×
মসজিদের আদব : ইসলামে মসজিদ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অন্যান্য ধর্মের উপাসনাগৃহগুলোর মত মসজিদ নিছকই কোনো উপাসনাগৃহ নয়। তাত্ত্বিক এবং ব্যাবহারিক ও ঐতিহাসিকভাবে তা এর থেকে ভিন্ন কিছু, নিজস্ব বৈশিষ্ট্য-সমৃদ্ধ। মসজিদ ব্যক্তি মুসলমানের উপাসনার পবিত্র স্থান। কিন্তু মুসলিম উম্মাহর ইতিহাসে মসজিদ গুরুত্বপূর্ণ নানা সামাজিক ভূমিকাও পালন করেছে। আলোচ্য প্রবন্ধে মসজিদের আদব ও মসজিদ বিষয়ে আমাদের করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

    মসজিদের আদব

    آداب المسجد

    [ بنغالي – Bengali – বাংলা ]

    আখতারুজ্জান মুহাম্মাদ সুলাইমান

    أختر الزمان محمد سليمان

    —™

    সম্পাদক: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া

    مراجعة: د/ أبو بكر محمد زكريا

    মসজিদের আদব

    মসজিদের অবস্থান

    মানুষের জীবনে মসজিদের গুরুত্ব অপরিসীম, তার অবস্থান অনেক উপরে, এর সংক্ষিপ্ত কিছু বিষয় নিম্নে উল্লে­­খ করছি।

    ১. মসজিদ আল্লাহ তা‘আলার ঘর, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    »ما اجتمع قوم فى بيت من بيوت الله...»

    “কোনো সম্প্রদায় যখন আল্লাহর ঘরসমূহের মধ্যে থেকে কোনো এক ঘরে একত্রিত হয়...।”[1]

    আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

    ﴿وَأَنَّ ٱلۡمَسَٰجِدَ لِلَّهِ فَلَا تَدۡعُواْ مَعَ ٱللَّهِ أَحَدٗا ١٨﴾ [الجن: ١٨]

    “এবং এই যে মসজিদসমূহ আল্লাহরই জন্য। সুতরাং আল্লাহর সাথে তোমরা অন্য কাউকে ডেকো না।” [সূরা আল-জিন্ন, আয়াত: ১৮]

    উলামায়ে কেরাম বলেন, উল্লি­খিত হাদীস ও আয়াতে মসজিদকে আল্লাহর দিকে সম্বন্ধযুক্ত করে উল্লেখ করার মাধ্যমে মূলত মসজিদের মর্যাদা ও গুরুত্ব ফুটে উঠেছে।

    ২. মসজিদ পৃথিবীতে সর্বোত্তম জায়গা এবং আল্লাহ তা‘আলার সবচেয়ে প্রিয় স্থান। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    »أحب البلاد إلى الله مساجدها، وأبغض البلاد إلى الله أسواقها».

    “আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম জায়গা মসজিদ এবং সর্ব-নিকৃষ্ট জায়গা বাজার।”[2]

    ৩. মসজিদ ইসলামের দ্বিতীয় ভিত্তি ফরয সালাত আদায়ের স্থান।

    ৪. মসজিদ মুসলিমদের সমবেত হওয়া, পরিচয় লাভ করা এবং সম্পর্ক তৈরি করার স্থান। সেখানে কুরআন পাঠের ক্লাস হয় এবং জ্ঞান-শিক্ষার পাঠ দান করা হয়।

    ৫. মসজিদের গুরুত্ব এবং মর্যাদার আরো একটি প্রমাণ হলো, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিজরত করার পর সর্বপ্রথম মসজিদ বানানোর দিকে দৃষ্টি দিয়েছেন। আর মদিনাতে আগমনের পর সেটাই তার সর্বপ্রথম কাজ।

    মসজিদ আবাদ করার ফযীলত

    মসজিদ আবাদ দুই প্রকার:

    (ক) বাহ্যিক আবাদ তথা নির্মাণ করা, আর এর অনেক ফযীলত রয়েছে। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    «من بنى مسجدا يبتغي به وجه الله بنى الله له مثله فى الجنة».

    “যে আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে মসজিদ তৈরি করবে, আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতে তার জন্য অনুরূপ একটি ঘর তৈরি করে দেবেন।”[3]

    হাদীসে সঠিক নিয়তে মসজিদ নির্মাণকারীর জন্যে জান্নাতে প্রবেশের শুভ সংবাদ আছে।কারণ জান্নাতে আল্লাহ তা‘আলার ঘর নির্মাণ করাই প্রমাণ করে যে সে ব্যক্তি তাতে প্রবেশ করবে।

    (খ) এতো গেল বাহ্যিকভাবে মসজিদ আবাদের কথা। মসজিদ আবাদের আরেকটি দিক রয়েছে যা প্রকৃত অর্থে আবাদ করা, আর সেটি এভাবে যে, সেখানে সালাত আদায় করা, যিকির করা, কুরআন তিলাওয়াত করা এবং অন্যান্য এবাদত করা; এর জন্য অগণিত পুরস্কার আছে মর্মে বহু আয়াত ও হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

    যেমন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    »من غدا إلى المسجد أو راح أعدّ الله له في الجنة نزلا كلما غدا أو راح

    “যে সকাল বিকাল মসজিদে গমনাগমন করবে, প্রত্যেকবার যাতায়াতের বিনিময়ে আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য জান্নাতে মেহমানদারির ব্যবস্থা করবেন।”

    আবাদের উভয় দিক শামিল হয় আল্লাহ তা‘আলার নিম্নোক্ত বাণী:

    ﴿إِنَّمَا يَعۡمُرُ مَسَٰجِدَ ٱللَّهِ مَنۡ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِ وَأَقَامَ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَى ٱلزَّكَوٰةَ وَلَمۡ يَخۡشَ إِلَّا ٱللَّهَۖ فَعَسَىٰٓ أُوْلَٰٓئِكَ أَن يَكُونُواْ مِنَ ٱلۡمُهۡتَدِينَ ١٨ ﴾ [التوبة: ١٨]

    “নিঃসন্দেহে তারাইতো আল্লাহর মসজিদ আবাদ করবে, যারা ঈমান আনে আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি এবং সাল্লাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকেই ভয় করে না। অতএব, আশা করা যায়, তারা সৎপথপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ১৮]

    মসজিদ সম্পর্কিত বিধানাবলী

    মসজিদের অনেক আদব ও বিধান রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি নিম্নে উলে­খ করা হল :

    ১. কারুকার্য বাদ দিয়ে সুন্দর করে বিল্ডিং বানানো। কেননা কারুকার্য করা বিদ‘আত। এতে সালাত আদায়কারীর মনোযোগ নষ্ট হয় এবং প্রতিযোগিতা ও অহংকারের দরজা খুলে যায়। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমাকে মসজিদ সাজাতে নির্দেশ দেওয়া হয় নি। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, তারা অবশ্যই মসজিদসমূহ সাজাবে, যেমন ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানরা সাজাতো।

    ইমাম বুখারী রহ. বলেন, উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু মসজিদ বানাতে নির্দেশ দিলেন এবং বললেন, আমি মানুষকে বৃষ্টি থেকে হিফাযত করছি। সাবধান! লাল ও হলুদ রং ব্যবহার করবে না। মানুষ ধাঁধাঁয় পড়ে যাবে। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, মসজিদ নিয়ে মানুষ গর্ব ও প্রতিযোগিতা করবে, কিন্তু খুব কম লোকই মসজিদ আবাদ করবে।

    ২. কবরের উপর মসজিদ তৈরি করা কিংবা মসজিদে কবর বানানো হারাম। কেননা এটি মূলত কবরের সম্মান প্রদর্শণ এবং আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত কবরের ইবাদত করার মাধ্যমে শির্কের রাস্তা তৈরি করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    «لعن الله اليهود والنصارى، اتخذوا قبور أنبيائهم مساجد».

    “ইয়াহূদী ও খ্রিস্টানদের ওপর আল্লাহ তা‘আলার অভিশাপ। তারা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদ বানিয়েছে।”[4]

    জুন্দুব রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পূর্বে পাঁচটি অসিয়ত শুনেছেন, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন:

    »...وإن من كان قبلكم كانوا يتخذون قبور أنبيائهم وصالحيهم مساجد، ألا فلا تتخذوا القبور مساجد، فإني أنهاكم عن ذلك».

    “...তোমাদের পূর্ববর্তীরা নবী ও সৎ লোকদের কবরকে মসজিদ বানাতো। সাবধান! তোমরা কবরকে মসজিদ বানিও না। আমি তোমাদেরকে এ ব্যাপারে নিষেধ করছি।”[5] কবরস্থানে জানাযার সালাত ছাড়া অন্য কোনো সালাত বৈধ নয়।

    ৩. মসজিদ সর্বদা পরিচ্ছন্ন রাখা। অপবিত্র করা বা কষ্টদায়ক জিনিস সেখানে রাখা হারাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    «البصاق فى المسجد خطيئة وكفارتها دفنها».

    “মসজিদে থুতু ফেলা অন্যায়, তার কাফ্‌ফারা হলো পুতে ফেলা।”[6]

    পুতে ফেলা সম্ভব না হলে, অন্যভাবে পরিষ্কার করতে হবে। যেমন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদের দেয়াল থেকে থুতু সরিয়ে ফেলেছিলেন।

    ৪. মসজিদে নম্রতা ও স্থিরতার সাথে যাওয়া। তাড়াতাড়ি বা দৌঁড়িয়ে না যাওয়া। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    »وإذا أتيتم الصلاة فعليكم بالسكينة، فما أدركتم فصلوا وما فاتكم فأتموا».

    “যখন তোমরা সালাতে আসবে অবশ্যই ধীর-স্থিরতার সাথে আসবে। যতটুকু পাবে, আদায় করবে। আর যতটুকু ছুটে যাবে, পূর্ণ করবে।”[7]

    ৫. মসজিদে ডান পা দিয়ে প্রবেশ করা ও বাম পা দিয়ে বের হওয়া। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, সুন্নাত হলো যখন মসজিদে প্রবেশ করবে, ডান পা দিয়ে প্রবেশ করবে। আর যখন বের হবে বাম পা দিয়ে বের হবে।

    প্রবেশ এবং বের হবার দো‘আ পড়বে। রাসূলের নির্দেশ:

    «إذا دخل أحدكم المسجد فليقل اللهم افتح لي أبواب رحمتك، وإذا خرج فليقل اللهم إنى أسألك من فضلك».

    “যখন কোনো ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করবে তখন বলবে: اللهم افتح لي أبواب رحمتك».»

    আর যখন বের হবে তখন বলবে: اللهم إني أسألك من فضلك

    ৬. মসজিদে আগে আগে যাওয়া এবং প্রথম কাতারে সালাত পড়ার প্রতি আগ্রহী থাকার প্রতি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি বলেন,

    «لو يعلم الناس ما في النداء والصف الأول ثم لم يجدوا إلا أن يستهموا عليه لاستهموا على ذلك، ولو يعلمون ما في التهجير لا سبقوا إليه».

    “যদি মানুষ জানতে পারত, আজান দেওয়া এবং প্রথম কাতারে সালাত পড়ার মাঝে কি আছে, আর লটারি ব্যতীত সেটি পাওয়া সম্ভব হত না, তাহলে অবশ্যই তার জন্য লটারির ব্যবস্থা করত এবং যদি জানতে পারত মসজিদে আগে আসার মাঝে কি ফযীলত আছে, তাহলে তার জন্য হামাগুড়ি দিয়ে হলেও আসত।”[8]

    আর যিনি মসজিদে আগে আসবেন, কোনো কারণ ছা্ড়া তার প্রথম কাতার বাদ দিয়ে পিছনে বসা উচিৎ নয়। শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়া বলেন, ‘যে ব্যক্তি আগে আসল এবং কোনো ওযর ব্যতীতই প্রথম কাতার ছাড়া অন্য জায়গায় বসল, সে শরী‘আতের বিধান লঙ্ঘন করল। পিছনে হটে থাকার দরুন সে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কল্যাণ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    »تقدموا، فائتموا بي، وليأتم بكم من بعدكم، لا يزال قوم يتأخرون حتى يؤخرهم الله».

    “তোমরা সামনের দিকে অগ্রসর হও এবং আমার ইক্তেদা কর। আর তোমাদের পরবর্তীগণ তোমাদের এক্তেদা করবে। একটি সম্প্রদায় সব সময় পিছনে থাকবে এক পর্যায়ে আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে পিছনে ঠেলে দেবেন।”[9]

    মসজিদে আগে আসার মাঝে অনেক উপকার। যথা- জামা‘আতের শুরু থেকে অংশগ্রহণ, কুরআন পড়ার সুযোগ, নফল আদায় করার সুযোগ, ফিরিশতারা তার জন্য ক্ষমার দো‘আ করতে থাকে। যতক্ষণ সালাতের অপেক্ষায় থাকবে ততক্ষণ সালাতরত আছে বলে ধরা হবে এবং প্রথম কাতার পাওয়া ইত্যাদি।

    ৭. মসজিদে প্রবেশকারী দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল মসজিদ আদায় ব্যতীত বসবে না। আবু কাতাদাহ আনসারী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    «إذا دخل أحدكم المسجد فلا يجلسنّ حتى يصلي ركعتين».

    “তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে দুই রাকাত না পড়া ব্যতীত কখনোই বসবে না।”[10] ইমাম সাহেব জুমু‘আর সালাতে খুৎবা দানরত থাকা অবস্থায় প্রবেশ করলেও এ দুই রাকাত আদায় করবে তবে একটু সংক্ষিপ্তাকারে আদায় করবে। জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন,

    »إذا جاء أحدكم يوم الجمعة والإمام يخطب فليصل ركعتين ويتجوز فيهما».

    “ইমামের খুৎবা চলা অবস্থায় তোমাদের কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করবে, তখন সংক্ষেপে দুই রাকাত সালাত আদায় করবে।”[11]

    ৮. মসজিদে উচ্চস্বরে কথা বলা, সালাত আদায়কারী বা তিলাওয়াতকারীকে বিরক্ত করা মাকরূহ। চাই তা সাধারণ কথা হোক বা উচ্চস্বরে কুরআর পাঠ করা হোক। পাশের লোককে কষ্ট দেওয়া নিষেধ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    »إن المصلي يناجي ربه فلينظر بما يناجيه، ولا يجهر بعضكم على بعض بالقرآن».

    “সালাত ব্যক্তি তার প্রভুর সাথে গোপনে কথা বলে। তার খেয়াল রাখা উচিৎ যে, সে কী বলছে। তোমরা কুরআন শরীফ তিলাওয়াতের মাধ্যমে একে অন্যের ওপর শব্দ কর না।”[12]

    ৯. মুক্তাদী সর্বদা ইমামের অনুসরণ করবে, প্রত্যেক আমল তার পর পরই সাথে সাথে আদায় করবে। ইমামের আদায়ের আগে করবে না, সাথেও করবে না। আবার ইমাম থেকে অনেক দেরিতেও না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    »إنما جعل الإمام ليؤتم به، فلا تختلفوا عليه، فإذا كبر فكبروا، وإذا ركع فاركعوا، وإذا قال سمع الله لمن حمده فقولوا -اللهم ربنا ولك الحمد―وإذا سجد فاسجدوا، وإذا صلى جالسا فصلوا جلوسا أجمعون».

    “ইমাম নির্ধারণ করা হয়েছে তাঁর অনুসরণের জন্য, তোমরা তার সাথে বিরোধ কর না। তিনি যখন আল্লাহু আকবার বলবেন, তখন তোমরা আল্লাহু আকবার বলবে, আর যখন রুকু করবেন, তোমরা রুকু করবে, যখন سمع الله لمن حمده বলবেন, তোমরা اللهم ربنا ولك الحمد বলবে, যখন সাজদাহ করবেন, তোমরা সাজদাহ করবে, যখন তিনি বসে সালাত আদায় করবেন তখন তোমরা সবাই বসে সালাত আদায় করবে।”[13] ইমামের পূর্বে কোনো কাজ করা হারাম হওয়া সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

    »أما يخشى الذي يرفع رأسه قبل الإمام أن يحول الله رأسه رأس حمار أو صورته صورة حمار».

    “যে ব্যক্তি সালাতে ইমামের পূর্বে মাথা উঠায় তার কি ভয় হয় না যে, আল্লাহ তা‘আলা তার মাথাকে গাধার মাথা বানিয়ে দিবেন কিংবা তার আকৃতিকে গাধার আকৃতি বানিয়ে দিবেন।”[14]

    [1] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৮৬৭।

    [2] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০৭৬।

    [3] সহীহ তিরমিযী, হাদীস নং ২৯২।

    [4] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮২৫।

    [5] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮২৭।

    [6] সুনান নাসাঈ, হাদীস নং ৭১৫।

    [7] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৯৯।

    [8] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৫৮০।

    [9] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৬২।

    [10] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১০৯৭।

    [11] আবু দাউদ, হাদীস নং ৯৪২।

    [12] মুয়াত্তা মালেক, হাদীস নং ১৬৩।

    [13] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৮০।

    [14] সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং ৫২৮।