×
মানুষের অন্তর কঠোর হওয়ার অর্থই হচ্ছে তার জন্য কঠোর পরিণতি অপেক্ষায় থাকা। কুরআন ও হাদীসে কঠোর হৃদয়ের নিন্দা করা হয়েছে। অনেকেই জানে না অন্তর কেন কঠোর হয়। আলোচ্য প্রবন্ধে অন্তর কঠোর হওয়ার কিছু কারণ তুলে ধরা হয়েছে।

    অন্তর (ক্বালব) কঠিন হয়ে যায় কেন?

    [ বাংলা – Bengali – بنغالي ]

    আবুল কাসেম মুহাম্মাদ মাসুম বিল্লাহ

    সম্পাদনা : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া

    2014 - 1435

    ﴿ لما ذا يقسو القلب؟ ﴾

    « باللغة البنغالية »

    الشيخ أبو القاسم محمد معصوم بالله

    مراجعة: د/ أبو بكر محمد زكريا

    2014 - 1435

    অন্তর (ক্বালব) কঠিন হয়ে যায় কেন?

    মুসলিম উম্মাহ আজ যে সব মহাপরীক্ষা ও মহা মুছিবতে পতিত এবং কঠিন ও ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হয়েছে, তন্মধ্যে এমনই একটি রোগ হলো: অন্তর (ক্বালব) কঠিন হয়ে যাওয়া।

    নিম্নলিখিত কারণে ক্বালব বা অন্তর কঠিন হয়ে যায়:-

    ১- নামাযের জামা‘আতে হাযির হওয়ার ব্যাপারে অবহেলা ও গাফলতি করা এবং মসজিদে সকাল সকাল না যাওয়া বরং দেরী করা।

    ২- কুরআনকে পরিত্যাগ করা অর্থাৎ বিনয়-নম্রতা আর মনোযোগ এবং চিন্তা গবেষণাসহকারে কুরআন তেলাওয়াত না করা।

    ৩- হারাম রুজি যেমন: সুদ, ঘুষ, মাল্টিপারপাস, ইন্স্যুরেন্স এবং বেচাকেনাসহ বিভিন্ন লেনদেনে প্রতারণা ও জালিয়াতি সহ অন্যান্য হারাম পদ্ধতিতে রুজি-রোজগার করার কারণে।

    ৪- অহংকার, বড়াই, প্রতিশোধপরায়ণতা, মানুষের দোষ-ত্রুটি বা অপরাধকে মাফ না করা, মানুষকে অবহেলা করে নিকৃষ্ট মনে করা, মানুষকে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা।

    ৫- দুনিয়ার প্রতি আসক্ত হয়ে ঝুঁকে পড়া, দুনিয়া দ্বারা প্রতারিত হওয়া এবং মৃত্যুকে, কবরকে এমনকি আখেরাতকে ভুলে যাওয়া।

    ৬- যে কোনো বেগানা নারীর দিকে তাকানো হারাম; যা অন্তরকে কঠোর করে দেয়।

    ৭- দাঁড়ি গজায়নি এখনো এমন সুন্দর ছেলের দিকে অযথা তাকানো হারাম; তাই সেটাও অন্তর কঠোর করে দেওয়ার অন্যতম কারণ।

    ৮- আমি নিজে প্রতিদিন কি কি খারাপ কাজ করলাম? নিজের সমালোচনা নিজে না করা, বরং মানুষের সমালোচনা করা।

    ৯- অনেক দিন দুনিয়ায় থাকবো, অনেক কিছুর মালিক হবো এমন ভুল ধারণা মনের ভিতর থাকা।

    ১০- আল্লার যিকির বেশী বেশী না করে বরং বেশী বেশী কথা বলা, বেশী বেশী হাসাহাসি-তামাশা এবং মশকারী বা মজাক করা।

    ১১- বেশী খাওয়া-দাওয়া করা।

    ১২- বেশী ঘুম যাওয়া।

    ১৩- মানুষের উপর জুলুম করা।

    ১৪- শরীয়তের কোনো আদেশ-নিষেধ লংঘন হওয়ার কারণ ব্যতীত অন্য কোনো কারণে রাগ করা।

    ১৫- ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার উদ্দেশ্য ব্যতীত কাফেরের দেশ ভ্রমণে বের হওয়া।

    ১৬- মিথ্যা, গীবত (পরচর্চা) এবং একজনের কথা অন্যের নিকট গিয়ে বলার মাধ্যমে উভয়ের মধ্যে ফাসাদ সৃষ্টি করা।

    ১৭- খারাপ মানুষের সাথে উঠাবসাও চলাফেরা করা।

    ১৮- অন্য মুসলিমকে মনে মনে অথবা প্রকাশ্য হিংসা করা।

    ১৯- একজন মুসলিমের উন্নতি সহ্য করতে না পারা, বরং তার ধ্বংস কামনা করা।

    ২০- অন্য মুসলিম ভাইয়ের সাথে শত্রুতা করা, ঘৃণা করা এবং তাকে অপছন্দ করা।

    ২১- আপনার নিজের বা মুসলিম ভাইয়ের কোনো লাভ বা ফায়েদা ব্যতীত নিজের ও অপরের সময় নষ্ট করা।

    ২২- ইসলামী জ্ঞান শিক্ষা না করা এবং ইসলামী শিক্ষা হতে নিজকে দূরে সরিয়ে রাখা।

    ২৩- জাদুকর, গণক, জোতিষী, তন্ত্রমন্ত্রকারীর নিকট যাওয়া।

    ২৪- মাদক, নেশাজাতীয় দ্রব্য, বিড়ি-সিগারেট, হুক্কা, লতা ওয়ালা হুক্কা সহ যাবতীয় তামাক ও তামাকজাত এবং ক্ষতিকর দ্রব্য পান করা।

    ২৫- সকাল-সন্ধ্যার যিকরসমুহ পাঠ না করা।

    ২৬- গান শুনা, হিন্দী সহ যাবতীয় লেংটা, চরিত্রহীন হারাম ফিল্ম দেখা, পতিত (খারাপ) চটি পত্রিকা ম্যাগাজিন পাঠ করা।

    ২৭- আল্লাহর নিকট সর্বদা গুরুত্বসহকারে দো‘আ না করা।