الحكمة من خلق البشر
أعرض المحتوى باللغة الأصلية
فتوى مترجمة إلى اللغة البنغالية، عبارة عن سؤال، ونصه : " لما خُلق البشر ؟ ".
কেন মানুষ সৃষ্টি করা হয়েছে?
الحكمة من خلق البشر
< بنغالي- Bengal - বাঙালি>
ইসলাম কিউ.এ
موقع الإسلام سؤال وجواب
অনুবাদক: সানাউল্লাহ নজির আহমদ
সম্পাদক: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
ترجمة: ثناء الله نذير أحمد
مراجعة: د/ أبو بكر محمد زكريا
কেন মানুষ সৃষ্টি করা হয়েছে?
প্রশ্ন: কেন মানুষ সৃষ্টি করা হয়েছে?
উত্তর: আল-হামদুলিল্লাহ।
প্রথমত: আল্লাহর বিশেষ এক বিশেষণ الحكم অর্থাৎ প্রজ্ঞা ও হিকমত। তার মহান এক নামالحكيم অর্থাৎ প্রজ্ঞাময় ও হিকমতপূর্ণ। একটি বিষয় স্মরণ রাখা জরুরি যে, আল্লাহ তা'আলা কোনো বস্তু অযথা সৃষ্টি করেন নি, অনর্থক সৃষ্টি করা তার মর্যাদার পরিপন্থী, তাই অনর্থক সৃষ্টি থেকে তিনি পবিত্র। তিনি মহান হিকমত ও বৃহৎ উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেন, যে তার জ্ঞান লাভ করেছে জেনেছে, যে লাভ করে নি, জানে নি। আল্লাহ তা'আলা কুরআনুল কারীমে বলেছেন: তিনি অযথা মানুষ সৃষ্টি করেন নি, আসমান ও জমিন তার অযথা সৃষ্টি নয়। তিনি বলেন:
﴿أَفَحَسِبۡتُمۡ أَنَّمَا خَلَقۡنَٰكُمۡ عَبَثٗا وَأَنَّكُمۡ إِلَيۡنَا لَا تُرۡجَعُونَ ١١٥ فَتَعَٰلَى ٱللَّهُ ٱلۡمَلِكُ ٱلۡحَقُّۖ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ رَبُّ ٱلۡعَرۡشِ ٱلۡكَرِيمِ ١١٦﴾ [المؤمنون : ١١٥، ١١٦]
“তোমরা কি মনে করেছিলে যে, আমরা তোমাদেরকে কেবল অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে না? সুতরাং সত্যিকারের মালিক আল্লাহ মহিমান্বিত, তিনি ছাড়া কোনো (সত্য) ইলাহ নেই, তিনি সম্মানিত 'আরশের রব"? [সূরা আল-মুমিনূন, আয়াত: ১১৫-১১৬]
তিনি অন্যত্র বলেন,
﴿وَمَا خَلَقۡنَا ٱلسَّمَآءَ وَٱلۡأَرۡضَ وَمَا بَيۡنَهُمَا لَٰعِبِينَ ١٦﴾ [الانبياء: ١٦]
“আমরা আসমান ও জমিন এবং তার মাঝে যা কিছু আছে খেলাচ্ছলে সৃষ্টি করে নি"। [সূরা আল-আম্বিয়া, আয়াত: ১৬]
তিনি অন্যত্র বলেন:
﴿وَمَا خَلَقۡنَا ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ وَمَا بَيۡنَهُمَا لَٰعِبِينَ ٣٨ مَا خَلَقۡنَٰهُمَآ إِلَّا بِٱلۡحَقِّ وَلَٰكِنَّ أَكۡثَرَهُمۡ لَا يَعۡلَمُونَ ٣٩﴾ [الدخان: ٣٨، ٣٩]
“আর আমরা আসমানসমূহ, জমিন এবং এতদুভয়ের মধ্যে যা কিছু আছে তা খেলাচ্ছলে সৃষ্টি করে নি। আমি এ দু'টোকে যথাযথভাবেই সৃষ্টি করেছি, কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা জানে না"। [সূরা আদ-দুখান, আয়াত: ৩৮-৩৯]
অপর আয়াতে তিনি বলেন:
﴿حمٓ ١ تَنزِيلُ ٱلۡكِتَٰبِ مِنَ ٱللَّهِ ٱلۡعَزِيزِ ٱلۡحَكِيمِ ٢ مَا خَلَقۡنَا ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ وَمَا بَيۡنَهُمَآ إِلَّا بِٱلۡحَقِّ وَأَجَلٖ مُّسَمّٗىۚ وَٱلَّذِينَ كَفَرُواْ عَمَّآ أُنذِرُواْ مُعۡرِضُونَ ٣﴾ [الاحقاف: ١، ٣]
“হা-মীম, এই কিতাব মহা পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময় আল্লাহর নিকট থেকে নাযিলকৃত। আমরা আসমানসমূহ, জমিন ও এতদুভয়ের মধ্যে যা কিছু আছে, তা যথাযথভাবে ও একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সৃষ্টি করেছি। আর যারা কুফুরী করে, তাদেরকে যে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে তা থেকে তারা বিমুখ"। [সূরা আল-আহকাফ, আয়াত: ১-৩]
মানব জাতি আল্লাহর অযথা সৃষ্টি নয় শুধু শরী'আতের ঘোষণা নয়, বিবেকও তার সাক্ষী। কোনো বিবেকি মেনে নিতে পারে না যে, এ জগত অযথা সৃষ্টি করা হয়েছে। বিবেকি মানুষ অযথা কাজ থেকে নিজেকে নির্লিপ্ত ও পবিত্র রাখে, তাহলে অধিক প্রজ্ঞাময় আল্লাহ কেন অযথা সৃষ্টতে লিপ্ত হবেন?! তাই বিবেকী মুমিনগণ স্বীকার করে, 'বিনা হিকমতে আল্লাহ মখলুক সৃষ্টি করেন নি, যা কাফিররা অস্বীকার করেছে। আল্লাহ তা'আলা বলেন:
﴿إِنَّ فِي خَلۡقِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ وَٱخۡتِلَٰفِ ٱلَّيۡلِ وَٱلنَّهَارِ لَأٓيَٰتٖ لِّأُوْلِي ٱلۡأَلۡبَٰبِ ١٩٠ ٱلَّذِينَ يَذۡكُرُونَ ٱللَّهَ قِيَٰمٗا وَقُعُودٗا وَعَلَىٰ جُنُوبِهِمۡ وَيَتَفَكَّرُونَ فِي خَلۡقِ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِ رَبَّنَا مَا خَلَقۡتَ هَٰذَا بَٰطِلٗا سُبۡحَٰنَكَ فَقِنَا عَذَابَ ٱلنَّارِ ١٩١﴾ [ال عمران: ١٩٠، ١٩١]
“নিশ্চয় আসমানসমূহ ও জমিনের সৃষ্টি এবং রাত ও দিনের বিবর্তনের মধ্যে রয়েছে বিবেকসম্পন্নদের জন্য বহু নিদর্শন। যারা আল্লাহকে স্মরণ করে দাঁড়িয়ে, বসে ও কাত হয়ে এবং আসমানসমূহ ও জমিনের সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা করে। (বলে) 'হে আমাদের রব, তুমি এসব অনর্থক সৃষ্টি কর নি। তুমি পবিত্র মহান। সুতরাং তুমি আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা কর"। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৯০-১৯১]
অপর আয়াতে তিনি কাফেরদের সম্পর্কে বলেন:
﴿ وَمَا خَلَقۡنَا ٱلسَّمَآءَ وَٱلۡأَرۡضَ وَمَا بَيۡنَهُمَا بَٰطِلٗاۚ ذَٰلِكَ ظَنُّ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْۚ فَوَيۡلٞ لِّلَّذِينَ كَفَرُواْ مِنَ ٱلنَّارِ ٢٧ ﴾ [ص : ٢٧]
“আর আসমান, জমিন এবং এ দু'য়ের মধ্যে যা আছে তা আমি অনর্থক সৃষ্টি করে নি। এটা কাফিরদের ধারণা, সুতরাং কাফিরদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের দুর্ভোগ"। [সূরা সোয়াদ, আয়াত: ২৭]
শাইখ আব্দুর রহমান সাদী রহ. বলেন, “এ আয়াতে আল্লাহ তা'আলা আসমান ও জমিন সৃষ্টির পশ্চাতে তার হিকমতের বর্ণনা দিচ্ছেন যে, তিনি তা অনর্থক, অযথা ও খেলাচ্ছলে সৃষ্টি করেন নি, যাতে কোনো ফায়দা ও উপকার নেই। এটা কাফিরদের ধারণা তাদের রব সম্পর্কে, তারা তাদের রব সম্পর্কে সঠিক ধারণা করে নি। তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের দুর্ভোগ। আগুন তাদের থেকে প্রতিশোধ নিবে ও তাদেরকে কঠোর শাস্তি প্রদান করবে। আল্লাহ তা'আলা আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন যেন বান্দা তার পরিপূর্ণ ইলম, কুদরত ও তার রাজত্বের ব্যাপ্তি সম্পর্কে জানে। আরো জানে যে, একমাত্র তিনিই মা'বুদ ও উপাস্য, কাফিরদের স্থিরকৃত বাতিল উপাস্যগুলো মা'বুদ নয়, যারা আসমান ও জমিনের অণুপরিমান সৃষ্টি করতে পারে নি। পুনরুত্থান সত্য, তাতে নেককার ও বদকারদের মাঝে আল্লাহ ফয়সালা করবেন। কোনো মূর্খের এ ধারণা সঠিক নয় যে, আল্লাহ তাদের উভয়কে সমান করে দিবেন। আল্লাহ বলেন,
﴿أَمۡ نَجۡعَلُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَعَمِلُواْ ٱلصَّٰلِحَٰتِ كَٱلۡمُفۡسِدِينَ فِي ٱلۡأَرۡضِ أَمۡ نَجۡعَلُ ٱلۡمُتَّقِينَ كَٱلۡفُجَّارِ ٢٨﴾ [ص : ٢٨]
'যারা ঈমান আনে ও নেক আমল করে আমি কি তাদেরকে জমিনে বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের সমতুল্য গণ্য করব? নাকি আমি মুত্তাকীদেরকে পাপাচারীদের সমতুল্য গণ্য করব'? [সূরা সোয়াদ, আয়াত: ২৮] এটা আল্লাহর হিকমত ও ফয়সালার সাথে সাঞ্জস্যশীল নয়"।[1]
দ্বিতীয়ত: আল্লাহ তা'আলা মানব জাতিকে এ জন্য সৃষ্টি করেননি যে, চতুষ্পদ জন্তুর ন্যায় তারা খাবে, পান করবে ও সংখ্যায় বর্ধিত হবে, বরং আল্লাহ তাদেরকে সম্মানিত করেছেন, অনেক মখলুকের ওপর তাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন; কিন্তু অধিকাংশ মানুষই কুফরিতে লিপ্ত হয়েছে, ফলে তারা নিজেদের সৃষ্টির হিকমত ভুলে গেছে ও অস্বীকার করেছে, তাদের মূল লক্ষ্য দুনিয়া উপভোগ করা, তাদের জীবন চতুষ্পদ জন্তুর জীবনের ন্যায়, বরং তাদের চেয়েও নিকৃষ্ট। আল্লাহ তা'আলা বলেন,
﴿ وَٱلَّذِينَ كَفَرُواْ يَتَمَتَّعُونَ وَيَأۡكُلُونَ كَمَا تَأۡكُلُ ٱلۡأَنۡعَٰمُ وَٱلنَّارُ مَثۡوٗى لَّهُمۡ ١٢﴾ [محمد : ١٢]
“কিন্তু যারা কুফুরী করে তারা ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকে এবং তারা আহার করে যেমন চতুষ্পদ জন্তুরা আহার করে। আর জাহান্নামই তাদের বাসস্থান"। [সূরা মুহাম্মদ, আয়াত: ১২]
অপর আয়াতে তিনি বলেন,
﴿ذَرۡهُمۡ يَأۡكُلُواْ وَيَتَمَتَّعُواْ وَيُلۡهِهِمُ ٱلۡأَمَلُۖ فَسَوۡفَ يَعۡلَمُونَ ٣﴾ [الحجر: ٣]
“তাদেরকে ছেড়ে দাও, আহারে ও ভোগে তারা মত্ত থাকুক এবং আশা তাদেরকে গাফেল করে রাখুক, আর অচিরেই তারা জানতে পারবে"। [সূরা আল-হিজর, আয়াত: ৩]
অপর আয়াতে তিনি বলেন,
﴿وَلَقَدۡ ذَرَأۡنَا لِجَهَنَّمَ كَثِيرٗا مِّنَ ٱلۡجِنِّ وَٱلۡإِنسِۖ لَهُمۡ قُلُوبٞ لَّا يَفۡقَهُونَ بِهَا وَلَهُمۡ أَعۡيُنٞ لَّا يُبۡصِرُونَ بِهَا وَلَهُمۡ ءَاذَانٞ لَّا يَسۡمَعُونَ بِهَآۚ أُوْلَٰٓئِكَ كَٱلۡأَنۡعَٰمِ بَلۡ هُمۡ أَضَلُّۚ أُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡغَٰفِلُونَ ١٧٩﴾ [الاعراف: ١٧٨]
“আর আমরা অবশ্যই সৃষ্টি করেছি জাহান্নামের জন্য বহু জিন্ন ও মানুষকে। তাদের রয়েছে অন্তর, তা দ্বারা তারা বুঝে না, তাদের রয়েছে চোখ, তা দ্বরা তারা দেখে না এবং তাদের রয়েছে কান, তা দ্বারা তারা শুনে না। তারা চতুষ্পদ জন্তুর মত, বরং তারা অধিক পথভ্রষ্ট। তারা হচ্ছে গাফেল"। [সূরা আল-আ'রাফ, আয়াত: ১৭৯]
বিবেকী মানুষমাত্র জানে যে, কোনো বস্তু যে তৈরি করে, সে অন্যদের চেয়ে তার বস্তুর হিকমত সম্পর্কে অধিক জানে। দুনিয়াবী ক্ষেত্রে এ নিয়ে কারো দ্বিমত নেই। আল্লাহ পরিপূর্ণ গুণের অধিকারী, তিনি সৃষ্টি করেছেন মানব জাতিকে, অতএব তিনি জানেন মানুষ সৃষ্টির মূল লক্ষ্য কি? অধিকন্তু মানুষ হিসেবে সবাই জানে যে, তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসমূহের সৃষ্টির পশ্চাতে হিকমত রয়েছে, যেমন চোখ দেখার জন্য, কান শুনার জন্য ইত্যাদি। এরূপ প্রত্যেক অঙ্গ কোনো না কোনো কারণে সৃষ্টি করা হয়েছে। অতএব এটা কি মানা যায় যে, যার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সৃষ্টির পশ্চাতে হিকমত রয়েছে, খোদ তার সৃষ্টি হচ্ছে অযথা ও অনর্থক? অথবা এটা কি মানা যায় যে, স্রষ্টা তার সৃষ্টির হিকমত বলার পরও সে তার ডাকে সাড়া দিবে না?!
তৃতীয়ত: আল্লাহ তা'আলা আসমান-জমিন ও জীবন-মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন পরীক্ষার জন্য, যে তার আনুগত্য করবে তিনি তাকে প্রতিদান দিবেন, যে তার নাফরমানি করবে তিনি তাকে শাস্তি দিবেন। তিনি বলেন,
﴿وَهُوَ ٱلَّذِي خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٖ وَكَانَ عَرۡشُهُۥ عَلَى ٱلۡمَآءِ لِيَبۡلُوَكُمۡ أَيُّكُمۡ أَحۡسَنُ عَمَلٗاۗ وَلَئِن قُلۡتَ إِنَّكُم مَّبۡعُوثُونَ مِنۢ بَعۡدِ ٱلۡمَوۡتِ لَيَقُولَنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاْ إِنۡ هَٰذَآ إِلَّا سِحۡرٞ مُّبِينٞ ٧﴾ [هود: ٧]
“আর তিনিই আসমানসমূহ ও জমিন সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে, আর তার 'আরশ ছিল পানির উপর, যাতে তিনি পরীক্ষা করেন, কে তোমাদের মধ্যে আমলে সর্বোত্তম। আর তুমি যদি বল, 'মৃত্যুর পর নিশ্চয় তোমাদেরকে পুনরুজ্জিবীত করা হবে', তবে কাফিররা অবশ্যই বলবে, 'এতো শুধুই স্পষ্ট জাদু"। [সূরা হূদ, আয়াত: ৭]
অন্যত্র তিনি বলেন,
﴿ ٱلَّذِي خَلَقَ ٱلۡمَوۡتَ وَٱلۡحَيَوٰةَ لِيَبۡلُوَكُمۡ أَيُّكُمۡ أَحۡسَنُ عَمَلٗاۚ وَهُوَ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡغَفُورُ ٢ ﴾ [الملك: ٢]
“যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন যাতে তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন যে, কে তোমাদের মধ্যে আমলের দিক থেকে উত্তম। আর তিনি মহাপরাক্রমশালী, অতিশয় ক্ষমাশীল"। [সূরা আল-মুলক, আয়াত: ২] এ পরীক্ষার মাঝে আল্লাহর নাম ও গুণাবলির বহিঃপ্রকাশ ঘটবে। যেমন, 'রহমান', গাফুর, হাকিম, তাউওয়াব ও রাহিম ইত্যাদি।[2]
মানবজাতিকে সৃষ্টি করার প্রধান লক্ষ্য তাকে তাওহিদের নির্দেশ করা এবং একমাত্র তাঁরই ইবাদত করার আদেশ করা, তার কোনো শরীক নেই, এটাই সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। এ দিকে ইশারা করে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
﴿وَمَا خَلَقۡتُ ٱلۡجِنَّ وَٱلۡإِنسَ إِلَّا لِيَعۡبُدُونِ ٥٦﴾ [الذاريات: ٥٦]
“আর আমি জিন্ন ও মানুষকে কেবল এ জন্যই সৃষ্টি করেছি যে তারা কেবল আমার ইবাদত করবে"। [সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত: ৩৩]
ইবন কাসির রহ. বলেন: “অর্থাৎ আমার ইবাদতের নির্দেশ দেওয়ার জন্য আমি তাদেরকে সৃষ্টি করেছি, আমার কোনো প্রয়োজনের জন্য নয়"। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে আলি ইবন আবু তালহা বলেন: إلا ليعبدون অর্থ যেন তারা ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় আমার ইবাদতের স্বীকৃতি প্রদান করে। এ মতটি ইবন জুরাইজের পছন্দনীয়। ইবন জুরাইজ আরো বলেন:, “যেন তারা আমার পরিচয় লাভ করে"। রাবি ইবন আনাস বলেন: إلا ليعبدون অর্থ শুধু ইবাদতের জন্য"।[3]
শাইখ আব্দুর রহমান সাদী রহ. বলেন, “আল্লাহ তা'আলা স্বীয় নাম ও গুণাবলির বহিঃপ্রকাশ এবং তাঁর ইবাদতের জন্য মখলুক সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি তাদেরকে তার নির্দেশ প্রদান করেছেন। অতএব, যে আনুগত্য করল ও নির্দেশিত ইবাদত আঞ্জাম দিল, সে সফলকাম। আর যে তার ইবাদত থেকে বিমুখ হল, সেই ক্ষতিগ্রস্ত। আল্লাহ অবশ্যই তাদেরকে জমা করবেন, অতঃপর আদেশ ও নিষেধের ভিত্তিতে তাদেরকে প্রতিদান দিবেন, যদিও মুশরিকরা প্রতিদান দিবস অস্বীকার করে। তিনি বলেন,
﴿وَلَئِن قُلۡتَ إِنَّكُم مَّبۡعُوثُونَ مِنۢ بَعۡدِ ٱلۡمَوۡتِ لَيَقُولَنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوٓاْ إِنۡ هَٰذَآ إِلَّا سِحۡرٞ مُّبِينٞ ٧﴾ [هود: ٧]
“আর তুমি যদি বল, 'মৃত্যুর পর নিশ্চয় তোমাদেরকে পুনরুজ্জিবীত করা হবে', তবে কাফিররা অবশ্যই বলবে, 'এতো শুধুই স্পষ্ট জাদু"। [সূরা হূদ, আয়াত: ৭] অর্থাৎ যদি তুমি তাদেরকে বল ও পুনরুত্থান দিবস সম্পর্কে সংবাদ দাও, তাহলে তারা তোমাকে সত্যারোপ করবে না, বরং তোমাকে মিথ্যারোপ করবে ও তোমার আনীত দীনকে দোষারোপ করবে। তারা বলেছে: ﴿إِنۡ هَٰذَآ إِلَّا سِحۡرٞ مُّبِينٞ﴾ 'এতো শুধুই স্পষ্ট জাদু', অথচ দেদীপ্যমান সত্য"।[4] আল্লাহ ভালো জানেন।
সূত্র: موقع الإسلام سؤال وجواب