×
এ প্রবন্ধে লিখক আল-কুরআন, সুন্নাহর আলোকে সফরের নানাবিধ হুকুম ও বিধান তুলে ধরেছেন।

    সফরের বিধান

    أحكام السفر

    < বাংলা - بنغالي - Bengali >

    —™

    অনুবাদক: জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের

    সম্পাদক: ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী

    আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান

    ترجمة: ذاكر الله أبو الخير

    مراجعة: د/ محمد منظور إلهي

    عبد الله شهيد عبدالرحمن

    সফরের বিধান

    বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

    সফর তিন প্রকার:

    এক. প্রশংসনীয় সফর: যে সফর আল্লাহর আদেশ বা নিষেধ কার্যকর করার উদ্দেশ্যে হয়। যেমন, হজ ও ওমরা পালন অথবা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ, দ্বীনের দাওয়াত, ইলমে দ্বীন শিক্ষা, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা অথবা দীনি ভাইদের সাথে সাক্ষাত ইত্যাদি উদ্দেশ্যে সফর করা।

    দুই. নিন্দনীয় সফর: এমন কোনো খারাপ উদ্দেশ্যে সফর করা, যার অনুমতি ইসলামী শরীয়ত প্রদান করেনি। যেমন, কোনো পীর, বুজুর্গ বা ওলীর মাযার ও কবর যিয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর করা অথবা হারাম বা নিষিদ্ধ ব্যবসার উদ্দেশ্যে সফর করা। যেমন, মদ বা নেশা জাতীয় কোনো বস্তু ক্রয়-বিক্রয় বা আমদানি-রপ্তানি ইত্যাদি উদ্দেশ্যে সফর করা। এ ছাড়াও যে কোনো অসৎ কাজ, অশ্লীল বিনোদন ও ফাসাদ সৃষ্টি ইত্যাদি উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করা।

    তিন. বৈধ সফর: দুনিয়াবী কোনো বৈধ কাজের উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করা। যেমন, বৈধ কোনো ব্যবসা বাণিজ্য, হালাল ও রুচিশীল বিনোদন ইত্যাদি। এ ধরনের সফর কখনো কখনো প্রশংসনীয় সফরের অন্তর্ভুক্ত হয়। যখন এর সাথে ভাল নিয়্যত এবং শরীয়তসম্মত কোনো উদ্দেশ্য জড়িত থাকে এতে সাওয়াবও লাভ হয়। যেমন, টাকা উপার্জনের উদ্দেশ্যে নিজেকে কারো মুখাপেক্ষী না করা, মানুষের নিকট হাত পাতা হতে বিরত থাকা এবং ছেলে-মেয়েদের জন্য হালাল খাদ্যের যোগাড় ইত্যাদি।

    সফরের বৈশিষ্ট্য:

    ইসলামী শরী‘আতে সফরের একাধিক বৈশিষ্ট্য আছে।

    ১- পবিত্রতার সাথে সম্পৃক্ত:

    মুসাফিরের জন্য লাগাতার তিন দিন তিন রাত পর্যন্ত পায়ে মোজা পরিধান করে রাখা বৈধ। সালাতের সময় পানি না পাওয়া গেলে তার জন্য তায়াম্মুম করা বৈধ। তবে বর্তমানে এ বিষয়ে নমনীয়তা প্রদর্শন করা বৈধ নয়। বর্তমানে এমন অনেক স্থান আছে, যেখানে কোনো প্রকার কষ্ট করা ছাড়াই পানি পাওয়া যাবে।

    ২- সালাতের সাথে সম্পৃক্ত:

    মুসাফির চার রাকা‘আতবিশিষ্ট সালাতকে দুই রাকা‘আতে আদায় করবে। এছাড়া যোহরের সালাত আছরের সাথে একত্রে আদায় করতে পারবে এবং মাগরিবের সালাত ইশার সাথে একত্রে আদায় করতে পারবে। অনুরূপভাবে নফল সালাত, যোহর, মাগরিব ও ইশার সালাতের সুন্নাত না পড়ারও অনুমতি আছে। তবে বিতরের সালাত, ফজরের সালাতের দুই রাকা‘আত সুন্নাত, তাহিয়্যাতুল মসজিদ, চাশতের সালাত প্রভৃতি এবং এ জাতীয় নফল সালাত আদায় করা উত্তম। এছাড়া মুসাফিরের জন্য যানবাহনের উপর নফল সালাত আদায় করা জায়েয আছে। এতে কিবলামুখী হওয়া তার জন্য জরুরী নয়। যেসব নেক আমল সফর করার কারণে পালন করতে সক্ষম হয় না, আল্লাহ তাআলা আমল না করা সত্ত্বেও তাকে তার বিনিময়ে সাওয়াব প্রদান করবেন। যেমন, আবু মুসা আলআশআরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর হাদীস, তিনি বলেন,

    «إِذَا مَرِضَ العَبْدُ، أَوْ سَافَرَ، كُتِبَ لَهُ مِثْلُ مَا كَانَ يَعْمَلُ مُقِيمًا صَحِيحًا».

    “যখন কোনো বান্দা অসুস্থ হয় অথবা সফরে থাকে তখন সে মুকীম বা সুস্থ থাকাকালীন যে সকল আমল করত, তার জন্য ঐ সকল আমলের সাওয়াব লিপিবদ্ধ করা হয়”(সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৭৭৪)

    মুসাফিরের দো‘আ আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য:

    রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    «ثَلَاثُ دَعَوَاتٍ مُسْتَجَابَاتٌ لَا شَكَّ فِيهِنَّ: دَعْوَةُ الْوَالِدِ، وَدَعْوَةُ الْمُسَافِرِ، وَدَعْوَةُ الْمَظْلُومِ».

    “তিনটি দো‘আ আল্লাহর নিকট কবুল হওয়ার ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। নির্যাতিত ব্যক্তির দুআ, মাতা পিতার দুআ, মুসাফিরের দো‘আ”(সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৮২৮)

    সফরের আদব-শিষ্টাচার:

    সফরের পূর্বে, সফর চলাকালে এবং সফর হতে ফিরে আসার পর অনেকগুলো আদব আছে। নিম্নে তা আলোচনা করা হল।

    এক. সফরের পূর্বের আদবসমূহ:

    সফরের পূর্বে অনেকগুলো আদব আছে, মুসলমানের জন্য এগুলো পালন করা কর্তব্য।

    ১. পরামর্শ চাওয়া এবং ইস্তেখারা করা। কোনো ব্যক্তির অন্তরে সফরের বাসনা জাগ্রত হওয়া মাত্রই তার উচিত এমন একজন লোকের নিকট পরামর্শ চাওয়া যে তার হিতাকাঙ্ক্ষী এবং তার সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জ্ঞাত। পরামর্শের পর যদি মনে করে এর মাঝে কল্যাণ রয়েছে, তখন সে ইস্তেখারা করবে। দুই রাকা‘আত সালাত আদায় করবে এবং ইস্তেখারার দো‘আ পড়বে। অতঃপর যার প্রতি তার মন ধাবিত হয়, সে অনুপাতে আমল করবে।

    ২. নতুন ভাবে তওবা করবে। মানুষের দেনা-পাওনা পরিশোধ করে দায়মুক্ত হবে এবং ওছিয়তনামা লিখবে। কারণ, সফরে কোনো সময় কি অঘটন ঘটে তা তো বলা যায় না।

    ৩. নেককার-উত্তম সঙ্গী নির্বাচন করবে যিনি আল্লাহর ইবাদত- আদেশ নিষেধ পালনে সহযোগী হবে। কারণ, সফরে মানুষ তার সঙ্গীর সাথেই সব সময় থাকে। এতে তার সঙ্গীর প্রভাব তার উপর অবশ্যই পড়ে। অসৎ সঙ্গী নির্বাচন হতে সম্পূর্ণ বিরত থাকবে। আর মনে রাখতে হবে একা একা সফর করা সঙ্গত।

    রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একা সফর করা হতে নিষেধ করেন, তিনি বলেন-

    «الرَّاكِبُ شَيْطَانٌ، وَالرَّاكِبَانِ شَيْطَانَانِ، وَالثَّلَاثَةُ رَكْبٌ» .

    “একজন আরোহী শয়তান আর দুইজন আরোহী দুইটি শয়তান। তবে তিন জন আরোহী হল একটি যাত্রীদল”(সুনান তিরমিযী, হাদীস নং ১৫৯৮)

    রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন,

    «لَوْ يَعْلَمُ النَّاسُ مَا فِي الوَحْدَةِ مَا أَعْلَمُ، مَا سَارَ رَاكِبٌ بِلَيْلٍ وَحْدَهُ» .

    “একা সফর করার ক্ষতি সম্পর্কে যদি মানুষ জানতে পারতো যা আমি জানি তাহলে কেউই রাতে একা সফর করত না”(সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৫৯৮) একাকী সফর করার কারণে কখনো কখনো সে ভীতসন্ত্রস্ত হতে পারে। বিভিন্ন ধরনের চিন্তা-ভাবনা তার মাথায় চাপতে পারে অথবা কোথাও কোনো বিপদ হলে বা অসুস্থ হয়ে পড়লে তখন তার সহযোগিতা করার মত কাউকে পাওয়া যাবে না ইত্যাদি কারণে ইসলামী শরীয়ত একা সফর করাকে নিরুৎসাহিত করে।

    ৪. সফরের মাঝে যেসব বিষয়ে জানা থাকা দরকার তা পূর্বেই জেনে নেবে। যেমন, কছর সালাতের বিধান, একত্রে সালাত আদায়ের বিধান, তায়াম্মুম ও মোজার উপর মাছেহ করার বিধান ইত্যাদি।

    ৫. মহিলাদের জন্য মাহরাম ছাড়া সফর করা বৈধ নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    «لاَ يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِامْرَأَةٍ، وَلاَ تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ» ، فَقَامَ رَجُلٌ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، اكْتُتِبْتُ فِي غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا، وَخَرَجَتِ امْرَأَتِي حَاجَّةً، قَالَ: «اذْهَبْ فَحُجَّ مَعَ امْرَأَتِكَ».

    “একজন পর-পুরুষ একজন মহিলার সাথে কোনো মাহরাম ছাড়া একাকী হতে পারবে না এবং কোনো মহিলা মাহরাম ছাড়া সফর করতে পারবে না। একথা বলার পর এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার স্ত্রী হজের উদ্দেশ্যে বের হয়েছেন। আর আমি অমুক যুদ্ধের তালিকাভুক্ত হয়েছি। (এখন আমি কি করবো?) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি চলে যাও এবং তোমার স্ত্রীর সাথে হজ কর”(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২৯১)

    ৬. যদি কোনো প্রকার কষ্ট না হয় মানুষ তার সফর বৃহস্পতিবারে আরম্ভ করতে চেষ্টা করবে। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিকাংশ সময় বৃহস্পতিবারে সফর করতেন।

    ৭. তার পরিবার-পরিজন এবং সাথী-সঙ্গীদের বিদায় দেবে। রাসূলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার সাহাবীরা এরকমই করতেন। এ সম্পর্কে হাদীসে বর্ণিত আছে, মুকীম মুসাফিরকে বলবে -

    «أَسْتَوْدِعُ اللَّهَ دِينَكَ وَأَمَانَتَكَ وَخَوَاتِيمَ عَمَلِكَ».

    “আমি (আপনার বা আপনাদের) দ্বীন, আমানত এবং শেষ আমলসমূহকে আল্লাহর হেফাযতে ন্যস্ত করলাম”(সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং ২৬০০)

    আর মুসাফির মুকীমকে বলবে,

    «أَسْتَوْدِعُكَ اللَّهَ الَّذِي لَا تَضِيعُ وَدَائِعُهُ».

    “আমি তোমাকে আল্লাহর হিফাযতে রেখে যাচ্ছি যার হিফাযতে থাকা কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয় না”(সুনান ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৮২৫)

    সফর চলাকালে ও সফর থেকে ফিরে এসে করণীয়:

    এমন কিছু শিষ্টাচার আছে যেগুলো সফরের মধ্যে এবং সফর হতে ফিরে এসে পালন করা উচিত।

    ১. আল্লাহর যিকির দ্বারা সফর আরম্ভ করবে। আরোহণের সময়, বিশেষ করে সফরের শুরুতে হাদীসে বর্ণিত দো‘আ সমূহ পড়বে। ইবনে ওমর রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সফরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে তার উটকে প্রস্তুত করতেন তখন তিনবার আল্লাহু আকবর বলতেন। অতঃপর তিনি বলতেন-

    «سُبْحَانَ الَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَذَا، وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِينَ، وَإِنَّا إِلَى رَبِّنَا لَمُنْقَلِبُونَ، اَللهم إِنَّا نَسْأَلُكَ فِي سَفَرِنَا هَذَا الْبِرَّ وَالتَّقْوَى، وَمِنَ الْعَمَلِ مَا تَرْضَى، اللهُمَّ هَوِّنْ عَلَيْنَا سَفَرَنَا هَذَا، وَاطْوِ عَنَّا بُعْدَهُ، اللهُمَّ أَنْتَ الصَّاحِبُ فِي السَّفَرِ، وَالْخَلِيفَةُ فِي الْأَهْلِ، اللهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ وَعْثَاءِ السَّفَرِ، وَكَآبَةِ الْمَنْظَرِ، وَسُوءِ الْمُنْقَلَبِ فِي الْمَالِ وَالْأَهْلِ».

    “মহাপবিত্র সেই সত্তা যিনি এই বাহনকে আমাদের জন্য অনুগত করে দিয়েছেন। অথচ আমরা একে অনুগত করার ক্ষমতা রাখি না। আর আমরা সবাই আমাদের রবের দিকে প্রত্যাবর্তনকারী”। হে আল্লাহ! আমরা আপনার নিকটে আমাদের এই সফরে কল্যাণ ও তাকওয়া এবং এমন কাজ প্রার্থনা করি, যা আপনি পছন্দ করেন। হে আল্লাহ! আমাদের উপরে এই সফরকে সহজ করে দিন এবং এর দূরত্ব কমিয়ে দিন। হে আল্লাহ! আপনি এই সফরে আমাদের একমাত্র সাথী এবং পরিবারে ও মাল-সম্পদে আপনি আমাদের একমাত্র প্রতিনিধি। হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকটে পানাহ চাই সফরের কষ্ট, খারাব দৃশ্য এবং মাল-সম্পদ ও পরিবারের নিকটে মন্দ প্রত্যাবর্তন হতে”। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৩৪২)

    ২. জামাতের মধ্য হতে একজনকে আমীর নিযুক্ত করবে। আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    «إِذَا خَرَجَ ثَلَاثَةٌ فِي سَفَرٍ فَلْيُؤَمِّرُوا أَحَدَهُمْ».

    “যখন এক সাথে তিনজন সফরে বের হবে তখন একজনকে আমীর নিযুক্ত করবে”(সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং ২২৪১)

    ৩. যখন কোনো উঁচু স্থানে আরোহণ করবে তখন সুন্নাত হল ‘আল্লাহ আকবর’ বলবে। আর যখন নিচের দিকে অবতরণ করবে তখন ‘সুবহানাল্লাহ’ বলবে। হাদীসে এসেছে, যাবের রা. বলেন,

    «كُنَّا إِذَا صَعِدْنَا كَبَّرْنَا، وَإِذَا نَزَلْنَا سَبَّحْنَا».

    “আমরা যখন উপর দিকে আরোহণ করতাম ‘আল্লাহু আকবর’ বলতাম আর যখন নিচে অবতরণ করতাম ‘সুবহানাল্লাহ’ বলতাম। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৯৯৩)

    ৪. যখন কোনো ঘরে অবতরণ করবে তখন সুন্নাত হল খাওলা বিনত হাকিমের হাদীসে উল্লিখিত দুআটি পাঠ করবে। খাওলা বিনত হাকীম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা বলেন, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো স্থানে অবতরণ করার পর এ দো‘আ পড়বে,

    «أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ».

    “আমি আল্লাহ তা‘আলার পরিপূর্ণ কালেমাসমূহের মাধ্যমে আশ্রয় প্রার্থনা করছি তাঁর সৃষ্ট-বস্তুর (সমুদয়) অনিষ্ট হতে” কোনো কিছুই তার ক্ষতি করতে পারবে না। যতক্ষণ সে ঐ স্থান ত্যাগ না করে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭০৮)

    ৫. যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রয়োজন শেষে পরিবার-পরিজনের নিকট ফিরে আসবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    «السَّفَرُ قِطْعَةٌ مِنَ العَذَابِ، يَمْنَعُ أَحَدَكُمْ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ وَنَوْمَهُ، فَإِذَا قَضَى نَهْمَتَهُ، فَلْيُعَجِّلْ إِلَى أَهْلِهِ».

    “সফর আযাবের একটি অংশ। সফর একজন মানুষকে ঠিকমত খেতে দেয়না, পান করতে দেয়না এবং ঘুমাতে দেয়না। তাই যখন প্রয়োজন পূরণ হয়ে যাবে তখন সে যেনো তার পরিবার-পরিজনের নিকট তাড়াতাড়ি ফিরে আসে”(সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৬৭৭)

    ৬. যখন তার নিজ শহরে ফিরে আসবে তখন শুরুতে যে দো‘আ পড়েছিল তা আবার পুনরায় পড়বে। তবে তার সাথে নিম্নোক্ত দো‘আটি বাড়াবে,

    «آيِبُونَ تَائِبُونَ عَابِدُونَ لِرَبِّنَا حَامِدُونَ».

    ‘‘আমরা প্রত্যাবর্তকারী, তাওবাকারী, ইবাদাতকারী এবং আমাদের প্রতিপালকের প্রশংসাকারী”। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩০৮৫)

    ৭. সফর হতে প্রত্যাবর্তন করা মাত্রই মসজিদে প্রবেশ করে দু’রাকাত সালাত আদায় করবে। কা‘ব ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর ঘটনা সম্বলিত হাদীসে বর্ণিত, তিনি বলেন,

    «إِذَا قَدِمَ مِنْ سَفَرٍ بَدَأَ بِالْمَسْجِدِ فَصَلَّى فِيهِ».

    “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সফর হতে ফিরে আসতেন প্রথমে তিনি মসজিদে প্রবেশ করতেন এবং তথায় সালাত আদায় করতেন”(সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৪০৬৬)

    সমাপ্ত