×
ফাতওয়াটি মাহরামদেরকে সালাম দেওয়া প্রসঙ্গে একটি প্রশ্নের উত্তর। প্রশ্নটি হলো: মাহরামদেরকে সালাম দেওয়া এবং এ সময় চুম্বন ও করমর্দন করা কি জায়েয আছে? যদি জায়েয হয়ে থাকে তবে মাহরাম কারা? দুগ্ধপানের মাধ্যমে যারা মাহরাম হয় এ ক্ষেত্রে তাদেরও কি একই হুকুম ?

    সম্পাদক: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া

    প্রশ্ন: মাহরামদেরকে সালাম দেওয়া, চুম্বন ও করমর্দনের মাধ্যমে অভিবাদন জানানো কি জায়েয আছে? যদি জায়েয হয়ে থাকে তবে মাহরাম কারা? দুগ্ধপানের মাধ্যমে যারা মাহরাম হয়, এ ক্ষেত্রে তাদেরও কি একই হুকুম?

    উত্তর: আল-হামদুলিল্লাহ

    মাহরাম অর্থাৎ যাদের সাথে বিবাহ-শাদি হারাম, তাদেরকে সালাম দেওয়া পুরুষের জন্য জায়েয। নারীও তার মাহরামকে সালাম দিতে পারবে, মুসাফাহা ও চুম্বন করতে পারবে, এতে কোনো অসুবিধা নেই। আর মহরাম কারা, এর বর্ণনা পবিত্র কুরআনে সূরা আন-নূরের ৩২নং আয়াতে বর্ণিত হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে -স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাইয়ের ছেলে, বোনের ছেলে। মামা ও চাচাও মাহরামের অন্তর্ভুক্ত।

    উল্লিখিত ব্যক্তিরা হলো মাহরাম। অর্থাৎ নারীর ক্ষেত্র তার পিতা, দাদা, মায়ের পিতা (নানা), মায়ের পিতার পিতা, নিজের ছেলে, নিজের ছেলের ছেলে, নিজের মেয়ের ছেলে, নিজের ভাই, ভাইয়ের ছেলে এরা সবাই মাহরাম। অনুরূপভাবে মামা এবং চাচাও মাহরাম। নিজের স্বামীর পিতা (শ্বশুর), স্বামীর দাদা, স্বামীর ছেলে, স্বামীর ছেলের ছেলে, স্বামীর মেয়ের ছেলে, এরা সবাই মাহরাম।

    পুরুষ তারা মাহরাম আত্মীয়াকে চুম্বন করতে পারবে। যেমন, ফুফী, খালা, মা, বোন এদেরকে চুম্বন করায় কোনো অসুবিধা নেই, তবে মস্তকে চুম্বন করাই উত্তম যদি প্রাপ্তবয়স্ক হয়। নাক অথবা গণ্ডদেশেও চুম্বন করা যায়। তবে অধিকাংশ উলামা ঠোঁটে চুম্বন করা মাকরূহ বলেছেন। ঠোঁটে চুম্বন কেবল স্বামী-স্ত্রীর মাঝেই হতে পারে, মাহরামদের মাঝে নয়। মাহরামদেরকে মাথায়, নাকে কিংবা গণ্ডদেশে চুম্বন করা যেতে পারে। এটাই উত্তম এবং উচিত।

    মাহরাম বংশগত অনুযায়ী হোক অথবা দুগ্ধপান জনিত উভয় ক্ষেত্রে হুকুম একই।

    যারা দুগ্ধপানের কারণে মাহরাম হয় তারা হলেন: দুগ্ধদাতা মহিলার স্বামী (দুগ্ধপিতা) দুগ্ধচাচা, দুগ্ধমামা, স্বামীর দুগ্ধছেলে, স্বামীর দুগ্ধপিতা, এরা বংশগত মাহরামের মতোই। হাদীসে এসেছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “বংশগত কারণে যে যে হারাম হয়, দুগ্ধপান জনিত কারণেও সে সে হারাম হয়ে যায়"। অতঃপর দুদ্ধপানের কারণে হারাম হওয়া আর বংশগত কারণে হারাম বিধানের দিক থেকে অভিন্ন। বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের কারণেও স্বামী-স্ত্রীর উল্লিখিত ধরনের আত্মীয়রা একে অন্যের জন্য মাহরাম বলে পরিগণিত হয়। যেমন স্বামীর পিতা, স্বামীর দাদা, স্বামীর ছেলে। এসবই হারাম, চাই তা বংশগত বা দুগ্ধগত অথবা বিবাহজনিত যেটাই হোক না কেন।

    সূত্র: শাইখ আব্দুল আযীয ইবন আব্দুল্লাহ ইবন বায

    নুর আলাদ্দারব ফাতওয়াসমগ্র (ফাওতয়া নং ৩/১৫৬১)