هذه ليست بمحبة بل مصيبة!

أعرض المحتوى باللغة الأصلية anchor

translation লেখক : আলী হাসান তৈয়ব
1

এ যে ভালোবাসা নয়; বিপদ ডেকে আনা!

1.8 MB DOC
2

এ যে ভালোবাসা নয়; বিপদ ডেকে আনা!

166.4 KB PDF

هذه ليست بمحبة بل مصيبة!: ثمَّة فرقٌ بين الحب في الله والحب المحرَّم الذي يدعو إليه الشيطان، ولا بد أن يكون الحب مُعينًا على امتثال أوامر الله واجتناب نواهيه، ومُقرِّبًا إليه. تدور هذه المقالة حول هذا الموضوع.

    বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

    এ যে ভালোবাসা নয়; বিপদ ডেকে আনা!

    [বাংলা - bengali - البنغالية]

    লেখক : আলী হাসান তৈয়ব

    সম্পাদনা : ড. মোঃ আবদুল কাদের

    2011- 1432

    ﴿ هذه ليست بمحبة بل مصيبة! ﴾

    « باللغة البنغالية »

    علي حسن طيب

    مراجعة: د. محمد عبد القادر

    2011 - 1432

    এ যে ভালোবাসা নয়; বিপদ ডেকে আনা!

    আলী হাসান তৈয়ব

    (ক)

    সদ্য কৈশোর পেরুনো রাসনা খান বরাবর ভদ্র ও শান্ত স্বভাবের মেয়ে। রোযা রাখার বয়সে পৌঁছার আগ থেকেই সে রোযা রাখতে চাইতো। সাহরির সময় জাগিয়ে দেবার জন্য মা-বাবাকে বারবার বলে রাখতো। কিন্তু বাবা-মা তাকে ডাকতেন না মেয়ের জন্য এতক্ষণ উপোস থাকা কষ্টকর বিবেচনা করে। রাসনা এখন ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্রী। ছোটবেলার সেই অনভ্যাসের জের হিসেবে আজও তার পক্ষে রোযা রাখা সম্ভব হয় না।

    (খ)

    আতিক সাহেবের (ছদ্মনাম) অনেকগুলো ছেলে-মেয়ে। ওরা সবাই এখন পরিণত বয়সী। ছেলেরা ব্যবসা-বাণিজ্য করে বেশ অর্থ-কড়ির মালিকও হয়েছে। পিতার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা আর শ্রদ্ধায় শারীরিক অসুস্থতার জন্য তারা তাকে অখণ্ড অবসরে রেখেছে। অফুরান অবকাশে বাবার সময় কাটাবার জন্য তাঁর ঘরে একটি রঙ্গিন টিভিও সেট করে দিয়েছে। অসুস্থ শরীর নিয়ে তিনি দু'এক ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে গিয়ে পড়লে পড়েন নয়তো তা কাযাই হয়ে যায়। বাকি সময়গুলো বলতে গেলে তার টিভি সেটের সামনে দিয়েই বয়ে যায়।

    (গ)

    একহারা গড়নের ফুটফুটে শিশু মীমকে তার মা-বাবা বালিকা মাদরাসায় পড়তে দিয়েছিল তাদের আত্মীয় পরিবারের কয়েকটি মেয়েকে মাদরাসা থেকে আদর্শ সন্তান হিসেবে গড়ে উঠতে দেখে। মীম পড়া-শোনায় বেশ ভালো। আদব-শিষ্টাচারেও মন্দ না। মাদরাসার দেয়ালঘেরা নিরাপদ ও পুণ্যময় পরিবেশে সে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে অস্বাভাবিক স্বাভাবিকতায়।

    ছয়/সাত মাসের মাদরাসা জীবনে সে অনেক বদলে গেছে। চলাফেরায় যেমন শিষ্টতা মুখাবয়বেও তেমন কমনীয়তা বেড়েছে। আট বছরের ফুটফুটে মীম হয়েছে তাই মাদরাসা ও পরিবারে সবার প্রিয়। সন্তানের কচি জীবনে পরিবর্তনের রেখা ফুটে উঠলেও তার বাবা-মার জীবন-যাপন পদ্ধতিতে রূপান্তর বা পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগেনি এতোটুকু। আগের মতো আজো তারা বেনামাযী এবং নাটক-সিনেমার অন্ধ অনুরাগী।

    কী এক অপরাধে এক তরুণ শিক্ষক বাচ্চাটিকে একটু বেশিই প্রহার করে বসে। শিক্ষকের এই অপরাধে (?) ক্ষিপ্ত হয়ে মীমের বাবা-মা মাদরাসা পরিচালককে অনেক কটু-কাটব্য শুনিয়ে যায়। থানা-মামলার হুমকি পর্যন্ত দেয়। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ দুঃখ প্রকাশ করে জানায়, এখানে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আইন করা আছে, কোনো বাচ্চাকে প্রহার করা যাবে না। তাদেরকে আদরে-কৌশলে শিক্ষা দিতে হবে। তদুপরি লঘু পাপে গুরু দণ্ড দেয়ার অপরাধে শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্তও করা হয়েছে।

    মীমের বাবা-মা’র ক্ষোভ এতেও প্রশমিত হয় না। মীমকে মাদরাসা থেকে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করিয়ে দেয় শিক্ষা ও সভ্যতার আলো বঞ্চিত তাদের গ্রামের এক ব্রাক স্কুলে। (মীমের খালার ভাষ্য, মাদরাসার অনভিপ্রেত ঘটনা উপলক্ষ মাত্র। প্রকৃত ব্যাপার হলো, মীমকে ব্রাক স্কুলে দেয়ায় সন্তানের শিক্ষাসহ আছে তাদের বাড়তি অনেক পাওনা।)

    আমাদের সমাজের এ তিনটি খণ্ডচিত্রে দেখতে পাচ্ছি, সন্তানের প্রতি ভালোবাসা দেখাতে গিয়ে রাসনাকে তার বাবা-মা ফরজ রোযা পালন করতে দিচ্ছেন না। রাসনার বয়স তেরো পেরিয়েছে অথচ দশ বছর বয়স থেকেই রোযা করা উচিত। রাসনার রোযা করার অভ্যাস গড়ে ওঠেনি বলে আজ কলেজে পা রেখেও ফরজ রোযা করতে পারছে না। অশীতিপর আতিক সাহেবের বয়স এখন শুধু ইবাদত-বন্দেগী করে কাটিয়ে দেবার। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, তার ছেলেরা পিতার প্রতি ভালোবাসা দেখাতে গিয়ে তাকে সুযোগ করে দিয়েছে নাজায়েয টিভি প্রোগ্রামে দিবা-রাত্রি মেতে থাকার! মীমের বাবা-মা সন্তানের ভালোবাসার পারাকাষ্ঠা দেখাতে গিয়ে বেহেশতের কুসুমিত পথ মাদরাসার অনাবিল পরিবেশ থেকে নিয়ে নাচ-গান শিখিয়ে, দু’চারটি টাকা বিলিয়ে ইসলাম ও দেশের সংস্কৃতির বিরুদ্ধে অবিরাম কাজ করে যাওয়া ব্রাক স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছেন।

    হ্যাঁ, এভাবে আমরা অনেক কাজই করি প্রিয়জনের জন্য ভালো মনে করে। রাসনাকে তার পিতামাতা সিয়াম সাধনায় নামতে দেননি, মীমকে তার বাবা-মা মাদরাসা থেকে সরিয়ে এনে ব্রাক স্কুলে দিয়েছেন এবং আতিক সাহেবের ছেলেরা বাবার জন্য রঙ্গিন টিভির ব্যবস্থা করেছে— সন্দেহ নেই সবই করা হয়েছে তাদের সুখের জন্য। কারণ বলাবাহুল্য, পিতা-মাতার কাছে সন্তানের কিংবা সন্তানের কাছে পিতা-মাতার অকল্যাণ কখনো কাম্য হতে পারে না।

    কিন্তু একটু চিন্তা করে দেখা দরকার এসব কি সত্যি তাদের জন্য কল্যাণকর? ফরজ রোযা ত্যাগ করার শাস্তি তো ভয়াবহ। জান্নাতের পথ থেকে সরিয়ে জাহান্নামের পথে নেয়া কি মীমের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে? আতিক সাহেব জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসে টিভি নিয়ে মশগুল। তাঁর ছেলেরা একবারও ভেবে দেখেছেন কি টিভি দেখা অবস্থায় যদি তাদের বাবার মৃত্যু এসে যায় তবে কবরে তাঁর অবস্থা কী হবে?

    ভালোবাসার নামে আমরা এসব কী করছি? কোথায় নিয়ে যাচ্ছি প্রিয়জনদের? এ ভালোবাসার কী পরিণাম অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য? চিন্তা করে দেখেছি কি ভালোবাসতে গিয়ে আমরা নিজ হাতে অবচেতনমনে প্রিয়জনকে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করছি!!

    সমাজে অনেক বাবা-মা'ই এমন আছেন যারা সন্তানের সিয়াম সাধনা বরদাশত করতে পারেন না! তরুণ বয়সে অনাবিল চেহারায় দাড়ি রাখা সহ্য করতে পারেন না। শেষ রাতে ঘুম ভাঙ্গতে তকলিফ হবে ধারণা করে ফজর নামাজের জন্য তাদের জাগিয়ে দেন না। বাড়ির বাইরে গিয়ে কিভাবে রাত কাটাবে সে চিন্তায় সন্তানকে আবাসিক ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেন না। (অবশ্য বিস্ময়কর হলেও সত্য, এরাই আবার পরীক্ষার সময় সন্তানকে ভোরবেলা জাগিয়ে দেন। মর্নিং শিফটে ক্লাস থাকলে প্রত্যুষেই বিছানা থেকে আদরের সন্তানকে জোর করে তুলে দেন। বড় চাকুরির আশায় তাকে শুধু জেলার বাইরে নয় দেশের বাইরে পর্যন্ত পড়াশোনার জন্য পাঠিয়ে দেন!)

    এসব অভিভাবক কি একটু গভীরভাবে চিন্তা করে দেখেছেন, তাদের এমনতর ভালোবাসা আত্মজ-প্রিয়জনের জন্য কতোটা বিপদের কারণ হতে পারে? তাদের নিজেদেরই জন্যই বা কী পরিণাম বয়ে আনতে পারে? আজ যারা সন্তানের বা পিতার সাময়িক সুখের জন্য আল্লাহর অবাধ্য হওয়া মেনে নিচ্ছেন তারা কি মহাবিচার প্রাঙ্গণে তাদের থেকে আল্লাহর অসন্তোষ এড়াতে পারবেন? কিংবা আদরের এই সন্তানরা বা ভক্তির এই বাবা কি তাদের কোনো কাজে আসবে? যেই কুরআনের প্রতি ঈমান আনার কারণে আমরা মুসলমান সেই কুরআন কী বলছে শুনুন—

    فَإِذَا جَاءَتِ الصَّاخَّةُ (33) يَوْمَ يَفِرُّ الْمَرْءُ مِنْ أَخِيهِ (34) وَأُمِّهِ وَأَبِيهِ (35) وَصَاحِبَتِهِ وَبَنِيهِ (36) لِكُلِّ امْرِئٍ مِنْهُمْ يَوْمَئِذٍ شَأْنٌ يُغْنِيهِ (37)

    'অতঃপর যখন বিকট (কিয়ামতের) আওয়াজ আসবে, সেদিন মানুষ পালিয়ে যাবে তার ভাই থেকে, তার মা ও তার বাবা থেকে, তার স্ত্রী ও তার সন্তান-সন্ততি থেকে। সেদিন তাদের প্রত্যেকেরই একটি গুরুতর অবস্থা থাকবে, যা তাকে ব্যতিব্যস্ত রাখবে।'[1]

    অন্যত্র কুরআন আমাদের বিবেকের দুয়ারে কড়া নেড়ে বলছে,

    وَلَا تُخْزِنِي يَوْمَ يُبْعَثُونَ (87) يَوْمَ لَا يَنْفَعُ مَالٌ وَلَا بَنُونَ (88)

    'আর যেদিন পুনরুত্থিত করা হবে সেদিন আমাকে লাঞ্ছিত করবেন না। যেদিন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কোনো উপকারে আসবে না।'[2]

    وَاتَّقُوا يَوْمًا لَا تَجْزِي نَفْسٌ عَنْ نَفْسٍ شَيْئًا وَلَا يُقْبَلُ مِنْهَا شَفَاعَةٌ وَلَا يُؤْخَذُ مِنْهَا عَدْلٌ وَلَا هُمْ يُنْصَرُونَ (48)

    'আর তোমরা সে দিনকে ভয় কর, যেদিন কেউ কারো কোনো কাজে আসবে না। আর কারো পক্ষ থেকে কোনো সুপারিশ গ্রহণ করা হবে না এবং কারও কাছ থেকে কোনো বিনিময় নেয়া হবে না। আর তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না।'[3]

    অতএব শুধু ভালোবাসলেই হবে না; ভালোবাসার উপায়টি আখেরে কল্যাণ বয়ে আনবে কি-না তাও মাথায় রাখতে হবে। আমাদের কোনো ভালোবাসাই যেন আল্লাহর হুকুম পালনে অন্তরায় না হয় সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দিন। আমীন

    [1]. সূরা আবাসা : ৩৩-৩৭।

    [2]. সূরা আশ-শুআরা : ৮৭-৮৮।

    [3]. সূরা আল-বাকারা : ৪৮।

    ক্যাটাগরিসমূহ