حقوق الحاكم وواجباته

أعرض المحتوى باللغة الأصلية anchor

translation লেখক : ইলমী গবেষণা ও ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটি
1

মুসলিম শাসকের প্রতি জনগণের দায়িত্ব ও কর্তব্য

4.3 MB DOC
2

মুসলিম শাসকের প্রতি জনগণের দায়িত্ব ও কর্তব্য

538.1 KB PDF

فتوى مترجمة إلى اللغة البنغالية عبارة عن سؤال أجابت عن اللجنة الدائمة للبحوث العلمية والإفتاء ونصه : " ما هى حقوق الحاكم وواجباته ؟".

মুসলিম শাসকের প্রতি জনগণের

দায়িত্ব ও কর্তব্য

[ বাংলা – Bengali – بنغالي ]

সৌদী আরবের

একাডেমিক গবেষণা ও ফাতওয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটি

অনুবাদ : আব্দুল্লাহ আল মামুন আল-আযহারী

সম্পাদনা : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া

2015 - 1436

﴿حقوق الحاكم وواجباته﴾

« باللغة البنغالية »

اللجنة الدائمة للبحوث العلمية والإفتاء

ترجمة: عبد الله المأمون الأزهري

مراجعة: د/ محمد منظور إلهـي

2015 - 1436

আল-হামদুলিল্লাহ্ ওয়াস্ সালাতু ওয়াস্ সালামু 'আলা রাসূলিল্লাহ। শরি'আত সম্মতভাবে নির্বাচিত ও বৈধ শাসকের প্রতি ভালকাজে সুখে দুঃখে, বিপদ ও কঠিন সময়ে, ইচ্ছায় অনিচ্ছায় এককথায় সর্বদা জনগণের আনুগত্য ও সহযোগিতা করা দায়িত্ব ও কর্তব্য। তাকে সদুপদেশ দেয়া, সর্বদা তার পাশে থাকা ও কল্যাণকর কাজে সহযোগিতা করা সবার উচিত। এমনকি অন্য কাউকে যদি তার উপর প্রাধান্য দেয়া হয় তবুও সর্বাবস্থায় আমীরের নির্দেশ শোনা এবং তার আনুগত্য করা মুসলিমের জন্য বাধ্যতামূলক। সহীহাইনে বর্ণিত আছে,

عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّهُ قَالَ: «عَلَى الْمَرْءِ الْمُسْلِمِ السَّمْعُ وَالطَّاعَةُ فِيمَا أَحَبَّ وَكَرِهَ، إِلَّا أَنْ يُؤْمَرَ بِمَعْصِيَةٍ، فَإِنْ أُمِرَ بِمَعْصِيَةٍ، فَلَا سَمْعَ وَلَا طَاعَةَ»

ইবনু উমার রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “মুসলিম ব্যক্তির উপর অপরিহার্য কর্তব্য হল আমীরের (শাসকের) কথা শোনা এবং আনুগত্য করা- চাই তা তার মনঃপূত হোক বা না হোক। তবে যদি গুনাহের কাজের নির্দেশ দেয়া হয় (তাহলে স্বতন্ত্র কথা)। যদি গুনাহের কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয় তাহলে তা শোনাও যাবে না, আনুগত্যও করা যাবে না"[1]

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اسْمَعُوا وَأَطِيعُوا، وَإِنِ اسْتُعْمِلَ عَلَيْكُمْ عَبْدٌ حَبَشِيٌّ، كَأَنَّ رَأْسَهُ زَبِيبَةٌ»

আনাস ইবনু মালিক রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যদি তোমাদের উপর এমন কোন হাবশী দাসকেও শাসক নিযুক্ত করা হয়, যার মাথাটি কিশমিশের ন্যায়, তবুও তার কথা শোন ও তার আনুগত্য কর"[2]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «عَلَيْكَ السَّمْعَ وَالطَّاعَةَ فِي عُسْرِكَ وَيُسْرِكَ، وَمَنْشَطِكَ وَمَكْرَهِكَ، وَأَثَرَةٍ عَلَيْكَ»

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “দুঃখে-সুখে, খুশী-অখুশীতে এবং তোমার ওপর অন্য কাউকে প্রাধান্য দিয়েও যদি আমীর নিযুক্ত হয়, তবুও সর্বাবস্থায় আমীরের নির্দেশ শোনা এবং তার আনুগত্য করা তোমার জন্য বাধ্যতামূলক"[3]

এখানে হাদীসে وأثرة عليك শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, এর অর্থ যদি ও অন্য কাউকে তোমার ওপরে প্রাধান্য দেয়া হয় তবুও সর্বাবস্থায় আমীরের নির্দেশ শোনা এবং তার আনুগত্য করা তোমার জন্য বাধ্যতামূলক।

শাসক বা আমীরকে উপদেশ দিতে হবে। মানুষ হিসেবে সে বিপথগামী হতেই পারে। তাই সর্বাবস্থায় তাকে সংশোধন করতে হবে এবং কল্যাণকর ও উপকারী কাজের উপদেশ ও সহযোগিতা করতে হবে। হাদীসে এসেছে,

عَنْ تَمِيمٍ الدَّارِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «الدِّينُ النَّصِيحَةُ» قُلْنَا: لِمَنْ؟ قَالَ: «لِلَّهِ وَلِكِتَابِهِ وَلِرَسُولِهِ وَلِأَئِمَّةِ الْمُسْلِمِينَ وَعَامَّتِهِمْ»

তামীম আদ-দারী রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “কল্যাণ কামনাই দীন। আমরা বললাম, কার জন্য কল্যাণ কামনা? তিনি বললেন, আল্লাহর, তাঁর কিতাবের, তাঁর রাসূলের, মুসলিম শাসক এবং মুসলিম জনগণের জন্য কল্যাণ কামনা"[4]

عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الْوَلِيدِ بْنِ عُبَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ: «بَايَعْنَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى السَّمْعِ وَالطَّاعَةِ فِي الْعُسْرِ وَالْيُسْرِ، وَالْمَنْشَطِ وَالْمَكْرَهِ، وَعَلَى أَثَرَةٍ عَلَيْنَا، وَعَلَى أَنْ لَا نُنَازِعَ الْأَمْرَ أَهْلَهُ، وَعَلَى أَنْ نَقُولَ بِالْحَقِّ أَيْنَمَا كُنَّا، لَا نَخَافُ فِي اللهِ لَوْمَةَ لَائِمٍ»

'উবাদা ইবনুল ওয়ালিদ ইবনু 'উবাদা তার দাদা 'উবাদা রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, “আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে সুখে-দুঃখে, সন্তোষে-অসন্তোষে, এমনকি আমাদের ওপর অন্যকে প্রাধান্য দেয়া হলেও ( নেতার কথা) শ্রবণ করা এবং তাঁর আনুগত্য করার শপথ করেছি। আমরা আরো শপথ করেছি যে, (নেতার পক্ষ্য থেকে) কোন যোগ্য ব্যক্তিকে দায়িত্ব অর্পণ করা হলে আমরা তাতে আপত্তি করব না বা বাধা দেব না এবং আমরা যেখানেই থাকি না কেন সর্বাবস্থায় হক কথা বলব, আল্লাহর (নির্দেশ মানার) ব্যাপারে কোন নিন্দুকের নিন্দার পরোয়া করব না"[5]

عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ: «إِنَّ خَلِيلِي أَوْصَانِي أَنْ أَسْمَعَ وَأُطِيعَ، وَإِنْ كَانَ عَبْدًا مُجَدَّعَ الْأَطْرَافِ»

আবু যার রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “আমার বন্ধু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে উপদেশ দিয়েছেন, আমি যেন আমীরের আদেশ শ্রবণ করি এবং তার আনুগত্য করি- সে পঙ্গু গোলাম হলেও"[6]

যতক্ষণ পর্যন্ত শাসক কিতাব ও সুন্নাহ মোতাবেক শাসন পরিচালনা করবে ততক্ষণ কোনভাবেই তার বিরুদ্ধাচরণ করা যাবেনা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

عَنْ يَحْيَى بْنِ حُصَيْنٍ، قَالَ: سَمِعْتُ جَدَّتِي، تُحَدِّثُ، أَنَّهَا سَمِعَتِ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ، وَهُوَ يَقُولُ: «وَلَوِ اسْتُعْمِلَ عَلَيْكُمْ عَبْدٌ يَقُودُكُمْ بِكِتَابِ اللهِ، فَاسْمَعُوا لَهُ وَأَطِيعُوا»

ইয়াহ্ইয়া ইবন হুসাইন থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার দাদীকে বলতে শুনেছি, তিনি বিদায় হজ্জের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভাষণ দিতে গিয়ে বলতে শুনেছেন, “যদি তোমাদের ওপর কোন দাসও শাসক নিযুক্ত হয় এবং সে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী তোমাদের পরিচালিত করে তবে তার নির্দেশ শোনো এবং আনুগত্য কর"[7]

عَنْ يَحْيَى بْنِ حُصَيْنٍ، عَنْ جَدَّتِهِ أُمِّ الْحُصَيْنِ، قَالَ: سَمِعْتُهَا تَقُولُ: حَجَجْتُ مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ، قَالَتْ: فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَوْلًا كَثِيرًا: ثُمَّ سَمِعْتُهُ، يَقُولُ: " إِنْ أُمِّرَ عَلَيْكُمْ عَبْدٌ مُجَدَّعٌ - حَسِبْتُهَا قَالَتْ: أَسْوَدُ - يَقُودُكُمْ بِكِتَابِ اللهِ، فَاسْمَعُوا لَهُ وَأَطِيعُوا "

ইয়াহ্ইয়া ইবন হুসাইন থেকে তাঁর দাদী উম্মুল হুসাইন রাদিয়াল্লাহু 'আনহার সূত্রে বর্ণিত, ইয়াহ্ইয়া বলেন, তাঁকে আমি বলেতে শুনেছি, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে বিদায় হজ্জ পালন করি। উম্মুল হুসাইন আরো বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (তাঁর ভাষণে) অনেক কথাই বলেছেন, অতঃপর আমি তাকে (একথাও) বলতে শুনেছি, যদি কোন নাক-কান কৃষ্ণকায় গোলামও তোমাদের ওপর শাসক নিযুক্ত হয় এবং সে তোমাদের আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী পরিচালনা করে, তবে তোমরা তার নির্দেশ শোন এবং তার আনুগত্য কর"।[8]

তবে শাসক অন্যায় আদেশ দিলে তা মান্য করা যাবেনা বরং তা অমান্য করা ওয়াজিব এবং তাকে সতর্ক করতে হবে। কেননা অনুগত্য করতে হবে শুধু ভালকাজে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

عَنْ عَلِيٍّ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعَثَ جَيْشًا، وَأَمَّرَ عَلَيْهِمْ رَجُلًا، فَأَوْقَدَ نَارًا، وَقَالَ: ادْخُلُوهَا، فَأَرَادَ نَاسٌ أَنْ يَدْخُلُوهَا، وَقَالَ الْآخَرُونَ: إِنَّا قَدْ فَرَرْنَا مِنْهَا، فَذُكِرَ ذَلِكَ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ لِلَّذِينَ أَرَادُوا أَنْ يَدْخُلُوهَا: «لَوْ دَخَلْتُمُوهَا لَمْ تَزَالُوا فِيهَا إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ»، وَقَالَ لِلْآخَرِينَ قَوْلًا حَسَنًا، وَقَالَ: «لَا طَاعَةَ فِي مَعْصِيَةِ اللهِ، إِنَّمَا الطَّاعَةُ فِي الْمَعْرُوفِ»

আলী রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি সেনাদল যুদ্ধাভিযানে প্রেরণ করলেন। এক ব্যক্তিকে তাদের সেনাপতি নিযুক্ত করলেন। তিনি (সেনাপতি) আগুন জ্বালিয়ে লোকদেরকে বললেন, আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়। কিছু সংখ্যক লোক তাতে ঝাঁপিয়ে পড়তে মনস্থ করেছিল। আর কিছু লোক বলল, আমরা আগুন থেকে বাঁচার জন্যই পালিয়ে এসেছি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এ ব্যাপারটি উল্লেখ করা হল। যারা তাতে ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রস্তুত হয়েছিল তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বললেন, যদি তোমরা তাতে প্রবেশ করতে, তাহলে কিয়ামত পর্যন্ত তাতেই পড়ে থাকতে। আর অপর লোকদের সম্পর্কে তিনি উত্তম কথাই বললেন। তিনি আরো বললেন, আল্লাহর নাফরমানীমূলক কাজে আনুগত্য করা জায়েয নেই। প্রকৃতপক্ষে আনুগত্য কেবল ন্যায় এবং সৎ কাজেই"[9]

অন্যদিকে জনগণের প্রতি শাসকের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো তাদেরকে আল্লাহর বিধানানুযায়ী পরিচালনা করবে, তাদের মধ্যে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করবে, তাদের অধিকার নিশ্চিত করবে এবং সর্বদা জনগণের জন্য কল্যাণকর ও জনহিতৈষী কাজ করবে, তাদেরকে সুপথে পরিচালনা করতে সদুপদেশ দিবে। এ ব্যাপারে হাদীসে এসেছে,

عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: «أَلَا كُلُّكُمْ رَاعٍ، وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، فَالْأَمِيرُ الَّذِي عَلَى النَّاسِ رَاعٍ، وَهُوَ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، وَالرَّجُلُ رَاعٍ عَلَى أَهْلِ بَيْتِهِ، وَهُوَ مَسْئُولٌ عَنْهُمْ، وَالْمَرْأَةُ رَاعِيَةٌ عَلَى بَيْتِ بَعْلِهَا وَوَلَدِهِ، وَهِيَ مَسْئُولَةٌ عَنْهُمْ، وَالْعَبْدُ رَاعٍ عَلَى مَالِ سَيِّدِهِ وَهُوَ مَسْئُولٌ عَنْهُ، أَلَا فَكُلُّكُمْ رَاعٍ، وَكُلُّكُمْ مَسْئُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ»

ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল (প্রশাসক) এবং তোমাদের প্রত্যেককেই নিজের দায়িত্ব (প্রশাসন) সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত করা হবে। অতএব, ইমাম বা সরকার জনগণের দায়িত্বশীল (শাসক বা নেতা), সে তার শাসিত অধীনস্তদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। স্ত্রী তার স্বামীর সংসার ও তার সন্তানের দায়িত্বশীল (রক্ষণাবেক্ষণকারিণী)। সে তাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। খাদেম বা দাস তার মালিকের অর্থ-সম্পদের দায়িত্বশীল (পাহারাদার), সুতরাং সে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। সাবধান! তোমরাই সবাই দায়িত্বশীল (প্রশাসক) এবং তোমাদের প্রত্যেককেই নিজ নিজ দায়িত্ব (প্রশাসন ও দায়িত্ব-কর্তব্য) সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে"[10]

জনগণের নির্বাচিত বৈধ শাসকের বিরুদ্ধে বের হওয়া, তার বিরোধিতা করা, তাকে সহযোগিতা না করা ইত্যাদি হারাম, যদিও সে ফাসেক হয়; যতক্ষণ স্পষ্ট কুফরী না করে। তবে স্পষ্ট কুফরী করলে তার অনুগত্য করা যাবেনা। এ ব্যাপারে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

عَنْ نَافِعٍ، قَالَ: جَاءَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ إِلَى عَبْدِ اللهِ بْنِ مُطِيعٍ حِينَ كَانَ مِنْ أَمْرِ الْحَرَّةِ مَا كَانَ، زَمَنَ يَزِيدَ بْنِ مُعَاوِيَةَ، فَقَالَ: اطْرَحُوا لِأَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ وِسَادَةً، فَقَالَ: إِنِّي لَمْ آتِكَ لِأَجْلِسَ، أَتَيْتُكَ لِأُحَدِّثَكَ حَدِيثًا سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُهُ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنْ خَلَعَ يَدًا مِنْ طَاعَةٍ، لَقِيَ اللهَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ لَا حُجَّةَ لَهُ، وَمَنْ مَاتَ وَلَيْسَ فِي عُنُقِهِ بَيْعَةٌ، مَاتَ مِيتَةً جَاهِلِيَّةً»

নাফে থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইয়াযীদ ইবন মু'আবিয়ার রাজত্বকালে যখন (মদীনার) হার্রার দুর্ঘটনা ঘটলো সে সময় আবদুল্লাহ উবন উমার রাদিয়াল্লাহু 'আনহু আবদুল্লাহ ইবন মুতী রাদিয়াল্লাহু 'আনহুর নিকট গেলেন। ইবন মুতী ( লোকদের) বললেন, আবু আব্দুর রাহমানের জন্য একটি বালিশ নিয়ে আস। ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু 'আনহু বলেন, আমি আপনার কাছে বসার জন্য আসিনি। বরং একটি হাদীস বর্ণনা করার উদ্দেশ্যেই এসেছি, যা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, “যে ব্যক্তি ইমামের আনুগত্য থেকে দূরে সরে দাঁড়ায় (আনুগত্য তুলে নেয়), কিয়ামতের দিন সে আল্লাহর সাথে এমন অবস্থায় সাক্ষাত করবে যে, তার কাছে কোন সংগত প্রমাণ থাকবে না। আর যে ব্যক্তি এমন অবস্থায় মারা যায় যে, তার ঘাড়ে আনুগত্যের বাই'আত নেই সে জাহেলী মৃত্যুবরণ করল"[11]

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «مَنْ كَرِهَ مِنْ أَمِيرِهِ شَيْئًا، فَلْيَصْبِرْ عَلَيْهِ، فَإِنَّهُ لَيْسَ أَحَدٌ مِنَ النَّاسِ خَرَجَ مِنَ السُّلْطَانِ شِبْرًا، فَمَاتَ عَلَيْهِ، إِلَّا مَاتَ مِيتَةً جَاهِلِيَّةً»

ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “কোন ব্যক্তি তার আমীরের কোন কাজ অপছন্দ করলে সে যেন ধৈর্য্য ধারণ করে। কেননা যে ব্যক্তি সরকারে আনুগত্য থেকে এক বিঘত পরিমাণও দূরে সরে যায় এবং এই অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে সে যেন জাহেলী মৃত্যুবরণ করল"[12]

(লেখার সূত্র: সৌদী আরবের একাডেমিক গবেষণা ও ফাতওয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটি। ফাতওয়া নং ১৭৬২৭ ও লেখক কর্তৃক সংকলিত। ফাতওয়া কমিটির সদস্য: সালিহ ইবনু ফাওযান, আবু যায়েদ বকর ইবনু আব্দুল্লাহ, আব্দুল আযিয ইবনু আব্দুল্লাহ ইবন মুহাম্মদ আলে আশ-শাইখ। প্রধান, আব্দুল আযিয ইবনু আব্দুল্লাহ ইবন বায।)

[1] বুখারী, হাদীস নং ২৯৫৫, মুসলিম, হাদীস নং ১৮৩৯।

[2] বুখারী, হাদীস নং ৭১৪২

[3] মুসলিম, হাদীস নং ১৮৩৬।

[4] মুসলিম, হাদীস নং ৫৫।

[5] মুসলিম, হাদীস নং ১৭০৯।

[6] মুসলিম, হাদীস নং ১৮৩৭।

[7] মুসলিম, হাদীস নং ১৮৩৮।

[8] মুসলিম, হাদীস নং ১৮৩৮।

[9] মুসলিম, হাদীস নং ১৮৪০।

[10] বুখারী, হাদীস নং ৮৯৩, মুসলিম, হাদীস নং ১৮২৯।

[11] মুসলিম, হাদীস নং ১৮৫১।

[12] বুখারী, হাদীস নং ৭০৫৩, মুসলিম, হাদীস নং ১৮৪৯।