ادعاء حق التشريع والتحليل والتحريم

أعرض المحتوى باللغة الأصلية anchor

translation লেখক : সালেহ ইবন ফাওযান আল-ফাওযান
1

আইন রচনা ও হালাল-হারাম নির্ধারণের অধিকার দাবি করা

3.8 MB DOCX
2

আইন রচনা ও হালাল-হারাম নির্ধারণের অধিকার দাবি করা

468.5 KB PDF

مقالة مترجمة إلى اللغة البنغالية، تبين أن التشريع والأحكام التي يسير عليها العباد في عباداتهم ومعاملاتهم وسائر شئونهم، حق لله تعالى، رب الناس، وخالق الخلق.

 আইন রচনা এবং হালাল-হারাম নির্ধারণের অধিকার দাবী করা

ادعاء حق التشريع والتحليل والتحريم

 বান্দার ইবাদাত, মু‘আমালাত ও জীবনের সকল ক্ষেত্রে আইন ও বিধান রচনার অধিকার একমাত্র আল্লাহর- যিনি মানুষের প্রভু ও সৃষ্টি জগতের সৃষ্টিকর্তা। এছাড়া বিবাদ-বিসম্বাদ মিমাংসাকারী ও ঝগড়া-ঝাটি নিষ্পত্তিকারী আইন প্রণয়নের অধিকারও একমাত্র তাঁরই। আল্লাহ বলেন,

﴿أَلَا لَهُ ٱلۡخَلۡقُ وَٱلۡأَمۡرُۗ تَبَارَكَ ٱللَّهُ رَبُّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٥٤﴾ [الاعراف: ٥٤] 

 “জেনে রাখ, তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা ও আদেশ দান করা। আল্লাহ বরকতময়, যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক।” [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৫৪]

কোন আইন বান্দাদের জন্য উপযোগী তা তিনিই জানেন। অতঃপর সে মোতাবেক আইন তিনি তাদের জন্য প্রণয়ন করেন। যেহেতু তিনি তাদের সকলের রব, তাই তিনি তাদের জন্য আইন ও যাবতীয় বিধান প্রণয়ন করেন। আর যেহেতু তারা সকলেই তাঁর বান্দা, তাই তারা তাঁর প্রণীত বিধানসমূহ মেনে নেয়। আর এ মেনে নেওয়ার যাবতীয় কল্যাণ তাদের দিকেই ফিরে আসে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿فَإِن تَنَٰزَعۡتُمۡ فِي شَيۡءٖ فَرُدُّوهُ إِلَى ٱللَّهِ وَٱلرَّسُولِ إِن كُنتُمۡ تُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِۚ ذَٰلِكَ خَيۡرٞ وَأَحۡسَنُ تَأۡوِيلًا ٥٩﴾ [النساء: ٥٩] 

 “আর কোনো বিষয়ে যদি তোমরা পরস্পর বিবাদে লিপ্ত হয়ে পড়, তাহলে তা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি প্রত্যর্পণ কর, যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাত দিবসের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাকে। এটাই কল্যাণকর ও পরিণতির দিক দিয়ে উত্তম।” [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৫৯]

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

﴿وَمَا ٱخۡتَلَفۡتُمۡ فِيهِ مِن شَيۡءٖ فَحُكۡمُهُۥٓ إِلَى ٱللَّهِۚ ذَٰلِكُمُ ٱللَّهُ رَبِّي﴾ [الشورا: ١٠] 

 “তোমরা যে বিষয়েই মতভেদ কর না কেন, উহার মীমাংসা তো আল্লারই নিকট। আর আল্লাহই হচ্ছেন আমার রব”[সূরা আশ-শূরা, আয়াত: ১০]

আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া আর কাউকে ও বিধান দাতা হিসাবে গ্রহণ করার প্রতি তিনি কঠোর অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেছেন। তিনি বলেন,

﴿أَمۡ لَهُمۡ شُرَكَٰٓؤُاْ شَرَعُواْ لَهُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا لَمۡ يَأۡذَنۢ بِهِ ٱللَّهُۚ﴾ [الشورا: ٢١]

 “এদের কি এমন কতগুলো শরীক আছে, যারা তাদের জন্য ঐ ধর্মের বিধান দিয়েছে, যার অনুমতি আল্লাহ দেন নি।” [সূরা আশ-শূরা, আয়াত: ২১]

অতএব, যে ব্যক্তি আল্লাহর শরী‘আত ব্যতীত অপর কোনো শরী‘আত গ্রহণ করে, সে মূলতঃ আল্লাহর সাথে শরীক করে থাকে। আর যে সব ইবাদাত আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক অনুমোদিত নয়, তা বিদ‘আত। আর প্রত্যেক বিদ‘আতই ভ্রষ্টতা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيهِ، فَهُوَ رَدٌّ»

 “যে ব্যক্তি আমাদের এ দীনের মধ্যে এমন কিছু আবিষ্কার করে যা তার অন্তর্গত নয়, তা প্রত্যাখ্যাত।” (সহীহ বুখারী, হাদীস ননং ২৬৯৭; সুনান ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৪৬০৬)

«مَنْ عَمِلَ عَمَلًا لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ»

 “কোনো ব্যক্তি যদি এমন কাজ করে যার উপর আমাদের নির্দেশ ও বিধান নেই, তাহলে সে কাজ প্রত্যাখ্যাত।” (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৭১৮)

রাজনীতি ও মানুষের মধ্যে বিচার- আচারের ক্ষেত্রে যা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলুল্লাহ অনুমোদন করেন নি, তা মূলতঃ তাগুত ও জাহেলিয়াতের বিধান। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿أَفَحُكۡمَ ٱلۡجَٰهِلِيَّةِ يَبۡغُونَۚ وَمَنۡ أَحۡسَنُ مِنَ ٱللَّهِ حُكۡمٗا لِّقَوۡمٖ يُوقِنُونَ ٥٠﴾ [المائ‍دة: ٥٠] 

 “তবে কি তারা জাহেলী যুগের বিধান কামনা করে? আর বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য বিধানদানে আল্লাহ অপেক্ষা কে শ্রেষ্ঠতর।” [সূরা আল-মায়েদা, আয়াত: ৫০]

অনুরূপভাবে হালাল- হারাম নির্ধারণ আল্লাহ তা‘আলারই হক। এতে তাঁর সাথে শরীক হওয়া কারো জন্যই বৈধ নয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلَا تَأۡكُلُواْ مِمَّا لَمۡ يُذۡكَرِ ٱسۡمُ ٱللَّهِ عَلَيۡهِ وَإِنَّهُۥ لَفِسۡقٞۗ وَإِنَّ ٱلشَّيَٰطِينَ لَيُوحُونَ إِلَىٰٓ أَوۡلِيَآئِهِمۡ لِيُجَٰدِلُوكُمۡۖ وَإِنۡ أَطَعۡتُمُوهُمۡ إِنَّكُمۡ لَمُشۡرِكُونَ ١٢١﴾ [الانعام: ١٢١] .

 “যে সব জন্তুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয় না, সেগুলো থেকে ভক্ষণ করো না। তা ভক্ষণ করা অবশ্যই পাপ। নিশ্চয়ই শয়তানরা তাদের বন্ধুদেরকে তোমাদের সাথে বিবাদ করতে প্ররোচনা দেয়। যদি তোমরা তাদের আনুগত্য কর, তবে তোমরা অবশ্যই মুশরীক হয়ে যাবে।” [সূরা আল-আন‘আম, আয়াত: ১২১]

এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর হারাম করা কোনো কিছুকে হালাল করার ক্ষেত্রে শয়তান ও তাদের বন্ধুদের আনুগত্য পোষণ করাকে তাঁর সাথে শির্ক বলে সাব্যস্ত করেছেন। অনুরূপভাবে আল্লাহর হালাল করা বস্তুকে হারাম করা কিংবা হারাম করা বস্তুকে হালাল করার ক্ষেত্রে যে ব্যক্তি আলেমগণ ও শাসকবর্গ এ উভয় প্রকার লোকদের অনুসরণ করে থাকে, সে প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ ব্যতীত অন্যদেরকেও রব বানিয়ে নিল। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ٱتَّخَذُوٓاْ أَحۡبَارَهُمۡ وَرُهۡبَٰنَهُمۡ أَرۡبَابٗا مِّن دُونِ ٱللَّهِ وَٱلۡمَسِيحَ ٱبۡنَ مَرۡيَمَ وَمَآ أُمِرُوٓاْ إِلَّا لِيَعۡبُدُوٓاْ إِلَٰهٗا وَٰحِدٗاۖ لَّآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۚ سُبۡحَٰنَهُۥ عَمَّا يُشۡرِكُونَ ٣١﴾ [التوبة: ٣١] 

 “তারা আল্লাহকে ছেড়ে তাদের পণ্ডিত ও সংসার বিরাগীদেরকে তাদের প্রভুরূপে গ্রহণ করেছে এবং মরিয়ম তনয় মাসীহকেও। অথচ তারা এক ইলাহের ইবাদাত করার জন্যই আদিষ্ট হয়েছিল। তিনি ব্যতীত অন্য কোনো ইলাহ নেই। তারা তাঁর যে শরীক সাব্যস্ত করে, তা থেকে তিনি পবিত্র।” [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৩২]

তিরমিযী ও অন্যান্যদের বর্ণনায় এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ আয়াতটি আদী ইবন হাতেম তাঈ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সামনে তিলাওয়াত করলে আদী বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা তো তাদের ইবাদাত করতাম না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তারা যে সব হারাম বস্তুকে হালাল প্রতিপন্ন করতো, তোমরাও কি তাকে হালাল মনে করতে না? আর যে সব হালাল বস্তুকে তারা হারাম সাব্যস্ত করতো, তোমরা কি তাকে হারাম ভাবতে না? উত্তরে আদী বললেন: জী, হ্যাঁ। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেন, ওটাই তাদের ইবাদাত।

 সুতরাং হালাল-হারাম সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে আল্লাহকে ছেড়ে তাদের আনুগত্য করাই তাদের ইবাদাত, যা মূলতঃ আল্লাহর সাথে শির্কেরই নামান্তর। আর এটা হচ্ছে বড় শির্ক যা পুরোপুরি তাওহীদের পরিপন্থী। কেননা তাওহীদের অর্থ হলো, আল্লাহ ছাড়া হক কোনো ইলাহ নেই -এ সাক্ষ্য দেওয়া।  আর এ সাক্ষ্য দেওয়ার অর্থই হলো হালাল -হারাম নির্ধারণের অধিকার শুধু আল্লাহ তা‘আলার এ কথা মনে প্রাণে বিশ্বাস করা।

এ অবস্থা যদি সেই লোকদের হয়, যারা আল্লাহর শরীয়তের খেলাপ হালাল-হারাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে উলামা ও আবেদ লোকদের আনুগত্য করে অথচ এ সকল আলেমগণ অন্যদের চেয়ে দীন ও ইলমের অধিক নিকটবর্তী, উপরন্তু তাদের ভুল কখনো ইজতেহাদ ও গবেষণাপ্রসূত হতে পারে, যাতে হক সিদ্ধান্তে পৌঁছতে না পারলে ও তারা পুণ্যবান বলে গণ্য হবেন। তাহলে সে সব লোকদের কি অবস্থা হবে, যারা কাফির ও নাস্তিকদের রচিত আইন-কানুনের অনুসরণ করে, মুসলিম দেশসমূহে তা আমদানী করে এবং তদনুযায়ী মুসলিমদের মধ্যে শাসনকার্য পরিচালনা করে। লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ। এরা মূলতঃ আল্লাহর বদলে কাফিদেরকে রব বানিয়ে নিয়েছে, যারা তাদের জন্য আইন ও বিধান রচনা করে এবং তাদের জন্য হারামকে বৈধ করে মানুষের মধ্যে সে অনুযায়ী শাসনকার্য পরিচালনা করে।

সমাপ্ত


ক্যাটাগরিসমূহ