×
একটি প্রশ্নের উত্তরে ফতোয়াটি প্রদান করা হয়। প্রশ্নটি হল: জনৈক ব্যক্তি পেশাব শেষ করে পেশাবের স্থান ধৌত করে নেয়। কিন্তু যখনই সে নড়াচড়া করে ও দাঁড়ায়, তখন অনুভব হয় যে, কয়েক ফোটা পেশাব বের হয়েছে। এ জন্য সে দীর্ঘ সময় পেশাবের স্থানে বসে থাকে আর বলে : কি করব ? সে কি তার এ অনুভূতি ও ধারণা ত্যাগ করে অযূ পূর্ণ করে নেবে ? না, পরিপূর্ণ পেশাব বন্ধ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে ? আশা করি উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন। আল্লাহ আপনাদের কল্যাণ করুন।

    পেশাব করার পর মনে হয় কয়েক ফোটা বের হয়েছে

    بعد قضاء حاجته يشعر بأنه نزل منه قطرات

    < بنغالي- Bengal - বাঙালি>

    আব্দুল আযীয ইবন আব্দুল্লাহ ইবন বায

    عبد العزيز بن عبد الله بن باز

    لله

    —™

    অনুবাদক: সানাউল্লাহ নযির আহমদ

    সম্পাদক: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া

    ترجمة: ثناء الله نذير أحمد

    مراجعة: د/ أبو بكر محمد زكريا

    পেশাব করার পর মনে হয় কয়েক ফোটা বের হয়েছে

    প্রশ্ন: জনৈক ব্যক্তি পেশাব শেষ করে পেশাবের স্থান ধৌত করে নেয় কিন্তু যখনই সে নড়াচড়া করে ও দাঁড়ায়, তখন অনুভব হয় যে, কয়েক ফোটা পেশাব বের হয়েছে। এ জন্য সে দীর্ঘ সময় পেশাবের স্থানে বসে থাকে আর বলে: কী করব? সে কি তার এ অনুভূতি ও ধারণা ত্যাগ করে অযূ পূর্ণ করে নেবে, নাকি পরিপূর্ণ পেশাব বন্ধ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে? আশা করি উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন। আল্লাহ আপনাদের কল্যাণ করুন।

    উত্তর: আল-হামদুলিল্লাহ।

    এ বিষয়টি ওয়াসওয়াসা ও সন্দেহ থেকে সৃষ্টি হয়। আর এগুলো তৈরি হয় শয়তানের পক্ষ থেকে। তবে কারো কারো ব্যাপারে প্রকৃতপক্ষেই এমন ঘটে। আর প্রকৃত হলে, সে তাড়াহুড়ো করবে না; বরং পেশাব বন্ধ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে, অতঃপর পানি দ্বারা পেশাবের স্থান ধৌত করবে। এরপর যদি কোনো কিছুর আশঙ্কা থাকে, তাহলে লজ্জাস্থানের আশপাশে লুঙ্গি বা পায়জামায় পানি ছিটিয়ে দেবে। অতঃপর অযু শেষ করার পর যে সন্দেহ সৃষ্টি হয়, সে দিকে সে ভ্রুক্ষেপ করবে না। ওয়াসওয়াসা ত্যাগ করার জন্য এ পদ্ধতি তার জন্য সহায়ক হবে।

    আর যদি শুধুই সন্দেহ ও ওয়াসওয়াসা হয়, যার কোনো বাস্তবতা নেই, তবে তার প্রতি মোটেই ভ্রুক্ষেপ করবে না। মুমিনদের জন্য এ সমস্ত জিনিসে দৃষ্টি না দেওয়া উচিৎ। কারণ, এগুলো শয়তানের ওয়াসওয়াসা। শয়তান চায় মানব জাতির সালাত-ইবাদাত নষ্ট করতে। অতএব, তার ষড়যন্ত্র ও ওয়াসওয়াসা থেকে সতর্ক থাকা জরুরি। আল্লাহকে আকড়ে থাকা এবং তার উপর ওরসা করা। আর এসব যা কিছু সৃষ্টি হয়, তা শয়তানের পক্ষ থেকে মনে করা, যাতে অযু এবং তার পরবর্তী সালাতে এর প্রতি কোনো ভ্রুক্ষেপ সৃষ্টি না হয়। আর নিশ্চিতভাবে কিছু বের হলে, পুনরায় পবিত্র হবে ও অযু করবে।

    আর ধারণার কোনো-ই গ্রহণযোগ্যতা নেই। যদিও ৯৯% ভাগ ধারণা হয়, তার প্রতিও কোনো ভ্রুক্ষেপ করা যাবে না। এগুলো শয়তানের প্ররোচনা। যতক্ষণ পর্যন্ত দৃঢ় বিশ্বাস না হবে, সে তার অযু, সালাত ও অন্যান্য কাজ করে যাবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করা হয়েছিল: হে আল্লাহর রাসূল! কোনো ব্যক্তির ধারণা হয় যে, তার সালাতে কিছু বের হয়েছে। উত্তরে তিনি বলেন, «لَا يَنْصَرِفْ حَتَّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَوْ يَجِدَ رِيحًا» “সালাত ত্যাগ করবে না, যতক্ষণ না সে আওয়াজ শোনে, অথবা গন্ধ পায়"। এখানে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, আওয়াজ বা গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত, কেবল ধারণার উপর নির্ভর করে সালাত ত্যাগ করবে না। তদ্রূপ মানুষ যখন অযু থেকে ফারেগ হয়, অতঃপর কোনো কিছু অনুভূত হলে, সে দিকে ভ্রুক্ষেপ করবে না এবং তার প্রতি ফিরে যাবে না; বরং সে তার পবিত্রতা, সালাত ও আমল করে যাবে, যতক্ষণ না ১০০% ধারণা হয় যে, কিছু বের হয়েছে। কারণ, কিছু বের না হওয়াই মূল কথা। আরো স্মরণ রাখবে যে, শয়তানের ওয়াসওয়াসা, তার প্ররোচনা ও তার সৃষ্ট সন্দেহ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, মুমিনকে ক্লান্ত করা ও তাকে কল্যাণকর এসব কাজ থেকে বিরত রাখা। আল্লাহর কাছে নিরাপত্তা চাচ্ছি।

    শাইখ আব্দুল আযীয ইবন বায রহ. فتاوى نور على الدرب (2/577)