لماذا نحتاج إلى إقامة المكتبة الجوالة؟
أعرض المحتوى باللغة الأصلية
لماذا نحتاج إلى إقامة المكتبة الجوالة؟: أهمية تأسيس المكتبة الجوالة، كثيرًا ما نحتاج إليها الآن لنشر الخير ودفع الشر لا سيَّما في الساحة البنغلاديشية في أنحاء البلاد حتى يسهل طلب العلم الشرعي من خلال مطالعة الكتب المتنوعة في الموضوع.
ভ্রাম্যমাণ পাঠাগার: প্রয়োজন ও পরিকল্পনা
[ বাংলা – Bengali – بنغالي ]
আলী হাসান তৈয়ব
সম্পাদনা : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
2012 - 1433
﴿ لماذا نحتاج إلى إقامة المكتبة الجوالة؟ ﴾
« باللغة البنغالية »
علي حسن طيب
مراجعة: د/ أبو بكر محمد زكريا
2012 - 1433
ভ্রাম্যমাণ পাঠাগার : প্রয়োজন ও পরিকল্পনা
ভ্রাম্যমাণ পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করা দরকার কেন ?
শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতি সভ্য ও উন্নত হতে পারে না। ভোগ করতে পারে না তাদের স্বাধীনতার সুফল। স্বাধীনতা অর্জনের ৪০ বছর পর এসে দেশে শিক্ষিতের হার বেড়েছে উৎসাহ ব্যঞ্জকভাবে। মানুষের জীবনযাত্রার মানও হতাশাব্যঞ্জক নয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উৎকর্ষের এ যুগে আমরাও এগিয়ে যাচ্ছি নানা ঘাত-অভিঘাত সত্ত্বেও। দেশের আনাচ-কানাচ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে শিক্ষার আলো। প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত খালি নেই প্রাথমিক বিদ্যালয় বা প্রাইমারি স্কুল থেকে। প্রতিটি শহরে গড়ে উঠেছে কলেজ-মহাবিদ্যালয়। দ্রুত বেড়ে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাও। সরকারের প্রশংসনীয় উদ্যোগ ও শিক্ষিত শ্রেণির আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে ধনী-গরিব-ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে সবাই যাচ্ছে পাঠশালায়। এমনকি শিক্ষার সৌভাগ্য বঞ্চিত গত প্রজন্মের প্রবীণরাও বিদ্যালয়ে যাচ্ছেন পরবর্তী প্রজন্মের হাত ধরে।
তবে এসব সত্ত্বেও যে সত্যটি অস্বীকার করবার মত নয় তা হলো, আদর্শ চরিত্রবান দেশ প্রেমিক নাগরিক তৈরি করতে না পারলে আমাদের স্বাধীনতা অর্থবহ ও ফলপ্রসূ হবে না। সম্ভব হবে না দেশের প্রতিটি নাগরিকের মুখে হাসি ফোটানো। আগে মনে করা হত, সামাজিক অপরাধের সঙ্গে শুধু অশিক্ষিত ও গরিদ্র জনগোষ্ঠীই জড়িত; কিন্তু বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে র্যাব কর্তৃক পরিচালিত মাদক ও নৈতিকতাবিরোধী অভিযান সে ধারণার মূলে কুঠারাঘাত করেছে। দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা যেসব অসামাজিক ও নৈতিকতাহীন কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে তা দেখে দেশবাসী যুগপৎ বিস্মিত ও হতাশ হয়েছে। তখন একযোগে সকল মিডিয়ায় লেখালেখি হয়েছে, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈতিক শিক্ষার অনুপস্থিতি এবং ধর্মীয় চেতনা হ্রাস পাওয়ার কারণেই এ চারিত্রিক ধস।
আজ দেশের এ ক্লান্তিকালে সবাই অনুধাবন করছেন যে, শিক্ষিত ও চরিত্রবান নাগরিক তৈরির কোনো বিকল্প নেই। মানুষকে সুশিক্ষিত ও চরিত্রবান হিসেবে গড়ে তুলবার জন্য দরকার তাদের মাঝে শিক্ষার আলো এবং পরকালে জবাবদিহিতার ভয় ঢুকিয়ে দেয়া। এ জন্য ইসলাম শুরুতেই মানুষকে শিক্ষিত ও আলোকিত হবার নির্দেশ দিয়েছে। আসমানী প্রত্যাদেশের প্রথম শব্দই ছিল, ‘পড়’। আর ইসলামের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও দ্ব্যর্থহীনভাবে শিক্ষার গুরুত্ব ঘোষণা করেছেন। বদর যুদ্ধে শত্রু পক্ষের যারা আটক হয়েছিল, তাদের মধ্যে পণমূল্য না থাকায় যারা মুক্তি পাচ্ছিল না তাদের জন্য তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিরক্ষরকে শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে মুক্তি লাভের সুযোগ দেন। এ থেকে তাঁর শিক্ষার প্রতি অনুরাগ অনুমিত হয়।
দেশে শান্তি কায়েম করতে এবং নাগরিকের দুনিয়া ও আখিরাতের এ লক্ষ্য অর্জনের নিমিত্তেও চাই সবার কাছে জ্ঞানের আলো পৌঁছে দেয়া। কিন্তু স্যাটেলাইট চ্যানেলের আধিপত্যের যুগে মানুষ যেখানে ঘরে বসে চটুল বিনোদনের আস্বাদ পাচ্ছে সারাক্ষণ, সেখানে তাদের বই কিনে পড়ার মত কসরত করার ধৈর্য না থাকাই স্বাভাবিক। এ জন্য দরকার জ্ঞানের সুবাসও তাদের ঘরে ঘরে প্রত্যেকের হাতে হাতে পৌঁছে দেয়া। এ বিবেচনা থেকেই ভ্রাম্যমাণ পাঠাগার ধারণার জন্ম। যেভাবে টিভি চ্যালেনের সংখ্যা বাড়ছে সেভাবে বাড়ছে না মানুষকে জ্ঞানের নেশার সন্ধান দেবার জন্য এসব মোবাইল লাইব্রেরির সংখ্যা।
যেভাবে এর কার্যক্রম পরিচালিত হতে পারে
পাঠকদের অনেকে হয়তো বলবেন এ পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করবে কে? এটা কার দায়িত্ব সরকার না জনগণের? আসলে সে প্রশ্ন না করে আমরাই এ কাজ শুরু করতে পারি। দরকার শুধু কয়েকজন উদ্যমী ও কর্মনিষ্ঠ মানুষের। সেটা কিভাবে হতে পারে তারই একটা সংক্ষিপ্ত ধারণা দেয়া যাক।
নির্দিষ্ট দিনে সপ্তাহে একবার নির্দিষ্ট স্থানে ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির গাড়ি গিয়ে দাঁড়াবে। ভেতরে দু’জন লোক থাকবেন। একজন নতুন করে সদস্য করবেন এবং অন্যজন পুরনো সদস্যদের বই জমা নেবেন। কাঙ্ক্ষিত বই তাদের তুলে দেবেন তাদের হাতে। খাতায় সব কিছু উল্লেখ থাকবে।
এককালীন ৫০/১০০ টাকা দিয়ে সদস্য হবে। আর জামানত হিসেবে ফেরতযোগ্য ১৫০ টাকা নেয়া হবে। বছর শেষে সাড়ম্বর অনুষ্ঠান করে পাঠকদের মধ্যে সেরা নির্বাচিতদের পুরস্কৃত করা হবে। সদস্যরা তাদের প্রয়োজনীয় বই পাঠাগারে না পেলে বইয়ের নাম ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের নাম লিখে দিয়ে যাবেন, পরের সপ্তায় সে বই তাকে এনে দেয়া হবে। এছাড়া অফিসে একটি লাইব্রেরি থাকবে সেখান থেকেও সদস্য হয়ে যে কেউ বই সংগ্রহ করতে পারবেন।
একটি পাঠাগার স্থাপনের জন্য প্রাথমিকভাবে যা যা দরকার
ক. একটি গাড়ি।
খ. একজন চালক।
গ. গাড়িতে কমপক্ষে দু’জন সার্বক্ষণিক গ্রন্থাগারিক।
ঘ. স্থির পাঠাগার।
ঙ. পাঠাগারের পরিচালক।
চ. দু’জন কর্মচারী।
ছ. উভয় পাঠাগারের জন্য প্রয়োজনীয় গ্রন্থ-ভাণ্ডার।
জ. ব্যাপক প্রচারণা ও পাবলিসিটি।
ঝ. প্রয়োজনীয় অর্থ।
আমরা যারা ইসলাম নিয়ে ভাবি, মানুষের কল্যাণ ও দেশের সমৃদ্ধি চিন্তায় জীবনের নানা ঝামেলা ও কর্মব্যস্ততার মধ্যে খানিক সময় বের করি তাদের উচিৎ যুগ চাহিদার প্রেক্ষাপটে ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসা। মন্দ যেখানে হাত বাড়াতেই পাওয়া যায় ভালোটাকেও সেভাবে সবার হাতের নাগালে পৌঁছে দেয়া। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দিন। আমীন।