আপনার হজ কিভাবে মাবরূর হবে
ক্যাটাগরিসমূহ
উৎস
Full Description
আপনার হজ কিভাবে মাবরূর হবে
[ বাংলা – Bengali – بنغالي ]
আলী হাসান তৈয়ব
সম্পাদনা : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
2011 - 1432
﴿ كيف يكون حجك مبرورا﴾
« باللغة البنغالية »
علي حسن طيب
مراجعة: الدكتور أبو بكر محمد زكريا
2011 - 1432
আপনার হজ কিভাবে মাবরূর হবে
হজ একটি মহান ও বিরল সৌভাগ্যমন্ডিত ইবাদত। সবার কপালে এ হজের তাওফীক হয় না। একদিকে হাজারো লোকের অর্থিক সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যেমন হজ করার সৌভাগ্য হয় না। অন্যদিকে আর্থিক সামর্থ্য না থাকলেও স্রেফ কপালগুণে অনেকে আল্লাহর ঘরের অতিথি হন। সবার সামর্থ্যও হয় না যুগপৎ আর্থিক ও কায়িক এ ইবাদতে অংশ নেবার। এ বছর বাংলাদেশ থেকে হজে যেতে প্রতিটি হাজে সাহেবকে তিন লাখের কিছু-বেশি অর্থ সংগ্রহ করতে হয়েছে। তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল এ দেশের অধিকাংশ জনগোষ্ঠীর কাছে এ বিপুল পরিমাণ অর্থ রীতিমত অকল্পনীয় এমাউন্ট। আর টাকা থাকলেও কি সবার নসীবে সৌভাগ্যের এ সিতারা উঁকি দেয়? মাত্র একটি দৃষ্টান্ত দেয়া যাক।
দূরের কোনো উদাহরণ নয়, আমার আপন ফুফা-ই এবার হজের জন্য টাকা জমা দিয়েছিলেন। এবার বাংলাদেশ থেকে যেদিন (বৃহস্পতিবার ২৯ অক্টোবর ২০১১) হজের ফ্লাইট শুরু হয় তার প্রথমটার যাত্রী ছিলেন তিনি। হজের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে বাইতুল্লাহ দর্শনের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছিলেন। জীবনের পড়ন্তবেলায় এসে বৃদ্ধ ফুফা কেন জানি ভাবলেন, সব আত্মীয়-স্বজনকে এক সাথে দাওয়াত করে তাদের কাছে অতীতের সকল ভুল-ভ্রান্তির জন্য ক্ষমা চেয়ে নিলে মন্দ হয় না। আজীবন ঘরকুনো ফুফা এবারই প্রথম যাচ্ছেন এত দূরের সফরে। ভাবছেন যদি এ সফরই হয়ে যায় আখিরাতের সফর। দুনিয়া থেকে বিদায়ের সফর। তাই তিনি মাত্র পাঁচ দিন আগেই সবার কাছ থেকে বিদায় ও মাফ চেয়ে নিয়েছেন। কিন্তু সফরের ফ্লাইটের মাত্র দু’দিন আগে তিনি ব্রেইন স্ট্রোক করলেন। এখনো তিনি ক্লিনিকে আছেন। সুতরাং এবার যে তার হজ করা হচ্ছে না তা বলাইবাহুল্য।
অতএব বাইতুল্লাহগামী প্রতিটি হাজী ভাই-বোনের উচিত নিজেদের হজটাকে নির্ভুল করার যথাসাধ্য চেষ্টা করা। আল্লাহর কাছে নিজের হজটিকে গ্রহণযোগ্য বা মাকবুল করানোর জন্য সকল করণীয় সম্পর্কে অবগত হওয়া। হাজী সাহেব মাত্রেই কামনা করেন তাঁর হজটি হবে মাবরূর তথা আল্লাহর কাছে কবুল ও গ্রহণীয়। কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«وَالْحَجُّ الْمَبْرُورُ لَيْسَ لَهُ جَزَاءٌ إِلاَّ الْجَنَّةُ ».
‘আর মাবরূর হজের প্রতিদান জান্নাত ভিন্ন অন্য কিছু নয়।’ [বুখারী : ৩৭৭১; মুসলিম : ৯৪৩১]
তাই আমাদের হজ মাবরূর বা মকবুল হওয়ার জন্য নিম্নের বিষয়গুলোর প্রতি খেয়াল রাখা উচিত।
· বৈধ উপার্জন
আবূ হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِذَا خَرَجَ بِالنَّفَقَةِ الْخَبِيثَةِ، فَوَضَعَ رِجْلَهُ فِي الْغَرْزِ، فَنَادَى : لَبَّيْكَ، نَادَاهُ مُنَادٍ مِنَ السَّمَاءِ: لا لَبَّيْكَ وَلا سَعْدَيْكَ، زَادُكَ حَرَامٌ وَنَفَقَتُكَ حَرَامٌ، وَحَجُّكَ غَيْرُ مَبْرُورٍ ».
‘অবৈধ উপার্জন নিয়ে কোনো ব্যক্তি যখন হজের উদ্দেশ্যে বের হয় এবং বাহনের পা-দানিতে পা রেখে ঘোষণা দেয় : ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’, তখন আসমান থেকে একজন ঘোষক তার ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে বলেন, তোমার জন্য কোনো লাব্বাইক নেই, তোমার জন্য কোনো সৌভাগ্যবার্তা নেই। তোমার পাথেয় হারাম। তোমার ব্যয়-খরচা হারাম। তোমার হজ কবুল করা হয় নি।’ [ইমাম মালেক, মুআত্তা : ১/৩০৭]
· লোক দেখানো কিংবা সুনাম কুড়ানোর মানসিকতা বর্জন
আনাস ইবন মালেক রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«اَللّهُمَّ حَجَّةً لاَ رِيَاءَ فِيْهَا وَلاَ سُمْعَةَ ».
‘হে আল্লাহ, এমন হজের তাওফীক দান করুন, যা হবে লোক দেখানো ও সুনাম কুড়ানোর মানসিকতা মুক্ত।’ [ইবন মাজা, সুনান: ২৮৯০]
· আহার করানো এবং ভালো কথা বলা
জাবের ইবন আবদুল্লাহ রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হল, কোন্ কাজ হজকে মাবরূর করে? তিনি বললেন,
«إِطْعَامُ الطَّعَامِ وَطِيبُ الْكَلاَمِ ».
‘আহার করানো এবং ভালো ও সুন্দর কথা বলা।’ [মুস্তাদরাক : ১/১৭৭৮]
খাল্লাদ ইবন আবদুর রহমান থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি সাঈদ ইবন যুবাইরকে জিজ্ঞেস করলাম, কোন্ হাজী উত্তম? তিনি বললেন, যে আহার করায় এবং তার জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রণ করে। তিনি বলেন, আমাকে ছাওরী বলেছেন, আমরা শুনেছি, এটিই মাবরূর হজ।’ [আবদুর রাযযাক, মুসান্নাফে : ৫/৮৮১৬]
· সালাম বিনিময়
জাবের ইবন আবদুল্লাহ রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হল, কোন্ কাজের দ্বারা হজ মাবরূর হয়? তিনি বললেন,
«إِطْعَامُ الطَّعَامِ، وَإِفْشَاءُ السَّلَامِ».
‘খাবার খাওয়ানো এবং বেশি বেশি সালাম বিনিময়ের দ্বারা।’ [মুসনাদে আহমদ: ৩/৩২৫, ৩৩৪]
· তালবিয়া পাঠ ও কুরবানী করা
আবূ বকর রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হল, হজে কোন্ কাজে সওয়াব বেশি? তিনি বললেন, الْعَجُّ وَالثَّجُّ ‘উচ্চস্বরে তালবিয়া পড়া এবং জন্তুর রক্ত প্রবাহিত করা।’ [তিরমিযী, সুনান : ৩/১৮৯]
· সৎ প্রতিবেশীসুলভ আচরণ করা
আবদুল্লাহ ইবন উমর রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘হজের মধ্যে সবচে’ পুণ্যময় কাজ খাবার খাওয়ানো এবং সৎ প্রতিবেশীসুলভ আচরণ করা।’ [আল-ইসতিযকার : ৪/১০৪]
· ধৈর্য, তাকওয়া ও সদাচার
ছাওর ইবন ইয়াযীদ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘যে এই কা‘বা ঘরের ইচ্ছা করল অথচ তার মধ্যে তিনটি বৈশিষ্ট্য নেই, তার হজ নিরাপদ নয়। ধৈর্য, যা দিয়ে সে তার মূর্খতাকে নিয়ন্ত্রণ করবে; তাকওয়া, যা তাকে আল্লাহর নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত রাখবে এবং সঙ্গী-সাথির সাথে সদাচার।’ [আল-ইসতিযকার : ৪/১০৪]
· দুনিয়ার প্রতি অনাগ্রহ এবং আখিরাতে আগ্রহ
এক ব্যক্তি হাসান বসরী রহমাতুল্লাহি আলাইকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আবূ সাঈদ, মাবরূর হজ কোনটি? তিনি বললেন, ‘যে হজ দুনিয়ার প্রতি অনাগ্রহী এবং আখিরাতে আগ্রহী বানায়।’ [আল-ইসতিযকার : ৪/১০৪]
· হজের আগের অবস্থা থেকে পরের অবস্থার উন্নতি
একজন হাজী যখন হজের সফরে বের হবেন। পবিত্র ভূমিতে পদার্পণ করবেন। তারপর হজ সম্পন্ন করে নিজ দেশে ফিরে আসবেন, তখন আমরা তাকে পর্যবেক্ষণ করে বুঝতে পারব তার অবস্থার উন্নতি হয়েছ কি-না? যদি অন্যের সাথে আচার-আচরণ, লেনদেন, আমানতদারী, অন্যের হক আদায় এবং ইবাদতের ওপর অবিচলতায় তার অবস্থার উন্নতি হয়, তবে বুঝতে হবে, তার হজ মাবরূর হয়েছে।
মোটকথা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে মাবরূর হজের বিভিন্ন রকম ব্যাখ্যা বর্ণিত হয়েছে। এর কারণ, মাবরূর হজ দুই পন্থায় হয়। এক. মানুষের সাথে সদাচার। দুই. হজের বিধি-বিধান পরিপূর্ণরূপে পালন।
মানুষের সাথে সদাচারের বিষয়টি ব্যাপক। যেমন এর ব্যাপকতা প্রকাশে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«أَنْ تُعِيْنَ الرَّجُلُ عَلَى دَابَّتِهِ، تَحْمِلُهُ عَلَيْهَا وَتَدُلُّهُ عَلَى الطَّرِيْقِ، كُلُّ ذَلِكَ صَدَقَةٌ».
‘তুমি মানুষকে তার বাহনে চড়তে সাহায্য করবে, তাকে তাতে উঠিয়ে দেবে এবং পথ দেখিয়ে দেবে- এসবই সাদাকা।’ [ইবন খুযাইমাহ : ১৪৯৩]
ইবন উমর রাদিআল্লাহু আনহু বলতেন,
البرُّ شيءٌ هيِّنٌ : وجهٌ طليقٌ وكلامٌ ليِّنٌ.
‘নেক কাজ অনেক সহজ : হাস্যোজ্জ্বল চেহারা আর বিনম্র বাক্য।’ [ইবন রজব, জামেউল উলূম ওয়াল-হিকাম : ৮/৩৯]
হজ মৌসুমে যেহেতু পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে বিচিত্র স্বভাব ও বিভিন্ন পরিবেশের লোক সমবেত হয়। তাই পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা এসব বৈচিত্র্য ও ব্যবধান ঘুচিয়ে, সব ধরনের বিবাদ-ঝগড়া এড়িয়ে পরস্পরে ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্যের চেতনায় একাকার হবার শিক্ষা দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,
﴿ ٱلۡحَجُّ أَشۡهُرٞ مَّعۡلُومَٰتٞۚ فَمَن فَرَضَ فِيهِنَّ ٱلۡحَجَّ فَلَا رَفَثَ وَلَا فُسُوقَ وَلَا جِدَالَ فِي ٱلۡحَجِّۗ وَمَا تَفۡعَلُواْ مِنۡ خَيۡرٖ يَعۡلَمۡهُ ٱللَّهُۗ وَتَزَوَّدُواْ فَإِنَّ خَيۡرَ ٱلزَّادِ ٱلتَّقۡوَىٰۖ وَٱتَّقُونِ يَٰٓأُوْلِي ٱلۡأَلۡبَٰبِ ١٩٧ ﴾ [البقرة: ١٩٧]
‘হজের সময় নির্দিষ্ট মাসসমূহ। অতএব এ মাসসমূহে যে নিজের ওপর হজ আরোপ করে নিল, তার জন্য হজে অশ্লীল ও পাপ কাজ এবং ঝগড়া-বিবাদ বৈধ নয়। আর তোমরা ভাল কাজের যা কর, আল্লাহ তা জানেন এবং পাথেয় গ্রহণ কর। নিশ্চয় উত্তম পাথেয় তাকওয়া। আর হে বিবেক সম্পন্নগণ, তোমরা আমাকে ভয় কর।’ {সূরা আল-বাকারা, আয়াত : ১৮৭}
সারকথা, সেটিই মাবরূর হজ, যাতে কল্যাণের পূর্ণ সমাহার ঘটে। পূর্ণ মাত্রায় যাতে আদায় করা হয় হজের সব রুকন, ওয়াজিব, সুন্নত ও মুস্তাহাব। উপরন্তু তাতে বিরত থাকা হয় সব ধরনের গুনাহ ও পাপাচার থেকে। বস্তুত যে ব্যক্তি সকল ওয়াজিব, সুন্নত ও মুস্তাহাবসহ হজ পুরোপুরিভাবে আদায় করবে, অবশ্যই সে এই পুণ্য সফরে পাপাচার থেকে বিরত থাকবে।
আর একমাত্র জান্নাতই যেহেতু মাবরূর হজের প্রতিদান। তাই এ সফরে বের হয়ে যে এর সকল বিধি-বিধান সুচারুরূপে পালন করে হজ সম্পন্ন করে, সে প্রকৃতপক্ষে জান্নাত নিয়েই ফিরে আসে। মৃত্যুর পর জান্নাতই তার ঠিকানা। অতএব আল্লাহ তা‘আলা যে সৌভাগ্যবান ব্যক্তিকে এ নিয়ামত ও অনুগ্রহে ভূষিত করেন তার জন্য কিছুতেই সমীচীন নয় হেলায় এ নিয়ামত হাতছাড়া করা; হজের শিক্ষা বিরোধী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজকে এ মহা পুরস্কার থেকে বঞ্চিত করা; বরং তার উচিত, যেকোনো মূল্যে এ নিয়ামত ধরে রাখা।
মুসলিম মাত্রেরই জানা উচিত, হজের জন্য মক্কা গমন আল্লাহর এক বিশেষ দান ও অনুগ্রহ। কেউ তার সম্পদগুণে, শরীরের শক্তিবলে, নিজের ক্ষমতা বা পদ বলে সেখানে গমন করতে পারে না যেমন আমি শুরুতেই বলেছি। এ জন্যই তাফসীরকারগণ বলেছেন, ইবরাহীম আলাইহিস সালাম যখন এর প্রথম ভিত রাখেন; কা‘বা ঘর নির্মাণ করেন; তখন আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কাছে ওহী পাঠান, ‘হে ইবরাহীম, তুমি মানবজাতিকে কা‘বায় আসতে আহ্বান জানাও। তিনি বললেন, হে আমার রব, আমার আওয়াজ আর কতদূর পৌঁছবে? তাদের সবার কাছে আমার দাওয়াত কীভাবে পৌঁছবে? আল্লাহ তা‘আলা বললেন, তোমার দায়িত্ব আহ্বান জানানো আর আমার দায়িত্ব তা পৌঁছে দেয়া। অতপর ইবরাহীম আলাইহিস সালাম মাকামে ইবরাহীমে দাঁড়িয়ে উদাত্ত কণ্ঠে আহ্বান জানান, ‘হে মানব সম্প্রদায়, আল্লাহ তোমাদের জন্য একটি ঘর নির্মাণ করেছেন, অতএব তোমরা এর উদ্দেশ্যে আগমন করো।’ এ কথায় অনাগতকালে যারা হজ করবে তারা সবাই লাব্বাইক বলেছে। এমনকি কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ আসবে তারা সবাই তাদের বাপ-দাদার পিঠ থেকে সাড়া দিয়েছে। যে একবার লাব্বাইক বলেছে, সে একবার হজ করবে। যে দু’বার লাব্বাইক বলেছে সে দু’বার হজ করবে। যে যতবার বলেছে তার ততবার হজ নসীব হবে। [নসবুর-রায়া : ৩/২৩]
এজন্যই হাজী সাহেব যখন হজের কার্যাদির সূচনা করেন তখন তার শ্লোগান হয়, ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’। আভিধানিকভাবে লাব্বাইক অর্থ আহ্বানে সাড়া দেয়া, উত্তর দেয়া। কেউ যখন কাউকে ডাকে, তার উত্তরে বলে, লাব্বাইক, তাহলে তার অর্থ দাঁড়ায়, আমি এখানে আছি। আমি আপনার নির্দেশ পালনে প্রস্তুত। আমি আপনার ডাকে সাড়া দিচ্ছি ইত্যাদি। সুতরাং হাজী সাহেব যখন লাব্বাইক বলে হজের কার্যক্রম শুরু করেন, তখন তিনি মূলত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের সে আহ্বানেই সাড়া দেন।
মোটকথা হজে যেতে পারা একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার অনুগ্রহ। প্রতিটি মানুষই জানে তার স্বগোত্রের বহু লোকের এ সৌভাগ্য হয়নি। অথচ তারা ধনে, জনে, শক্তিতে ও পদবিতে তার চেয়ে অনেক বড়। যদি তার ওপর আল্লাহর দয়া না হত তাহলে সে হজ করতে পারত না। কাউকে যদি এ সৌভাগ্যে ভূষিত করা হয়, তবে বুঝতে হবে তা কেবলই আল্লাহর দয়া। হে আল্লাহ আপনি আমাদের সবাইকে মাবরূর হজ নসীব করুন। আমীন।