العناية بالحامل والمرضع
أعرض المحتوى باللغة الأصلية
مقالة باللغة البنغالية تتحدث حول أهمية العناية بالحامل والأم المرضع مُستدلاًّ على ذلك بالأدلة من القرآن والسنة. لأن المنصرين لا يزالون يسيطرون على هذا الجانب بفتح مستشفيات ومراكز الخدمات الصحية في المناطق النائية بأسماء مستعارة وجذابة لاسيما في المناطق الشمالية من بنغلاديش. ومن هنا يجب على المسلمين الاعتناء بهذا الجانب كما ينبغي.
চাই প্রসূতি মায়ের নিবিড় যত্ন
العناية بالحامل والمرضع
<بنغالي>
আলী হাসান তৈয়ব
علي حسن طيب
সম্পাদক: আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
مراجعة: د/ أبو بكر محمد زكريا
চাই প্রসূতি মায়ের নিবিড় যত্ন
২৮ মে বিশ্বজুড়ে পালিত হয় নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস। প্রতি বছর এর প্রতিবাদ্য থাকে সাধারণত 'প্রসূতি মায়ের যত্ন নিন, মাতৃমৃত্যু রোধ করুন' এ ধরনের কিছু। ইসলামে প্রসূতির নিরাপদ মাতৃত্ব লাভের অধিকার ও মাতৃস্বাস্থ্য পরিচর্যার ব্যাপারে বিভিন্ন শিক্ষা ও দিকনির্দেশনা রয়েছে। মাতৃত্ব অর্জন যে কোনো নারীসত্তাকে পূর্ণতায় পৌঁছে দেয়। গর্ভবতী মাকে দীনী বিধি-নিষেধ এবং অনেক কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হয়, অন্যথায় মা ও শিশু উভয়েরই মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়ে। তাই যিনি মা হবেন, তার অবশ্যই স্বাস্থ্য উন্নয়ন, সচেতনতা বাড়ানো ও যথেষ্ট পরিচর্যা করতে হবে। একজন সুস্থ মা একটি সুস্থ শিশুর জন্ম দিতে পারেন। সুস্থ শিশুর জন্য নিশ্চিত করতে হবে নিরাপদ মাতৃত্ব। এজন্য গর্ভবতী মায়ের প্রয়োজনীয় বিশ্রাম, যত্ন ও সেবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
একজন নারী নিরাপদে মা হবেন -এ দায়িত্ব পরিবার এবং সমাজের সবার। এ সময়টা মুসলিম পরিবারের সদস্যদের বিশেষ বিবেচনার দাবী রাখে। প্রকৃতপক্ষে নিরাপদ মাতৃত্ব প্রতিটি গর্ভবতী নারীরই ন্যায্য প্রাপ্য বা ন্যায়সঙ্গত অধিকার। এর সঙ্গে দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গঠনের বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এ মর্মে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ঘোষণা করেছেন,
﴿وَٱلۡوَٰلِدَٰتُ يُرۡضِعۡنَ أَوۡلَٰدَهُنَّ حَوۡلَيۡنِ كَامِلَيۡنِۖ لِمَنۡ أَرَادَ أَن يُتِمَّ ٱلرَّضَاعَةَۚ وَعَلَى ٱلۡمَوۡلُودِ لَهُۥ رِزۡقُهُنَّ وَكِسۡوَتُهُنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ لَا تُكَلَّفُ نَفۡسٌ إِلَّا وُسۡعَهَاۚ لَا تُضَآرَّ وَٰلِدَةُۢ بِوَلَدِهَا وَلَا مَوۡلُودٞ لَّهُۥ بِوَلَدِهِۦۚ وَعَلَى ٱلۡوَارِثِ مِثۡلُ ذَٰلِكَۗ فَإِنۡ أَرَادَا فِصَالًا عَن تَرَاضٖ مِّنۡهُمَا وَتَشَاوُرٖ فَلَا جُنَاحَ عَلَيۡهِمَاۗ وَإِنۡ أَرَدتُّمۡ أَن تَسۡتَرۡضِعُوٓاْ أَوۡلَٰدَكُمۡ فَلَا جُنَاحَ عَلَيۡكُمۡ إِذَا سَلَّمۡتُم مَّآ ءَاتَيۡتُم بِٱلۡمَعۡرُوفِۗ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّ ٱللَّهَ بِمَا تَعۡمَلُونَ بَصِيرٞ ٢٣٣﴾ [البقرة: ٢٣٣]
“আর মায়েরা তাদের সন্তানদেরকে পূর্ণ দু'বছর দুধ পান করাবে, (এটা) তার জন্য যে দুধ পান করাবার সময় পূর্ণ করতে চায়। আর পিতার উপর কর্তব্য, বিধি মোতাবেক মায়েদেরকে খাবার ও পোশাক প্রদান করা। সাধ্যের অতিরিক্ত কোনো ব্যক্তিকে দায়িত্ব প্রদান করা হয় না। কষ্ট দেওয়া যাবে না কোনো মাকে তার সন্তানের জন্য কিংবা কোনো বাবাকে তার সন্তানের জন্য। আর ওয়ারিশের ওপর রয়েছে অনুরূপ দায়িত্ব। অতঃপর তারা যদি পরস্পর সম্মতি ও পরামর্শের মাধ্যমে দুধ ছাড়াতে চায়, তাহলে তাদের কোনো পাপ হবে না। আর যদি তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে অন্য কারো থেকে দুধ পান করাতে চাও, তাহলেও তোমাদের ওপর কোনো পাপ নেই, যদি তোমরা বিধি মোতাবেক তাদেরকে যা দেবার তা দিয়ে দাও। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ তোমরা যা কর, সে সম্পর্কে সম্যক দ্রষ্টা। আর সন্তানের পিতার দায়িত্ব হলো মাতার খাওয়া-পরার উত্তম ব্যবস্থা করা।" [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৩৩]
পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর শব্দ 'মা'। বলা হয়ে থাকে একজন নারীর পূর্ণতা আসে মাতৃত্বে। পশ্চিমা এক মনীষী লুতোহিচি বলেন, নারীর সারা চেতন মনে মাতৃত্বের আকাঙ্ক্ষা জড়িয়ে থাকে। এ পৃথিবীর সবার স্রষ্টা মহান রাব্বুল 'আলামীন নারী-পুরুষের মিলনের মাধ্যমে পৃথিবীতে মানব বংশবিস্তারের ধারা অব্যাহত রেখেছেন।
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ٱتَّقُواْ رَبَّكُمُ ٱلَّذِي خَلَقَكُم مِّن نَّفۡسٖ وَٰحِدَةٖ وَخَلَقَ مِنۡهَا زَوۡجَهَا وَبَثَّ مِنۡهُمَا ٗا كَثِيرٗا وَنِسَآءٗۚ وَٱتَّقُواْ ٱللَّهَ ٱلَّذِي تَسَآءَلُونَ بِهِۦ وَٱلۡأَرۡحَامَۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلَيۡكُمۡ رَقِيبٗا ١﴾ [النساء: ١]
“হে মানুষ, তোমরা তোমাদের রবকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এক নফস থেকে। আর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন তার স্ত্রীকে এবং তাদের থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, যার মাধ্যমে তোমরা একে অপরের কাছে চাও। আর ভয় কর রক্ত-সম্পর্কিত আত্মীয়ের ব্যাপারে। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ওপর পর্যবেক্ষক।" [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১]
তবে বংশানুক্রম ধারা টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব আল্লাহ তা'আলা প্রধানত নারীর ওপর তার মাতৃত্বের মধ্য দিয়ে অর্পণ করেছেন। মায়ের এ অতুলনীয় ত্যাগের দিকটির কথা উল্লেখ করে মহান আল্লাহ বারবার মায়ের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন,
﴿وَوَصَّيۡنَا ٱلۡإِنسَٰنَ بِوَٰلِدَيۡهِ حَمَلَتۡهُ أُمُّهُۥ وَهۡنًا عَلَىٰ وَهۡنٖ وَفِصَٰلُهُۥ فِي عَامَيۡنِ أَنِ ٱشۡكُرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيۡكَ إِلَيَّ ٱلۡمَصِيرُ ١٤ وَإِن جَٰهَدَاكَ عَلَىٰٓ أَن تُشۡرِكَ بِي مَا لَيۡسَ لَكَ بِهِۦ عِلۡمٞ فَلَا تُطِعۡهُمَاۖ وَصَاحِبۡهُمَا فِي ٱلدُّنۡيَا مَعۡرُوفٗاۖ وَٱتَّبِعۡ سَبِيلَ مَنۡ أَنَابَ إِلَيَّۚ ثُمَّ إِلَيَّ مَرۡجِعُكُمۡ فَأُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمۡ تَعۡمَلُونَ ١٥﴾ [لقمان: ١٤، ١٥]
“আর আমরা মানুষকে তার মাতাপিতার ব্যাপারে (সদাচরণের) নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্টের পর কষ্ট ভোগ করে তাকে গর্ভে ধারণ করে। আর তার দুধ ছাড়ানো হয় দু'বছরে; সুতরাং আমার ও তোমার পিতা-মাতার শুকরিয়া আদায় কর। প্রত্যাবর্তন তো আমার কাছেই। আর যদি তারা তোমাকে আমার সাথে শির্ক করতে জোর চেষ্টা করে, যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই, তখন তাদের আনুগত্য করবে না এবং দুনিয়ায় তাদের সাথে বসবাস করবে সদ্ভাবে। আর অনুসরণ কর তার পথ, যে আমার অভিমুখী হয়। তারপর আমার কাছেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন। তখন আমি তোমাদেরকে জানিয়ে দেব, যা তোমরা করতে।" [সূরা লোকমান, আয়াত: ১৪-১৫]
নিরাপদ মাতৃত্বের অধিকার একটি মানবাধিকার। তেমনি নিরাপদ প্রসবের সব ধরনের সুযোগ পাওয়াও একজন মায়ের অধিকার। একজন নাগরিক হিসেবে তিনি সে অধিকার ভোগ করার ক্ষমতা রাখেন। স্ত্রী বা সন্তানের মা যাতে প্রয়োজনীয় পরিমাণে প্রোটিন ও ভিটামিনসমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণে যত্নবান হন, এদিকে পরিবারের প্রধান বা স্বামীর দৃষ্টি রাখা অবশ্য কর্তব্য। সন্তান পেটে এলে গর্ভবতী মাকে পুষ্টিকর এবং পরিমাণে বেশি খাবার খাওয়া প্রয়োজন। কেননা, তার খাবারে একটি নয়, দুটি প্রাণ বাঁচে। হালাল রিযিক ভক্ষণ ও তার শুকরিয়া আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন মহান আল্লাহ। এ মর্মে কুরআনে বিবৃত হয়েছে,
﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُلُواْ مِن طَيِّبَٰتِ مَا رَزَقۡنَٰكُمۡ وَٱشۡكُرُواْ لِلَّهِ إِن كُنتُمۡ إِيَّاهُ تَعۡبُدُونَ ١٧٢﴾ [البقرة: ١٧٢]
'হে মু'মিনগণ, আহার কর আমি তোমাদেরকে যে হালাল রিযিক দিয়েছি তা থেকে এবং আল্লাহর জন্য শোকর কর, যদি তোমরা তাঁরই ইবাদাত কর।" [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৭২]
স্ত্রীর ভরণ-পোষণের গুরুদায়িত্ব স্বামীকে যথাযথভাবে পালন করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে হাদীসে। গর্ভকালীন এবং শিশুকে দুধ দানকালে এ ব্যাপারে বেশি সতর্ক দৃষ্টি রাখা দরকার। স্ত্রীর অধিকারের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম। মু'আবিয়া কুশাইরী রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«أَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: فَقُلْتُ: مَا تَقُولُ: فِي نِسَائِنَا قَالَ: «أَطْعِمُوهُنَّ مِمَّا تَأْكُلُونَ، وَاكْسُوهُنَّ مِمَّا تَكْتَسُونَ، وَلَا تَضْرِبُوهُنَّ، وَلَا تُقَبِّحُوهُنَّ»
“আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের সম্মুখে এলাম। এরপর তাকে জিজ্ঞেস করলাম, আমাদের স্ত্রীদের (হক) বিষয়ে আপনি কী বলেন? তিনি বললেন, তোমরা (স্বামীরা) যা খাবে, তাদের (নারীদের) তাই খেতে দেবে। তাদের তাই পরাবে যা তোমরা পরবে। আর তাদের প্রহার করবে না এবং তাদের কটূ-কাটব্য করবে না।" (আবূ দাঊদ, হাদীস নং ২১৪৪)
গর্ভধারণের সময় স্ত্রীর শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য সবার আগে তার স্বামীর সহযোগিতা প্রয়োজন। এজন্য সন্তানসম্ভবা মায়ের প্রতি সবার দায়িত্ব রয়েছে। হাদীসে এসেছে,
«تَدَاوَوْا فَإِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ لَمْ يَضَعْ دَاءً إِلَّا وَضَعَ لَهُ دَوَاءً، غَيْرَ دَاءٍ وَاحِدٍ الْهَرَمُ»
“তোমরা চিকিৎসা করাও, কারণ আল্লাহ তা'আলা যে রোগই দিয়েছেন তার প্রতিষেধকও দিয়েছেন। শুধু একটি রোগ ব্যতীত আর তা হচ্ছে, বার্ধক্য।" [আবূ দাউদ, হাদীস নং ৩৮৫৫]
আবুদ-দারদা রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«إِنَّ اللَّهَ أَنْزَلَ الدَّاءَ وَالدَّوَاءَ، وَجَعَلَ لِكُلِّ دَاءٍ دَوَاءً فَتَدَاوَوْا وَلَا تَدَاوَوْا بِحَرَامٍ»
“নিশ্চয়ই আল্লাহ রোগ এবং দাওয়া (ওষুধ) দু'টিই পাঠিয়েছেন এবং প্রতিটি রোগেরই ওষুধ রয়েছে। সুতরাং তোমরা চিকিৎসা গ্রহণ করো। তবে হারাম বস্তু দিয়ে চিকিৎসা করো না।" (আবূ দাউদ, হাদীস নং ৩৮৭৪, [যঈফ বা হাসান লিগাইরিহী])
অন্য হাদীছে রয়েছে, জাবের রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«لِكُلِّ دَاءٍ دَوَاءٌ، فَإِذَا أُصِيبَ دَوَاءُ الدَّاءِ بَرَأَ بِإِذْنِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ»
“প্রত্যেক রোগেরই ওষুধ রয়েছে। যখন কোনো রোগের ওষুধ প্রয়োগ হয়, আল্লাহ তা'আলার অনুমতিতে তা ভালো হয়ে যায়।" (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২২০৪)
ইসলামে সন্তান প্রসবকালীন পবিত্রতা রক্ষা ও সাবধানতা অবলম্বনের ব্যাপারে দিকনির্দেশনা রয়েছে। হাদীছ ও ফিকহের কিতাবসমূহে নিফাসগ্রস্ত নারী প্রসঙ্গে বহু অধ্যায় রচিত হয়েছে। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় প্রসূতিকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হয়। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সরকারী হাসপাতাল, পর্যাপ্ত ডাক্তার, আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাব এবং চিকিৎসালয়ে পর্দা রক্ষার উপযুক্ত পরিবেশের অপ্রতুলতা এখনও প্রকট। মা ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র, স্যাটেলাইট ক্লিনিক এবং বিভিন্ন এনজিও বা সংস্থার মা ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর দশা এতটাই খারাপ যে সার্বক্ষণিক ডাক্তারের অভাব খুবই প্রকট। তারপরও মাতৃত্ব নিরাপদ করতে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে; সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে; নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত হবে; সব শ্রেণির মানুষ এ অধিকার পাবে, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।
বাংলাদেশে অশিক্ষিত পরিবারে বিশেষত গ্রামাঞ্চলে গর্ভবতী ও স্তন্যদাত্রী মায়ের প্রতি যথাযথ গুরুত্ব না দেওয়ায় একসময় অহরহ মাতৃত্বকালীন মৃত্যুর মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটত। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনের নানামুখী উদ্যোগ ও রাষ্ট্রের ইতিবাচক তৎপরতায় অবস্থার বেশ উন্নতি ঘটেছে। ১৯৮৭ সালে কেনিয়ার নাইরোবিতে উন্নয়ন সহযোগীদের বৈঠকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিরাপদ মাতৃত্ব বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। ১৯৯৭ সালে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠন বিষয়টি পর্যালোচনা এবং এ কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে। যার মূল উদ্দেশ্য হলো নিরাপদ মাতৃত্বকে নারীর অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে মা ও নবজাতকের মৃত্যুহার কমিয়ে আনা। (সূত্র: বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক সংবাদ পত্র)
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি লাখে জীবিত জন্মে ১৯৪ জন। নবজাতকের মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৩২ জন। ২০১১ সালে জাতিসংঘের ৬৬তম সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে মা ও শিশু স্বাস্থ্যে অসামান্য অবদানের জন্য ডিজিটাল হেলথ ফর ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট শীর্ষক 'সাউথ-সাউথ' পুরস্কার প্রদান করা হয়।
ইসলামে নারী ও শিশু বিশেষত মা ও মাতৃজাতির মর্যাদা রক্ষা,কার প্রতিষ্ঠা ও যত্নআত্তির ব্যাপারে ইসলামে সীমাহীন গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর দাবী ছিল গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়ের ব্যাপারে ইসলামের ধারক-বাহকরা সমাজ ও রাষ্ট্রকে সজাগ সচেতন করবেন। পরিতাপের বিষয়, এ ব্যাপারে বড় কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। এ জায়গা তাই প্রায় পুরোটাই পশ্চিমা ও তাদের দোসরদের নেতৃত্বাধীন-কর্তৃত্বাধীন এনজিও ও সংগঠনের দখলে। গ্রামাঞ্চলে দরিদ্র এলাকাগুলোয় এরা সেবার নামে তাই মিশনারি তৎপরতার মাধ্যমে হাজার হাজার মুসলিমের ঈমান হরণ করছে। দেশের পার্বত্য ও উত্তরাঞ্চলীয় এলাকাগুলোয় ইতোমধ্যে হাজার হাজার মুসলিম ও উপজাতি খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত হয়েছে।
এখনই সময় প্রসূতি মায়ের সেবা ও তাদের যত্ন বিষয়ে নিজেদের করণীয় সম্পর্কে সজাগ হওয়া। নিজেদের ভূমিকার জায়গা প্রসারিত করে ছদ্মবেশী শত্রুদের সম্পর্কে সজাতি ও মুসলিম উম্মাহকে সজাগ ও সচেতন করা। এ ক্ষেত্রে আমাদেরকে সম্ভাব্য সব উপায় কাজে লাগাতে হবে। গণমাধ্যম এবং দাওয়াতের সব উপায় ও উপকরণকে কাজে লাগাতে হবে। ইসলামী সেবা কার্যক্রম সর্বস্তরে ছড়িয়ে দিয়ে বিধর্মীদের কাছে বিপদের দিনে হাত পাতার দুঃখজনক পথ বন্ধ করে দিতে হবে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় জানি, বহু আত্মমর্যাদা বোধসম্পন্ন মুসলিমও গ্রামাঞ্চলে উপায়হীন হয়ে সন্তানসম্ভাবা স্ত্রী বা বোনকে নিয়ে তাদের দ্বারস্থ হচ্ছেন। কারণ প্রত্যন্ত এলাকায় এসব এনজিওদের স্বাস্থসেবাই অনেক স্থানে একমাত্র উপায়। আল্লাহ আমাদের বোঝার এবং কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের তাওফীক দান করুন। মুসলিম জাতিকে বিজাতির সামনে মুখাপেক্ষী হওয়া থেকে রক্ষা করুন। আমীন।
সমাপ্ত