আল-কোরআন ও সুন্নাহ হতে সংকলিত শরীয়তসম্মত উপায়ে ঝাড়-ফুঁক
ক্যাটাগরিসমূহ
Full Description
আল-কোরআন ও সুন্নাহ হতে সংকলিত শরীয়তসম্মত উপায়ে ঝাড়-ফুঁক
[ বাংলা – Bengali – بنغالي ]
আবদুল্লাহ ইবন আব্দুর রহমান আল-জিবরীন রহ.
অনুবাদ: আবুল কাসেম মুহাম্মাদ মাসুম বিল্লাহ
সম্পাদনা : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
2014 - 1435
﴿ الرقية في ضوء الشرع ﴾
« باللغة البنغالية »
الشيخ عبد الله بن عبد الرحمن الجبرين
ترجمة: أبو القاسم محمد معصوم بالله
مراجعة: د/ أبو بكر محمد زكريا
2014 - 1435
শরীয়ত সম্মত উপায়ে ঝাড়-ফুঁক করার শর্তাবলী
১- ঝাড়-ফুঁক হতে হবে আল্লাহর কোরআন অথবা, তাঁর নামসমূহ অথবা তাঁর গুনাবলীসমূহ দ্বারা।
২- ঝাড়-ফুঁক হতে হবে আরবী বা অন্য যে কোনো ভাষায়, যার অর্থ জানা যায়।
৩- এ কথায় দৃঢ় বিশ্বাস রাখতে হবে যে, (রোগ চিকিৎসায়) ঝাড়-ফুঁকের কোনোই ক্ষমতা নাই, বরং রোগ শিফা’র সকল ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলারই।
৪- ঝাড়-ফুঁক যেন হারাম অবস্থায় না হয় অর্থাৎ নাপাক অবস্থায় অথবা, কবর বা পায়খানায় বসে ঝাড়-ফুঁক করা যাবে না।
আল-কোরআনে বর্ণিত ঝাড়-ফুঁক সংক্রান্ত আয়াতসমূহ:
১- সূরা আল-ফাতিহা।
﴿ بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ ١ ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٢ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ ٣ مَٰلِكِ يَوۡمِ ٱلدِّينِ ٤ إِيَّاكَ نَعۡبُدُ وَإِيَّاكَ نَسۡتَعِينُ ٥ ٱهۡدِنَا ٱلصِّرَٰطَ ٱلۡمُسۡتَقِيمَ ٦ صِرَٰطَ ٱلَّذِينَ أَنۡعَمۡتَ عَلَيۡهِمۡ غَيۡرِ ٱلۡمَغۡضُوبِ عَلَيۡهِمۡ وَلَا ٱلضَّآلِّينَ ٧ ﴾ [الفاتحة: ١، ٧]
(১) “আল্লাহর নামে শুরু করছি, যিনি পরম করুণাময় ও অতি দয়ালু। (২) সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলার জন্য, যিনি সকল সৃষ্টিজগতের একাম্ত পরিচালনাকারী ও মালিক (৩) যিনি পরম দয়ালু, অতিশয় করুণাময়। (৪) যিনি বিচারদিনের মালিক। (৫) আমরা একমাত্র আপনারই ‘ইবাদত করি আর আপনারই নিকট সাহায্য চাই। (৬) আমাদেরকে সরলপথ প্রদান করুন। তাদের পথে, যাদেরকে আপনি নে‘মত দান করেছেন। (৭) তাদের পথে নয়, যারা আপনার পক্ষ হতে গযবপ্রাপ্ত (অর্থাৎ, ইহুদীগণ)। আর তাদের পথেও নয়, যারা পথভ্রষ্ট (গোমরাহ) হয়েছে” (অর্থাৎ, খৃষ্টানগণ)। আমীন।
২- সূরা আল-বাক্বারার ১, ২, ৩, ৪ ও ৫ আয়াত।
﴿ الٓمٓ ١ ذَٰلِكَ ٱلۡكِتَٰبُ لَا رَيۡبَۛ فِيهِۛ هُدٗى لِّلۡمُتَّقِينَ ٢ ٱلَّذِينَ يُؤۡمِنُونَ بِٱلۡغَيۡبِ وَيُقِيمُونَ ٱلصَّلَوٰةَ وَمِمَّا رَزَقۡنَٰهُمۡ يُنفِقُونَ ٣ وَٱلَّذِينَ يُؤۡمِنُونَ بِمَآ أُنزِلَ إِلَيۡكَ وَمَآ أُنزِلَ مِن قَبۡلِكَ وَبِٱلۡأٓخِرَةِ هُمۡ يُوقِنُونَ ٤ أُوْلَٰٓئِكَ عَلَىٰ هُدٗى مِّن رَّبِّهِمۡۖ وَأُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُفۡلِحُونَ ٥ ﴾ [البقرة: ١، ٥]
অর্থাৎ, (১) “আলিফ লা-ম মী-ম (২) এটা সেই কিতাব যার মধ্যে কোনো প্রকার সন্দেহের অবকাশ নেই, যারা আল্লাহভীরু তাদের জন্য পথপ্রদর্শনকারী। (৩) যারা অদেখা বিষয়ের উপর ঈমান আনে এবং সালাত কায়েম করে আর আমি তাদেরকে যে রুযী দান করেছি তা থেকে খরচ করে। (৪) আর তারা ঈমান এনেছে, যে সব কিছু আপনার প্রতি নাযিল হয়েছে এবং যা আপনার পূর্বে নাযিল হয়েছে, আর আখেরাতের প্রতি তারা দৃঢ় বিশ্বাস করে। (৫) তারাই তাদের মালিক ও সার্বিক তত্বাবধানকারী আল্লাহর পক্ষ হতে প্রাপ্ত হেদায়াতের উপর প্রতিষ্ঠিত রয়েছে আর এরাই সফলকাম।” (সূরা আল-বাক্বারার ১, ২, ৩, ৪ ও ৫ আয়াত)।
৩- সূরা আল-বাক্বারার ১৬৪ নং আয়াত।
﴿ إِنَّ فِي خَلۡقِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَٱخۡتِلَٰفِ ٱلَّيۡلِ وَٱلنَّهَارِ وَٱلۡفُلۡكِ ٱلَّتِي تَجۡرِي فِي ٱلۡبَحۡرِ بِمَا يَنفَعُ ٱلنَّاسَ وَمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ مِنَ ٱلسَّمَآءِ مِن مَّآءٖ فَأَحۡيَا بِهِ ٱلۡأَرۡضَ بَعۡدَ مَوۡتِهَا وَبَثَّ فِيهَا مِن كُلِّ دَآبَّةٖ وَتَصۡرِيفِ ٱلرِّيَٰحِ وَٱلسَّحَابِ ٱلۡمُسَخَّرِ بَيۡنَ ٱلسَّمَآءِ وَٱلۡأَرۡضِ لَأٓيَٰتٖ لِّقَوۡمٖ يَعۡقِلُونَ ١٦٤ ﴾ [البقرة: ١٦٤]
“নিশ্চয়ই আসমান ও যমীনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের পরিবর্তনে, সমুদ্রে জাহাজসমুহের চলাচলে মানুষের জন্য কল্যাণ রয়েছে। আর আল্লাহ তা‘আলা আকাশ থেকে যে পানি বর্ষণ করেছেন, তা দ্বারা মৃত যমীনকে সজীব করে তুলেছেন এবং তাতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সবরকম জীব-জন্তু। আর আবহাওয়া পরিবর্তনে ও মেঘমালায় যা তাঁরই হুকুমের অধীনে আসমান ও যমীনের মাঝে বিচরণ করে – নিশ্চয়ই সে সমস্ত বিষয়ের মাঝে নিদর্শন রয়েছে বুদ্ধিমান সম্প্রদায়ের জন্য।” (আল-বাকারা, আয়াত নং-১৬৪)।
৪- আয়াতুল-কুরসী (সূরা আল-বাক্বারার ২৫৫ নং আয়াত)।
﴿ ٱللَّهُ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡحَيُّ ٱلۡقَيُّومُۚ لَا تَأۡخُذُهُۥ سِنَةٞ وَلَا نَوۡمٞۚ لَّهُۥ مَا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِي ٱلۡأَرۡضِۗ مَن ذَا ٱلَّذِي يَشۡفَعُ عِندَهُۥٓ إِلَّا بِإِذۡنِهِۦۚ يَعۡلَمُ مَا بَيۡنَ أَيۡدِيهِمۡ وَمَا خَلۡفَهُمۡۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيۡءٖ مِّنۡ عِلۡمِهِۦٓ إِلَّا بِمَا شَآءَۚ وَسِعَ كُرۡسِيُّهُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَۖ وَلَا ئَُودُهُۥ حِفۡظُهُمَاۚ وَهُوَ ٱلۡعَلِيُّ ٱلۡعَظِيمُ ٢٥٥ ﴾ [البقرة: ٢٥٥]
“আল্লাহ, তিনি ব্যতীত অন্য কোনো সত্য মা‘বুদ নেই, তিনি চিরজীবিত এবং চিরন্তন। তাকে তন্দ্রা (ঝিমানো) ও ঘূম কখনো স্পর্শ করতে পারে না। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে সবই তারই, এমন কে আছে যে, তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর নিকট সূপারিশ করতে পারে? (মানুষের) চোখের সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে, সে সবই তিনি জানেন। তিনি যতটুকু ইচ্ছা করেন ততটুকু ব্যতীত তাঁর অনন্ত জ্ঞানের কোনো কিছুকেই কেউ আয়ত্ব করতে পারেনা। তার ‘কুরসী’ সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন কাজ নয়। তিনি সমুন্নত ও মহিয়ান।” (সূরা আল-বাক্বারার ২৫৫ নং আয়াত)।
৫- সূরা আল-বাক্বারার ২৮৫ ও ২৮৬ নং আয়াত।
﴿ ءَامَنَ ٱلرَّسُولُ بِمَآ أُنزِلَ إِلَيۡهِ مِن رَّبِّهِۦ وَٱلۡمُؤۡمِنُونَۚ كُلٌّ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَمَلَٰٓئِكَتِهِۦ وَكُتُبِهِۦ وَرُسُلِهِۦ لَا نُفَرِّقُ بَيۡنَ أَحَدٖ مِّن رُّسُلِهِۦۚ وَقَالُواْ سَمِعۡنَا وَأَطَعۡنَاۖ غُفۡرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيۡكَ ٱلۡمَصِيرُ ٢٨٥ لَا يُكَلِّفُ ٱللَّهُ نَفۡسًا إِلَّا وُسۡعَهَاۚ لَهَا مَا كَسَبَتۡ وَعَلَيۡهَا مَا ٱكۡتَسَبَتۡۗ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذۡنَآ إِن نَّسِينَآ أَوۡ أَخۡطَأۡنَاۚ رَبَّنَا وَلَا تَحۡمِلۡ عَلَيۡنَآ إِصۡرٗا كَمَا حَمَلۡتَهُۥ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِنَاۚ رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلۡنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِۦۖ وَٱعۡفُ عَنَّا وَٱغۡفِرۡ لَنَا وَٱرۡحَمۡنَآۚ أَنتَ مَوۡلَىٰنَا فَٱنصُرۡنَا عَلَى ٱلۡقَوۡمِ ٱلۡكَٰفِرِينَ ٢٨٦ ﴾ [البقرة: ٢٨٥، ٢٨٦]
“রাসুল ঈমান রাখেন ঐ সমস্ত বিষয়ে, যা তার মালিক ও নিয়ন্ত্রক (আল্লাহর) পক্ষ হতে অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুমিনরাও। সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেস্তাদের প্রতি, তার কিতাবসমূহের প্রতি এবং তার নবীগণের প্রতি। তারা বলে আমরা তাঁর নবীগণের মধ্যে (ঈমানের ব্যাপারে) কোনো প্রকার পার্থক্য করি না। তারা বলে: আমরা শ্রবণ করলাম ও আনুগত্য স্বীকার করে নিলাম। হে আমাদের মালিক ও নিয়ন্ত্রক, আমরা আপনারই নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি, আপনার দিকেই আমাদেরকে ফিরে যেতে হবে।
কোনো ব্যক্তিকেই আল্লাহ তার সামর্থের বাইরে কোনো কাজের ভার দেন না, সে তাই পাবে যা সে উপার্জন করে, আর যা সে অর্জন করে তা তারই উপর বর্তায়।
হে আমাদের মালিক ও নিয়ন্ত্রক! যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি, তাহলে এ জন্য আমাদেরকে ধর-পাকড় করবেন না। হে আমাদের মালিক ও নিয়ন্ত্রক! আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর যেরূপ কঠিন বোঝা অর্পণ করেছেন, আমাদের উপর তদ্রূপ কোনো বোঝা অর্পণ করবেন না।
হে আমাদের মালিক ও নিয়ন্ত্রক! আমাদের শক্তি-সামর্থের বাইরে কোনো বোঝা বহনে আমাদেরকে বাধ্য করবেন না। আপনি আমাদেরকে ক্ষমা করুন, আমাদের প্রতি দয়া করুন, আপনিই আমাদের অভিভাবক, অতএব কাফিরগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন।” (সূরা আল-বাক্বারার ২৮৫ ও ২৮৬ নং আয়াত)।
৬- সূরা আল-‘ইমরানের ১৯০ ও ১৯১ নং আয়াত।
﴿ إِنَّ فِي خَلۡقِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَٱخۡتِلَٰفِ ٱلَّيۡلِ وَٱلنَّهَارِ لَأٓيَٰتٖ لِّأُوْلِي ٱلۡأَلۡبَٰبِ ١٩٠ ٱلَّذِينَ يَذۡكُرُونَ ٱللَّهَ قِيَٰمٗا وَقُعُودٗا وَعَلَىٰ جُنُوبِهِمۡ وَيَتَفَكَّرُونَ فِي خَلۡقِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ رَبَّنَا مَا خَلَقۡتَ هَٰذَا بَٰطِلٗا سُبۡحَٰنَكَ فَقِنَا عَذَابَ ٱلنَّارِ ١٩١ ﴾ [ال عمران: ١٩٠، ١٩١]
“নিশ্চয়ই আসমান ও যমীন সৃষ্টিতে ও দিবা-রাত্রির পরিবর্তনে জ্ঞানবানদের জন্য নিদর্শন রয়েছে। যারা দাঁড়িয়ে বসে ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং আসমান ও জমিন সৃষ্টির বিষয়ে চিন্তা-গবেষণা করে আর বলে, হে আমাদের রাব্ব্! আপনি এসব বৃথা (অযথা) সৃষ্টি করেননি। অতি পবিত্র আপনি, অতএব আমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে বাঁচান।” (আল-‘ইমরানের ১৯০ ও ১৯১ নং আয়াত)।
৭- সূরা আল-আ‘রাফের ৫৪ নং আয়াত।
﴿ إِنَّ رَبَّكُمُ ٱللَّهُ ٱلَّذِي خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٖ ثُمَّ ٱسۡتَوَىٰ عَلَى ٱلۡعَرۡشِۖ يُغۡشِي ٱلَّيۡلَ ٱلنَّهَارَ يَطۡلُبُهُۥ حَثِيثٗا وَٱلشَّمۡسَ وَٱلۡقَمَرَ وَٱلنُّجُومَ مُسَخَّرَٰتِۢ بِأَمۡرِهِۦٓۗ أَلَا لَهُ ٱلۡخَلۡقُ وَٱلۡأَمۡرُۗ تَبَارَكَ ٱللَّهُ رَبُّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٥٤ ﴾ [الاعراف: ٥٤]
“নিশ্চয়ই তোমাদের রব হচ্ছেন সেই আল্লাহ যিনি আসমান ও যমীনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনি আরশের উপর উঠলেন, তিনি দিনকে রাত দ্বারা ঢেকে দেন এমনভাবে যে, ওরা একে অন্যের পিছে পিছে দ্রুতগতিতে খুজে বেড়ায়। আর চন্দ্র, সূর্য ও নক্ষত্ররাজিসহ সবই তার হুকুমের অনুগত। জেনে রাখো, সৃষ্টি করা ও আদেশ করা একমাত্র তাঁরই কাজ। তিনিই বরকতময় আল্লাহ, যিনি সারা জাহানের মালিক, নিয়ন্ত্রক ও নির্বাহক।” (আল-আ‘রাফের ৫৪ নং আয়াত)
৮- সূরা আল-আ‘রাফের ১১৭, ১১৮, ১১৯ নং আয়াত।
﴿ ۞وَأَوۡحَيۡنَآ إِلَىٰ مُوسَىٰٓ أَنۡ أَلۡقِ عَصَاكَۖ فَإِذَا هِيَ تَلۡقَفُ مَا يَأۡفِكُونَ ١١٧ فَوَقَعَ ٱلۡحَقُّ وَبَطَلَ مَا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ١١٨ فَغُلِبُواْ هُنَالِكَ وَٱنقَلَبُواْ صَٰغِرِينَ ١١٩ ﴾ [الاعراف: ١١٧، ١١٩]
“অতঃপর আমরা অহীযোগে বললাম, এবার তোমার লাঠিখানা নিক্ষেপ করো, এটা সঙ্গে সঙ্গে জাদুকররা জাদুবলে যা বানিয়েছিল সেগুলোকে গিলতে লাগল। সুতরাং এভাবে প্রকাশ হয়ে গেল সত্য বিষয় আর তাদের বানোয়াট কর্ম মিথ্যায় প্রতিপন্ন হলো। ফলে, তারা সেখানেই পরাজিত হয়ে গেল এবং অতীব অপদস্থ হল।” (সূরা আল-আ‘রাফের ১১৭, ১১৮, ১১৯ নং আয়াত)।
৯- সূরা ইউনুছের ৭৯, ৮০, ৮১ নং আয়াত।
﴿ وَقَالَ فِرۡعَوۡنُ ٱئۡتُونِي بِكُلِّ سَٰحِرٍ عَلِيمٖ ٧٩ فَلَمَّا جَآءَ ٱلسَّحَرَةُ قَالَ لَهُم مُّوسَىٰٓ أَلۡقُواْ مَآ أَنتُم مُّلۡقُونَ ٨٠ فَلَمَّآ أَلۡقَوۡاْ قَالَ مُوسَىٰ مَا جِئۡتُم بِهِ ٱلسِّحۡرُۖ إِنَّ ٱللَّهَ سَيُبۡطِلُهُۥٓ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُصۡلِحُ عَمَلَ ٱلۡمُفۡسِدِينَ ٨١ ﴾ [يونس: ٧٩، ٨١]
“আর ফিরআউন বললো: আমার নিকট সমস্ত সুদক্ষ জাদুকরদেরকে নিয়ে এসো। অতঃপর যখন জাদুকররা এলো, তখন মূসা তাদেরকে বললেন: নিক্ষেপ করো, যা কিছু তোমরা নিক্ষেপ করতে চাও। অতঃপর তারা যখন নিক্ষেপ করলো, তখন মূসা বললো: যতো জাদুই তোমরা এনেছ, আল্লাহ নিশ্চয়ই এসব এটাকে পন্ড (ভন্ডুল) করে দিবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ এমন ফাসাদকারীদের ‘আমলকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে দেন না।” (সূরা ইউনুছের ৭৯, ৮০, ৮১ নং আয়াত)।
১০- সূরা আল-ইসরা (বনী-ইসরাইলের) ৮২ নং আয়াত।
﴿ وَنُنَزِّلُ مِنَ ٱلۡقُرۡءَانِ مَا هُوَ شِفَآءٞ وَرَحۡمَةٞ لِّلۡمُؤۡمِنِينَ وَلَا يَزِيدُ ٱلظَّٰلِمِينَ إِلَّا خَسَارٗا ٨٢ ﴾ [الاسراء: ٨٢]
“আর আমরা অবতীর্ণ করি কুরআনে এমন সব বিষয়, যা রোগের শিফা বা সুচিকিৎসা এবং মুমিনদের জন্য রহমত, আর তা জালিমদের ক্ষতিই বৃদ্ধি করে।” (সূরা আল-ইসরা (বনী-ইসরাইলের) ৮২ নং আয়াত)।
১১- সূরা ত্বাহা এর ৬৫, ৬৬, ৬৭, ৬৮ ও ৬৯ নং আয়াত।
﴿ قَالُواْ يَٰمُوسَىٰٓ إِمَّآ أَن تُلۡقِيَ وَإِمَّآ أَن نَّكُونَ أَوَّلَ مَنۡ أَلۡقَىٰ ٦٥ قَالَ بَلۡ أَلۡقُواْۖ فَإِذَا حِبَالُهُمۡ وَعِصِيُّهُمۡ يُخَيَّلُ إِلَيۡهِ مِن سِحۡرِهِمۡ أَنَّهَا تَسۡعَىٰ ٦٦ فَأَوۡجَسَ فِي نَفۡسِهِۦ خِيفَةٗ مُّوسَىٰ ٦٧ قُلۡنَا لَا تَخَفۡ إِنَّكَ أَنتَ ٱلۡأَعۡلَىٰ ٦٨ وَأَلۡقِ مَا فِي يَمِينِكَ تَلۡقَفۡ مَا صَنَعُوٓاْۖ إِنَّمَا صَنَعُواْ كَيۡدُ سَٰحِرٖۖ وَلَا يُفۡلِحُ ٱلسَّاحِرُ حَيۡثُ أَتَىٰ ٦٩ ﴾ [طه: ٦٥، ٦٩]
“তারা বললো: হে মূসা, হয় তুমি নিক্ষেপ করো, অথবা আমরাই প্রথমে নিক্ষেপ করি। মূসা বললো: বরং তোমরাই নিক্ষেপ করো, তাদের জাদুর প্রভাবে হঠাৎ মূসার মনে হলো যে, তাদের দড়ি ও লাঠিগুলো ছুটাছুটি করছে। অতঃপর মূসা তার অন্তরে কিছু ভীতি অনুভব করলো। আমি বললাম: ভয় করো না, তুমিই প্রবল (বিজয়ী হবে)। তোমার ডান হাতে যা আছে, তা নিক্ষেপ করো, এটা তারা যা বানিয়েছে, তা গিলে ফেলবে, তারা যা তৈরী করেছে তা তো শুধু জাদুকরের কৌশল, জাদুকর যেখানেই আসুক সফল হবে না।” (সূরা ত্বাহা এর ৬৫, ৬৬, ৬৭, ৬৮ ও ৬৯ নং আয়াত)।
১২- সূরা আল-মুমিনুনের ১১৫, ১১৬, ১১৭ ও ১১৮ নং আয়াত।
﴿ أَفَحَسِبۡتُمۡ أَنَّمَا خَلَقۡنَٰكُمۡ عَبَثٗا وَأَنَّكُمۡ إِلَيۡنَا لَا تُرۡجَعُونَ ١١٥ فَتَعَٰلَى ٱللَّهُ ٱلۡمَلِكُ ٱلۡحَقُّۖ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ رَبُّ ٱلۡعَرۡشِ ٱلۡكَرِيمِ ١١٦ وَمَن يَدۡعُ مَعَ ٱللَّهِ إِلَٰهًا ءَاخَرَ لَا بُرۡهَٰنَ لَهُۥ بِهِۦ فَإِنَّمَا حِسَابُهُۥ عِندَ رَبِّهِۦٓۚ إِنَّهُۥ لَا يُفۡلِحُ ٱلۡكَٰفِرُونَ ١١٧ وَقُل رَّبِّ ٱغۡفِرۡ وَٱرۡحَمۡ وَأَنتَ خَيۡرُ ٱلرَّٰحِمِينَ ١١٨ ﴾ [المؤمنون: ١١٥، ١١٨]
“তোমরা কি মনে করেছিলে যে, আমরা তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার নিকট ফিরে আসবে না? মহিমান্বিত আল্লাহ যিনি সত্যিকারের বাদশাহ, তিনি ব্যতীত কোনো সত্য মা‘বুদ নেই, সম্মানিত ‘আরশের তিনি রব্ব। যে ব্যক্তি আল্লাহর সহিত অন্য মা‘বুদকে ডাকে, ঐ বিষয়ে তার নিকট কোনো প্রমাণ নেই, তার হিসাব তার রাব্বের নিকট আছে, নিশ্চয়ই কাফেররা সফলকাম হবে না। বলো, হে আমার রব্ব, ক্ষমা করুন ও দয়া করুন, দয়ালুদের মধ্যে আপনিই তো শ্রেষ্ঠ দয়ালু।” (সূরা আল-মুমিনুনের ১১৫, ১১৬, ১১৭ ও ১১৮ নং আয়াত)।
১৩- সূরা আস-সাফ্ফাতের ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯ ও ১০ নং আয়াত।
﴿ وَٱلصَّٰٓفَّٰتِ صَفّٗا ١ فَٱلزَّٰجِرَٰتِ زَجۡرٗا ٢ فَٱلتَّٰلِيَٰتِ ذِكۡرًا ٣ إِنَّ إِلَٰهَكُمۡ لَوَٰحِدٞ ٤ رَّبُّ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَمَا بَيۡنَهُمَا وَرَبُّ ٱلۡمَشَٰرِقِ ٥ إِنَّا زَيَّنَّا ٱلسَّمَآءَ ٱلدُّنۡيَا بِزِينَةٍ ٱلۡكَوَاكِبِ ٦ وَحِفۡظٗا مِّن كُلِّ شَيۡطَٰنٖ مَّارِدٖ ٧ لَّا يَسَّمَّعُونَ إِلَى ٱلۡمَلَإِ ٱلۡأَعۡلَىٰ وَيُقۡذَفُونَ مِن كُلِّ جَانِبٖ ٨ دُحُورٗاۖ وَلَهُمۡ عَذَابٞ وَاصِبٌ ٩ إِلَّا مَنۡ خَطِفَ ٱلۡخَطۡفَةَ فَأَتۡبَعَهُۥ شِهَابٞ ثَاقِبٞ ١٠ ﴾ [الصافات: ١، ١٠]
“সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান ফিরিশতাদের শপথ, এবং যারা কঠোর পরিচালক, আর যারা যিক্র আবৃতিতে রত (তাদের শপথ)। নিশ্চয়ই তোমাদের মা‘বুদ এক, যিনি আসমান, যমীন এবং এদুয়ের মধ্যবর্তী যা কিছু আছে, এসব কিছুর রব্ব। এ ছাড়াও উদয়স্থানসমুহের ও রব্ব তিনি। আমি নিকটবর্তী আসমানকে নক্ষত্ররাজির শোভা দ্বারা সূশোভিত করেছি, আর সংরক্ষণ করেছি প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তান হতে। ফলে, তারা উর্ধ্ব জগতের কিছু শুনতে পায়না, এবং তাদের প্রতি নিক্ষিপ্ত হয় সকল দিক হতে বিতাড়নের জন্য এবং তাদের জন্য রয়েছে অবিরাম শাস্তি। তবে কেউ হঠাৎ (ছোঁ মেরে) কিছু শুনে ফেললে জলন্ত উল্কাপিন্ড তাদের পিছন দিকে হতে ধাওয়া করে।” (সূরা আস-সাফ্ফাতের ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯ ও ১০ নং আয়াত)।
১৪- সূরা আল- হাশরের ২২ ও ২৩ নং আয়াত।
﴿ هُوَ ٱللَّهُ ٱلَّذِي لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۖ عَٰلِمُ ٱلۡغَيۡبِ وَٱلشَّهَٰدَةِۖ هُوَ ٱلرَّحۡمَٰنُ ٱلرَّحِيمُ ٢٢ هُوَ ٱللَّهُ ٱلَّذِي لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡمَلِكُ ٱلۡقُدُّوسُ ٱلسَّلَٰمُ ٱلۡمُؤۡمِنُ ٱلۡمُهَيۡمِنُ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡجَبَّارُ ٱلۡمُتَكَبِّرُۚ سُبۡحَٰنَ ٱللَّهِ عَمَّا يُشۡرِكُونَ ٢٣ ﴾ [الحشر: ٢٢، ٢٣]
“তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতীত সত্য কোনো মা‘বুদ নেই। গোপন ও প্রকাশ্য সব কিছুই তিনি জানেন। তিনিই পরম দয়ালু ও অতি দয়াময়। তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতিত সত্য কোনো মা‘বুদ নেই। তিনি বাদশা, পবিত্র, শান্তি-নিরাপত্তাদাতা, অভিভাবক, পরাক্রমশালী, প্রবল, মহাশ্রেষ্ঠ। মানুষ তাঁর সহিত যা কিছুর শির্ক করছে, সে সব হতে তিনি অতি পবিত্র ও মহান।” (সূরা আল- হাশরের ২২ ও ২৩ নং আয়াত)।
১৫- সূরা আল-ক্বালমের ৫১ নং আয়াত।
﴿ وَإِن يَكَادُ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ لَيُزۡلِقُونَكَ بِأَبۡصَٰرِهِمۡ لَمَّا سَمِعُواْ ٱلذِّكۡرَ وَيَقُولُونَ إِنَّهُۥ لَمَجۡنُونٞ ٥١ وَمَا هُوَ إِلَّا ذِكۡرٞ لِّلۡعَٰلَمِينَ ٥٢ ﴾ [القلم: ٥١، ٥٢]
“আর কাফেররা এমনভাবে আপনার দিকে তাকায় যে, এক্ষুনি তাদের দৃষ্টি দিয়ে আপনাকে ঘায়েল করে দিবে, তারা একথাও বলে যে, নিশ্চয়ই সে (রাসূল) একজন পাগল।” (সূরা আল-ক্বালমের ৫১ নং আয়াত)।
১৬- সূরা জ্বীনের ৩ নং আয়াত।
﴿ وَأَنَّهُۥ تَعَٰلَىٰ جَدُّ رَبِّنَا مَا ٱتَّخَذَ صَٰحِبَةٗ وَلَا وَلَدٗا ٣ ﴾ [الجن: ٣]
“(আমার প্রতি) আরও অহি করা হয়েছে যে, আমাদের মালিক ও পরিচালনাকারীর (আল্লাহর) মান-মর্যাদা সম্ভ্রম অতি উর্ধ্বে। তিনি কাহাকেও স্ত্রী বা সন্তান হিসেবে গ্রহন করেননি।”
১৭- সূরা আল-কাফেরুন।
﴿ قُلۡ يَٰٓأَيُّهَا ٱلۡكَٰفِرُونَ ١ لَآ أَعۡبُدُ مَا تَعۡبُدُونَ ٢ وَلَآ أَنتُمۡ عَٰبِدُونَ مَآ أَعۡبُدُ ٣ وَلَآ أَنَا۠ عَابِدٞ مَّا عَبَدتُّمۡ ٤ وَلَآ أَنتُمۡ عَٰبِدُونَ مَآ أَعۡبُدُ ٥ لَكُمۡ دِينُكُمۡ وَلِيَ دِينِ ٦ ﴾ [الكافرون: ١، ٦]
“বলো, হে কাফিরগণ! আমি তার ইবাদত করি না যার ইবাদত তোমরা করো এবং তোমরাও তাঁর ইবাদতকারী নও, যাঁর ইবাদত আমি করি, এবং আমি ইবাদতকারী নই তাঁর, যার ইবাদত তোমরা করে আসছো, আর তোমরা তাঁর এবাদতকারী নও, যাঁর ইবাদত আমি করি। তোমাদের দ্বীন (কুফর) তোমাদের জন্য আর আমার দ্বীন (ইসলাম) আমার জন্য।”
১৮- সূরা আল-ইখলাছ।
﴿ قُلۡ هُوَ ٱللَّهُ أَحَدٌ ١ ٱللَّهُ ٱلصَّمَدُ ٢ لَمۡ يَلِدۡ وَلَمۡ يُولَدۡ ٣ وَلَمۡ يَكُن لَّهُۥ كُفُوًا أَحَدُۢ ٤ ﴾ [الاخلاص: ١، ٤]
“বলুন, তিনি আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়, আল্লাহ হলেন – ‘সামাদ’ (তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তার মুখাপেক্ষী), তিনি কাউকেও জন্ম দেন নি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয় নি, আর তাঁর সমতুল্য কেউই নেই।” (সূরা আল-ইখলাছ)।
১৯- সূরা আল-ফালাক্ব।
﴿ قُلۡ أَعُوذُ بِرَبِّ ٱلۡفَلَقِ ١ مِن شَرِّ مَا خَلَقَ ٢ وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ ٣ وَمِن شَرِّ ٱلنَّفَّٰثَٰتِ فِي ٱلۡعُقَدِ ٤ وَمِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ ٥ ﴾ [الفلق: ١، ٥]
“বলুন, আমি আশ্রয় চাই আল্লাহর ভোরের রবের (মালিক ও অধিপতির), তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট হতে, আর অনিষ্ট হতে রাতের অন্ধকারের, যখন তা গভীর হয়। আর অনিষ্ট হতে সে সব নারীদের যারা গিরায় ফুঁক দেয়। আর অনিষ্ট হতে হিংসুকের, যখন সে হিংসা করে।” (সূরা আল-ফালাক্ব)।
২০- সূরা আন-নাস।
﴿ قُلۡ أَعُوذُ بِرَبِّ ٱلنَّاسِ ١ مَلِكِ ٱلنَّاسِ ٢ إِلَٰهِ ٱلنَّاسِ ٣ مِن شَرِّ ٱلۡوَسۡوَاسِ ٱلۡخَنَّاسِ ٤ ٱلَّذِي يُوَسۡوِسُ فِي صُدُورِ لنَّاسِ ٥ مِنَ ٱلۡجِنَّةِ وَٱلنَّاسِ 6 ﴾ [الناس: ١، ٠]
“বলুন, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি মানুষের রবের, মানুষের অধিপতির, মানুষের মা‘বুদের কাছে, আত্মগোপনকারী কুমন্ত্রণাদাতার নিকট অনিষ্ট হতে, যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে, জিন ও মানুষের মধ্য থেকে। (সূরা আন-নাস)।
সাহীহ হাদীসে বর্ণিত ঝাড়-ফুঁক সংক্রান্ত দো‘আসমূহ:
১- সাহীহ মুসলিমে রয়েছে:
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ (صحيح مسلم (4 / 2081).
‘আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমাসমূহের ওসিলায় তাঁর নিকট আমি তিনি যা সৃষ্টি করেছেন সেগুলোর অনিষ্ট থেকে আশ্রয় চাই।’ (বিকালে ৩ বার)। (সাহীহ মুসলিম: ৪/২০৮১)।
2- সাহীহ আল-বুখারীতে রয়েছে:
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ " (صحيح البخاري (4 / 147(
‘আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমাসমূহের ওসিলায় সকল শয়তান ও বিষাক্ত জীব-জন্তু থেকে ও যাবতীয় ক্ষতিকর চোখ (বদ নযর) হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’ (সাহীহ আল বুখারী ৪/১৪৭, নং ৩৩৭১)।
৩। আরও এসেছে, 3- হিসনূল মুসলিমে রয়েছে:-
«أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ الَّتِي لَا يُجَاوِزُهُنَّ بَرٌّ وَلَا فَاجِرٌ، مِنْ شَرِّ مَا يَنْزِلُ مِنَ السَّمَاءِ، وَمِنْ شَرِّ مَا يَعْرُجُ فِيهَا، وَمِنْ شَرِّ مَا ذَرَأَ فِي الْأَرْضِ، وَمِنْ شَرِّ مَا يَخْرُجُ مِنْهَا، وَمِنْ شَرِّ فِتَنِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ، وَمِنْ شَرِّ كُلِّ طَارِقٍ إِلَّا طَارِقًا يَطْرُقُ بِخَيْرٍ يَا رَحْمَنُ». (حصن المسلم من أذكار الكتاب والسنة (2 / 141).
“আমি আল্লাহর ঐ সকল পরিপূর্ণ বাণীসমূহের সাহায্যে আশ্রয় চাই যা কোনো সৎব্যক্তি বা অসৎ ব্যক্তি অতিক্রম করতে পারে না, — আল্লাহ যা সৃষ্টি করেছেন, অস্তিত্বে এনেছেন এবং তৈরী করেছেন তার অনিষ্ট থেকে। আসমান থেকে যা নেমে আসে তার অনিষ্ট থেকে এবং যা আকাশে উঠে তার অনিষ্ট থেকে, আর যা পৃথিবীতে তিনি সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে, আর যা পৃথিবী থেকে বেরিয়ে আসে, তার অনিষ্ট থেকে, দিনে রাতে সংঘটিত ফেতনার অনিষ্ট থেকে, আর রাতের বেলায় হঠাৎ করে আগত অনিষ্ট থেকে। তবে রাতে আগত কল্যাণকর আগমনকারী ব্যতীত, হে দয়াময়।” (হিসনুল মুসলিম : ২/১৪১)।
4- হিসনূল মুসলিমে রয়েছে:-
«أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ غَضَبِهِ وَعِقَابِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ». (حصن المسلم من أذكار الكتاب والسنة (1 / 78).
“আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমাসমূহের ওসিলায় আশ্রয় চাই তাঁর রাগ থেকে, তাঁর শাস্তি থেকে, তাঁর বান্দাদের অনিষ্ট থেকে, শয়তানদের কুমন্ত্রণা থেকে এবং তাদের উপস্হিতি থেকে।” (আবু দাউদ: ৪/১২, নং : ৩৮৯৩। সাহীহুত- তিরমিযী ৩/১৭১)।
5- সাহীহ হাদীসে রয়েছে:-
«حَسْبِيَ اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ، عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ». (7 مرات) . (سنن أبي داود (4 / 321). (حصن المسلم من أذكار الكتاب والسنة (1 / 61).
“আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ছাড়া আর কোনো সত্য মা‘বুদ নেই, আমি তাঁর উপরই ভরসা করি, আর তিনি মহান আরশের রব্ব।” (৭ বার)। (সূনানে আবু দাউদ ৪/৩২১) ও ( হিসনুল মুসলিম ১/৬১)।
6- সাহীহ মুসলিমে রয়েছে:-
«بِاسْمِ اللهِ أَرْقِيكَ، مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ، مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ، اللهُ يَشْفِيكَ بِاسْمِ اللهِ أَرْقِيكَ». (صحيح مسلم (4 / 1718).
“আল্লাহর নামে আপনাকে ঝাঁড়ফুক করছি, কষ্টদায়ক সকল কিছুর ক্ষতি হতে, যে কোনো মানুষ বা বদনযর অথবা হিংসুকের হিংসার নজর হতে। আল্লাহ আপনাকে শিফা বা রোগমুক্ত করুন, আমি আপনাকে আল্লাহর নামেই ঝাঁড়ফুক করছি।” (সাহীহ মুসলিম: ৪/১৭১৮)।
7- সাহীহ হাদীসে রয়েছে:-
«أَسْأَلُ اللَّهَ الْعَظِيمَ رَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ أَنْ يَشْفِيَكَ ». (سنن أبي داود (3 / 187).
“আমি মহান আল্লাহর কাছে চাই, যিনি মহান আরশের রব্ব, তিনি যেন আপনাকে রোগ হতে শিফা দান করেন।” (৭ বার পড়বেন)। (আবু-দাউদ, ৩/১৮৭)।
8- সাহীহ মুসলিমে রয়েছে:-
তোমার শরীরের যেখানে ব্যথা রয়েছে সেখানে হাত রেখো এবং তিনবার বলো, বিসমিল্লাহ, তারপর সাতবার বলো,
«أَعُوذُ بِاللهِ وَقُدْرَتِهِ مِنْ شَرِّ مَا أَجِدُ وَأُحَاذِرُ». (صحيح مسلم (4 / 1728).
“এই যে ব্যথা আমি অনূভব করছি এবং যার আমি আশংকা করছি, তা থেকে আমি আল্লাহ তা‘আলার এবং তাঁর কুদরতের আশ্রয় প্রার্থনা করছি।” (সাহীহ মুসলিম: ৪/১৭২৮, নং ২২০২)।
9- সাহীহ আল-বুখারীতে রয়েছে:-
«اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ، مُذْهِبَ البَاسِ، اشْفِ أَنْتَ الشَّافِي، لاَ شَافِيَ إِلَّا أَنْتَ، شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا». (صحيح البخاري (7 / 132).
“হে আল্লাহ! হে মানুষের রব্ব, আপনি তাদের কষ্ট, সমস্যা, বিপদদূরকারী। আপনি তাদেরকে শিফা (রোগমুক্ত) করে দিন, আপনিই তো শিফাদানকারী। আপনি ব্যতীত রোগমুক্তকারী কেউই নেই, রোগ হতে এমন শিফা দান করুন, যাতে রোগের কিছুই শরীরে অবশিষ্ট না থাকে।” (সাহীহ আল-বুখারী: ৭/১৩২)।
10- অনুরূপভাবে সাহীহ হাদীসে রয়েছে:
«بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ، فِي الْأَرْضِ، وَلَا فِي السَّمَاءِ، وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ»، (ثَلَاثَ مَرَّاتٍ). (سنن أبي داود (4 / 323).
“আল্লাহর নামে, যার নামের সাথে আসমান ও যমীনে কোনো কিছুই কোনো ক্ষতি করতে পারে না। আর তিনি সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী।” (৩ বার)।