] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৭৪।
[3] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৭৪।
[4] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৭৬।
[5] আবু দাউদ ত্বায়ালিসী, হাদীস নং ২৪৭৮।
[6] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৭৪, ৯৭৫।
[7] তাহকীকুন নুসরা: ১২৫ পৃষ্ঠা।
[8] আবূ দাউদ, হাদীস নং ৩৩২৫, ৩২২৬, তিরমিযী, হাদীস নং ১০৫২, নাসাঈ, হাদীস নং ২০২৭; হাকেম: ১/৫২৫ তিনি সহীহ বলেছেন।
[9] আল-মাগানিমুল মুতাবাহ: ২/৫০৮।
[10] তারিখুল মদীনা: ১/১৬৮।
[11] আল-মাক্কীর আযযাওয়াজের: ১/৩০৬।