×
মুসলিমের উপকারী সংক্ষিপ্ত নির্দেশিকা

মুসলিমের উপকারী সংক্ষিপ্ত নির্দেশিকা

সংকলন:

মুহাম্মাদ আশ-শাহরী

১৪৪৩হি. - ২০২১ইং

পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে

ভূমিকা:

সকল প্রশংসা সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহর, সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক নবী ও রাসূলদের মধ্যে সর্বোত্তম রাসূল আমাদের নবী মুহাম্মাদ এবং তাঁর পরিবারবর্গ ও সমস্ত সাহাবীর উপর।

প্রশংসা ও দরূদ সালাম পরঃ

মানুষের উপরে আল্লাহ তা'আলার সবচেয়ে বড় নি'আমত হচ্ছে, তাকে তিনি ইসলামের নিয়ামাত দান করেন, তার উপরে টিকে থাকার সুযোগ দেন, আর এর হুকুম-আহকাম ও শরী'আতের উপরে আমল করার তাওফীক দেন।﴿وَلَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِي آدَمَ﴾ এ কিতাবে একজন মুসলিম জানতে পারবে এমন কিছু মূলনীতি, যার দ্বারা তার দীন সঠিক-সুদৃঢ় হবে, আর তা এমন সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে, যা তার কাছে এ মহান দীনের মৌলিক শিক্ষাগুলো স্পষ্ট করবে; যাতে তার রব আল্লাহ তা'আলা, তাঁর দীন ইসলাম ও তাঁর নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে জ্ঞান বৃদ্ধি হবে। ফলে সে উক্ত পূর্ণবিচক্ষনতা ও জ্ঞানের সাথে আল্লাহ তা'আলার ইবাদত করতে পারবে।﴿كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَلَوْ آمَنَ أَهْلُ الْكِتَابِ لَكَانَ خَيْرًا لَهُمْ مِنْهُمُ الْمُؤْمِنُونَ وَأَكْثَرُهُمُ الْفَاسِقُونَ﴾






﴿يَا أَيُّهَا النَّاسُ اعْبُدُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ وَالَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ﴾﴿هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ﴾বান্দাদেরকে সৃষ্টি করার হিকমাত﴿ لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ ۖ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ﴾



আমার রব আল্লাহ




আল্লাহ, তিনিই হচ্ছেন আমার রব ও সকল কিছুর রব। তিনিই মালিক, সৃষ্টিকর্তা, রিযিকদাতা এবং সকল কিছুর পরিচালনাকারী।

আর তিনিই ইবাদতের একমাত্র উপযুক্ত। তিনি ছাড়া কোন প্রকৃত রব নেই, আর কোন প্রকৃত মাবূদ (উপাস্য) নেই।

তাঁর অসংখ্য সুন্দর নাম ও সুউচ্চ সিফাত (গুণাবলী) রয়েছে, যা তিনি তাঁর নিজের জন্য সাব্যস্ত করেছেন অথবা তাঁর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভাষায় তাঁর নিজের জন্য বর্ণনা করেছেন,যা সৌন্দর্য্য ও পূর্ণতার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। তাঁর মতো কিছু নেই, আর তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।

তাঁর সুন্দর নামসমূহের মধ্যে রয়েছে:

الرزاق বা মহারিযিকদাতা, الرحمن বা পরম দয়ালু, القدير বা সর্বময় ক্ষমতাধর, المَلِك বা মহামালিক, السميع বা সর্বশ্রোতা, السلام বা নিরাপত্তাদানকারী, البصير বা সর্বদ্রষ্টা, الوكيل বা পরম নির্ভরযোগ্য কর্ম-সম্পাদনকারী, الخالق বা মহাসৃষ্টিকর্তা, اللطيف বা সূক্ষদর্শী, الكافي বা অমুখাপেক্ষি, الغفور বা মহাক্ষমাশীল।

আর-রাযযাক (মহারিযিকদাতা): বান্দাদের রিযিকের জিম্মা গ্রহণকারী, যা দ্বারা তাদের দেহ ও মনের বেঁচে থাকা।

আর-রহমান (পরম দয়ালু): মহান ও সুবিশাল প্রশস্ত রহমাতের মালিক, যা সবকিছুকে অন্তর্ভুক্ত করে।

আল-কাদীর (সর্বময় ক্ষমতাধর): যিনি পরিপূর্ণ ক্ষমতার অধিকারী, যার ক্ষমতায় কখনো অক্ষমতা ও কোন দুর্বলতা আসে না।

আল-মালিক (মালিক বা বাদশাহ): যিনি মহত্ব, সর্বক্ষমতা ও নিয়ন্ত্রকের গুণে গুণান্বিত। আর যিনি সবকিছুর মালিক, তাতে কোন প্রকার বাঁধা-বিঘ্ন ও প্রতিরোধ ছাড়া পরিচালনাকারী।

আস-সামী' (সর্বশ্রোতা): প্রকাশ্য ও গোপনীয় যাবতীয় সব শ্রবণ উপযোগী বস্তু যিনি শুনে থাকেন। তিনি বান্দাদের দু'আ (আহবান) ও তাদের কাকুতি-মিনতি শুনে থাকেন।

আস-সালাম (নিরাপত্তা-দানকারী): যিনি সর্ব প্রকার দুর্বলতা, দোষ ও ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে পবিত্র।

আল-বাসীর (সর্ববিষয়-দর্শনকারী): যিনি তার দৃষ্টি দিয়ে সবকিছুকে পরিবেষ্টিত করে রেখেছেন; যদিও সুক্ষ্ম ও ক্ষুদ্র হোক। সবকিছুর প্রতি দ্রষ্টা, অবগত ও তার বাতেনী বিষয় সম্পর্কে সম্যক অবগত।

আল-ওয়াকীল (পরম নির্ভরযোগ্য কর্ম-সম্পাদনকারী): স্বীয় মাখলুকের রিযিক সম্পাদনের দায়িত্বশীল। তাদের যাবতীয় কল্যাণের তত্ববধায়ক। আর যিনি তার ওলীদের অভিভাবক। ফলে সকল কর্মকে তাদের জন্য সহজ করে দেন এবং কঠিন থেকে তাদের দূরে সরান। আর তাদের যাবতীয় বিষয়ের জন্য তিনিই যথেষ্ট।

আল-খালিক (সৃষ্টিকর্তা): পূর্বে কোন দৃষ্টান্ত ছাড়া সবকিছুর আবিষ্কারক ও অস্তিত্বদানকারী।﴿لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مِنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِينَ رَءُوفٌ رَحِيمٌ﴾আল-লাত্বীফ (অনুগ্রহকারী): যিনি তাঁর বান্দাদেরকে সম্মানিত করেন, তাদের উপরে রহমত করেন এবং তাদের চাওয়া পূর্ণ করেন।﴿وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلا رَحْمَةً لِلْعَالَمِينَ﴾

আল-কাফী (যথেষ্ট): তাঁর বান্দাগণ যে সবের প্রতি মুখাপেক্ষি, তার সবকিছুর জন্য তিনিই যথেষ্ট। অন্যদের বাদ দিয়ে তার সাহায্যকে যথেষ্ট বলে মানা যায় এবং তা দ্বারাই তিনি ছাড়া অন্য কারো থেকে বিমুখ হওয়া যায়।

আল-গফূর (পরম ক্ষমাশীল): যিনি তাঁর বান্দাকে তাদের গুনাহের অনিষ্টতা থেকে বাঁচান এবং তার কারণে তাদের শাস্তি দেন না।

আমার নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম



মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ প্রদত্ত রহমত:

তিনি হচ্ছেন: মুহাম্মাদ, তাঁর পিতা আব্দুল্লাহ, তাঁর দাদা আব্দুল মুত্তালিব, তার পিতা হাশিম। হাশিম কুরাইশ গোত্রের অন্তর্ভুক্ত আর কুরাইশ আরবদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।﴿ يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَكُم بُرْهَانٌ مِّن رَّبِّكُمْ وَأَنزَلْنَا إِلَيْكُمْ نُورًا مُّبِينًا﴾

তাঁর মাতা: আমিনা বিনতু ওয়াহহাব। তার দুধমাতা: হালীমাহ আস-সা'দিয়্যাহ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এগারো জন নারীকে বিবাহ করেছিলেন, তাদের মধ্যে নয়জনকে রেখে তিনি মারা যান।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাতজন সন্তান ছিল, তাদের মধ্যে তিনজন ছেলে, আর চারজন মেয়ে: ছেলেদের নাম: আল-কাসিম, আব্দুল্লাহ, ইবরাহীম আর মেয়েদের নাম: যয়নাব, রুকাইয়াহ, উম্মু কালছূম এবং ফাতিমা।

মানুষের জন্য ফরয হচ্ছে তিনি যার আদেশ করেছেন তার অনুসরণ করা, যার ব্যাপারে সংবাদ দিয়েছেন তা সত্য বলে বিশ্বাস করা, তিনি যা থেকে নিষেধ করেছেন অথবা সতর্ক করেছেন তা থেকে বিরত থাকা এবং তিনি যা শরী'আতবদ্ধ করেছেন তা ব্যতীত আল্লাহর ইবাদাত না করা।

তার রিসালাত ও তার আগের সকল নবীর রিসালাত ছিল, এক আল্লাহর ইবাদাতের দিকে আহ্বান করা, যার কোন শরীক নেই। আল্লাহ তা'আলা বলেছেন:"আর আপনার পূর্বে আমি যে রাসূলই প্রেরণ করেছি তার কাছে এ ওহীই পাঠিয়েছি যে, আমি ব্যতীত অন্য কোন সত্য ইলাহ নেই, সুতরাং তোমরা আমরাই ইবাদাত কর।"



প্রতিটি মুসলিমের উপরেই রয়েছে তাঁর অনেক অধিকার। তন্মধ্যে অন্যতম হলো:

১। তাঁর নবুওয়ত, ও তাঁর সত্যতা এবং তিনি কর্তৃক আনিত শরী'আতের নির্ভুলতার ব্যাপারে ঈমান আনা এবং এ ব্যাপারে তার অনুসরণ করা। আল্লাহ তা'আলা বলেছেন:﴿فَاعْلَمْ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ﴾ "আর তিনি প্রবৃত্তি থেকে কোন কিছু বলেন না।তাতো কেবল ওহী, যা তার প্রতি ওহীরূপে প্রেরিত হয়।"২। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভালোবাসা আবশ্যক এবং উক্ত ভালোবাসাকে নিজের জান, সন্তানসহ যাবতীয় সৃষ্টিকুল থেকে বেশী প্রাধান্য দেওয়া। আর এ ভালোবাসার দাবী হচ্ছে- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাতের (জীবন চরিতের) সাথে ঐক্যমত হওয়া, তিনি যা আদেশ করেছেন, তা পালন করা এবং তিনি যা থেকে নিষেধ করেছেন এবং সতর্ক করেছেন, তা থেকে বিরত থাকা।﴿لَقَدْ جَاءكُمْ رَسُولٌ مِّنْ أَنفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُم بِالْمُؤْمِنِينَ رَؤُوفٌ رَّحِيمٌ﴾

৩। তাঁকে শ্রদ্ধা করা, সাহায্য করা, সম্মান করা এবং মর্যাদা দেওয়া।



নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সিফাত বা বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে:﴿وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ﴾

সত্যবাদীতা, দয়া, সহনশীতা, ধৈর্য, বীরত্ব, দানশীলতা, উত্তম আচরণ, ন্যায় বিচার, বিনয় এবং ক্ষমাশীলতা।

আল-কুরআনুল কারীম আমার রবের কালাম (বানী)

আল্লাহ তা'আলা বলেছেন:﴿وَآتُوا الزَّكَاةَ﴾ "হে লোকসকল! তোমাদের রবের কাছ থেকে তোমাদের কাছে প্রমাণ এসেছে, এবং আমি তোমাদের প্রতি স্পষ্ট নূর নাযিল করেছি।"[সূরা আন-নিসা : ১৭৪]



পূর্ববর্তী কিতাবসমূহ যা কিছু ছিলো তা কুরআনুল কারীমের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তাছাড়া আল্লাহর সকল উদ্দেশ্য ও মনস্তাত্ত্বিক চারিত্রিক বিষয়গুলোও এতে অতিরিক্ত রয়েছে। আগের গ্রন্থগুলোতে হক যা কিছু ছিল, কুরআন সেগুলোর সত্যায়নকারী। বর্তমান জামানাতে কুরআনুল কারীম ছাড়া আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে আগত কোন আসমানী কিতাব এমন নেই, যার অনুসরণ করা, তাকে পবিত্র মনে করা ফরয হবে, তা তিলাওয়াত করা ইবাদাত বলে গণ্য হবে, এবং তার উপরে আমল করা যাবে।

আমার দীন ইসলাম

দীনের স্তর তিনটি: ইসলাম, ঈমান এবং ইহসান।

প্রথম স্তর: ইসলাম

ইসলাম হচ্ছে: তাওহীদের সাথে আল্লাহর বশ্যতা স্বীকার করা, অনুকরণ করার মাধ্যমে তার আনুগত্য স্বীকার করা এবং শিরক ও মুশরিক থেকে পবিত্র থাকা।

ইসলামের রুকনসমূহ

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ﴾ "ইসলাম পাঁচটি ভিত্তর উপর প্রতিষ্ঠিত। সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন মাবূদ নেই আর মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল। সালাত কায়েম করা, যাকাত আদায় করা,রমাদানের সওম পালন করা এবং বাইতুল্লাহর হজ্জ পালন করা।"মুত্তাফাকুন 'আলাইহি।

ইসলামের রুকনসমূহ হচ্ছে এমন সকল ইবাদত যা পালন করা প্রতিটি মুসলিমের উপরে ফরয। এগুলোর আবশ্যকতার বিশ্বাস এবং মেনে চলা ছাড়া কোন মানুষের ইসলাম গ্রহণ বিশুদ্ধ হবে না। কেননা ইসলাম এগুলোর উপরেই নির্ভরশীল। আর এ কারণেই এগুলোকে "আরকানুল ইসলাম (ইসলামের রুকনসমূহ)" হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে।

এ রুকনসমূহ হচ্ছে:

প্রথম রুকন: আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন মাবূদ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল- একথার সাক্ষ্য দেওয়া।

আল্লাহ তা'আলা বলেছেন:﴿وَلِلَّهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلًا﴾ "জেনে রেখ, আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন সত্য মাবুদ নেই।"[সূরা মুহাম্মাদ: ১৯]আল্লাহ তা'আলা বলেছেন:﴿وَأَذِّنْ فِي النَّاسِ بِالْحَجِّ يَأْتُوكَ رِجَالًا وَعَلَى كُلِّ ضَامِرٍ يَأْتِينَ مِنْ كُلِّ فَجٍّ عَمِيقٍ﴾ "অবশ্যই তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্য হতেই একজন রাসূল এসেছেন, তোমাদের যে দুঃখ-কষ্ট হয়ে থাকে তা তার জন্য বড়ই বেদনাদায়ক। তিনি তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি তিনি করুণাশীল ও অতি দয়ালু।"[সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ১২৮]

لا إله إلا الله বা আল্লাহ ব্যতীত কোনো প্রকৃত মাবূদ নেই, একথার অর্থ: আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন মা'বূদ নেই।

'মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল' একথার সাক্ষ্য দেওয়ার অর্থ হচ্ছে: তিনি যা আদেশ করেছেন তার আনুগত্য করা, তিনি যা কিছুর ব্যাপারে সংবাদ দিয়েছেন, তা অন্তরে বিশ্বাস করা, তিনি যা হতে নিষেধ করেছেন ও সতর্ক করেছেন তা হতে দূরে থাকা এবং তিনি যেভাবে শরী'আত প্রণয়ন করেছেন সেভাবেই আল্লাহর ইবাদত করা।দ্বিতীয় রুকন: সালাত কায়েম করা

সালাত কায়েম করতে হবে তা আদায়ের মাধ্যমে, যেভাবে আল্লাহ তা'আলা এটিকে শরী'আতভুক্ত করেছেন এবং তাঁর রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন।

তৃতীয় রুকন: যাকাত আদায় করা

আল্লাহ তা'আলা যাকাতকে ফরয করেছেন মুসলিমের ঈমানের সত্যতা পরীক্ষার জন্যে, তাকে প্রদত্ত সম্পদের বিপরীতে তার রবের শুকরিয়া জ্ঞাপন ও দরিদ্র-মুখাপেক্ষিদের সহযোগিতা স্বরূপ।﴿إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ﴾

যাকাত আদায় হবে যাকাতের হকদার ব্যক্তিদেরকে তা প্রদানের মাধ্যমে।

যাকাত হচ্ছে নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ থাকলে উক্ত সম্পদ হতে ফরয একটি পরিমাণ হক, যা এমন আটটি শ্রেণিকে প্রদান করতে হয়, যাদের কথা আল্লাহ তা'আলা কুরআনুল কারীমে উল্লেখ করেছেন। এদের মধ্যে রয়েছে: দরিদ্র ও মিসকীন।

যাকাত আদায় করার মাধ্যমে দয়া ও অনুগ্রহের গুণে গুণান্বিত হওয়া যায়, মুসলিমদের চরিত্র ও সম্পদকে পবিত্র করা যায়, দরিদ্র ও মিসকীনদের মন সন্তুষ্ট করা যায়, পারষ্পারিক ভালোবাসার উপকরণসমূহ এবং মুসলিম সমাজের সদস্যদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব বোধ শক্তিশালী করা যায়। একারণে নেককার মুসলিম ব্যক্তি যাকাত তার অন্তরের সদিচ্ছার সাথে খুশী মনেই আদায় করে। যেহেতু এর দ্বারা অন্যন্য মানুষদেরকেও সুখী করা যায়।

সম্পদের যাকাতের নির্ধারিত পরিমাণ হচ্ছে: জমা করে রাখা যায় এমন সোনা, রোপা, কাগজের মুদ্রা এবং লাভের উদ্দেশ্যে ব্যবসার জন্য প্রস্তুতকৃত ব্যবসায়ী পণ্য হতে ২.৫%, যখন সেগুলো বা তার মূল্য নির্দিষ্ট পরিমাণ পর্যন্ত পৌঁছে এবং তা পুরো এক বছর অতিক্রম করে।

অনুরূপভাবে কারো কাছে নির্দিষ্ট সংখ্যক চতুষ্পদ জন্তু (উট, গরু ও ছাগল) থাকলেও সেক্ষেত্রে যাকাত ফরয হবে; যদি পশুর মালিক কর্তৃক খাদ্য প্রদান করা না হয়ে থাকে আর সেগুলো বছরের অধিকাংশ সময়ে জমিন থেকে ঘাস খেয়ে থাকে।

অনুরূপভাবে মাটির ভিতর থেকে বের হওয়া বস্তু যেমন: রিকায – তা হচ্ছে: যা জাহিলী যুগে মাটিতে দাফন করা হয়েছিল এমন সম্পদ -, অনুরূপভাবে বীজ, ফলফলাদি ও খনিজ সম্পদ যখন নির্দিষ্ট পরিমাণ পর্যন্ত পৌঁছে, তখন সেগুলোতেও যাকাত ফরয হয়।

চতুর্থ রুকন: রমাদান মাসে সাওম পালন করা﴿الْحَمْدُ لِلَّهِ فَاطِرِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ جَاعِلِ الْمَلَائِكَةِ رُسُلًا أُولِي أَجْنِحَةٍ مَثْنَى وَثُلَاثَ وَرُبَاعَ يَزِيدُ فِي الْخَلْقِ مَا يَشَاءُ إِنَّ اللَّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ﴾

রমাদান হচ্ছে: হিজরী ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বছরের নবম মাস। মুসলিমদের কাছে এটি একটি সম্মানিত মাস। বছরের অন্যান্য মাসের উপরে এর বিশেষ অবস্থান রয়েছে। এ মাসে পূর্ণ এক মাস সিয়াম পালন করা ইসলামের একটি রুকন।

রমাদানের সাওম হচ্ছে: পানাহার ও স্ত্রী সম্ভোগ পরিত্যাগ করাসহ সকল ধরণের সিয়াম ভঙ্গকারী কারণ হতে বিরত থাকার মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলার ইবাদত করা। যা মহিমান্বিত রমাদান মাসের দিনগুলোতে ফজর উদিত হওয়া থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পালন করতে হয়।

পঞ্চম রুকন: পবিত্র বাইতুল্লাহর হজ্জ আদায় করা।﴿قُولُوا آمَنَّا بِاللَّهِ وَمَا أُنْزِلَ إِلَيْنَا وَمَا أُنْزِلَ إِلَى إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ وَالْأَسْبَاطِ وَمَا أُوتِيَ مُوسَى وَعِيسَى وَمَا أُوتِيَ النَّبِيُّونَ مِنْ رَبِّهِمْ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِنْهُمْ وَنَحْنُ لَهُ مُسْلِمُونَ﴾



দ্বিতীয় স্তর হচ্ছে: ঈমান﴿إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ﴾﴿إِنَّ الدِّينَ عِنْدَ اللَّهِ الْإِسْلَامُ﴾

ঈমান হচ্ছে: আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল যা আদেশ করেছেন সেগুলোকে স্বীকৃতি দেওয়া, দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা, পরিপূর্ণভাবে মেনে নেওয়া এবং প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্যভাবে সেগুলোর অনুগত হওয়া। এটা হচ্ছে অন্তরের সত্যায়ন, অন্তরের আমল ও শারীরিক আমলসমূহকে অন্তর্ভুক্তকারী দৃঢ় বিশ্বাস। দীনের সকল বিষয়কে বাস্তবায়ন করা এর অন্তর্ভুক্ত।ঈমান আনুগত্যের কারণে বৃদ্ধি পায় আর পাপের কারণে হ্রাস হয়।

ঈমানের রুকনসমূহ



প্রথম রুকন: আল্লাহর প্রতি ঈমান

আমরা আল্লাহ তা'আলার অস্তিত্বের উপরে ঈমান আনি, আমরা একত্বে বিশ্বাস করি তাঁর রবুবিয়্যাতে, তাঁর উলূহিয়্যাতে এবং তাঁর নামসমূহ ও গুণাবলীতে। সুতরাং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা নিম্নোক্ত বিষয়সমূহকে অন্তর্ভুক্ত করে:

- আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার অস্তিত্বের উপরে ঈমান।﴿وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُولاً أَنِ اعْبُدُواْ اللّهَ وَاجْتَنِبُواْ الطَّاغُوتَ﴾

- আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার রুবূবিয়্যাতের উপরে ঈমান। তিনিই প্রতিটি বস্তুর মহামালিক, মহাসৃাষ্টকর্তা, মহারিযিকদাতা ও তাদের কাজের মহাপরিচালক।

- আল্লাহ সুবাহানাহু ওয়া তা'আলার উলূহিয়্যাতে(একমাত্র তাঁরই ইবাদতে) ঈমান আনা। তিনিই একমাত্র ইবাদতের হকদার, কোন ইবাদতেই তাঁর কোন অংশীদার নেই। যেমন: সালাত আদায়, দু'আ, মানত করা, যবাই করা, সাহায্য প্রার্থনা করা, আশ্রয় চাওয়াসহ অন্যান্য সকল ইবাদাত।

- আল্লাহ তা'আলার সুন্দর নামসমূহ ও সুউচ্চ গুণাবলীর উপরে ঈমান আনা, যেগুলো আল্লাহ তা'আলা তাঁর নিজের জন্য অথবা তাঁর নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জন্য সাব্যস্ত করেছেন এবং ঐগুণাবলীকে নাকচ করা, যা তিনি অথবা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেগুলোকে তাঁর জন্যে নাকচ করেছেন। আর আল্লাহ তা'আলার নামসমূহ ও গুণাবলী পূর্ণতার ও সৌন্দর্যের সবচেয়ে উত্তম পর্যায়ে রয়েছে। কোন বস্তুই তাঁর মত নয় এবং তিনি সবকিছু শোনেন এবং দেখেন।

দ্বিতীয় রুকন: ফিরিশতাদের প্রতি ঈমান

আল্লাহ তা'আলা বলেছেন:﴿اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ لَيَجْمَعَنَّكُمْ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ لَا رَيْبَ فِيهِ وَمَنْ أَصْدَقُ مِنَ اللَّهِ حَدِيثًا﴾ "সকল প্রশংসা আসমানসমূহ ও জমিনের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহরই, যিনি রাসূল করেন ফিরিশতাদেরকে যারা দুই দুই, তিন তিন অথবা চার চার পাখাবিশিষ্ট। তিনি সৃষ্টিতে যা ইচ্ছে বৃদ্ধি করেন। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।"[সূরা ফাতির : ১]

তারা বিরাট এক সৃষ্টি, তাদের শক্তি-সামর্থ ও সংখ্যা আল্লাহ তা'আলা ছাড়া কেউ জানেন না। তাদের প্রত্যেকেরই বিশেষ নাম, গুণাবলী ও দায়িত্ব রয়েছে, যা দ্বারা আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে বিশেষায়িত করেছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন জিবরীল আলাইহিস সালাম, যিনি ওহীর দায়িত্বে নিয়োজিত, আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর রাসূলদের প্রতি তিনি ওহী নিয়ে অবতরণ করেন।

তৃতীয় রুকন: কিতাবসমূহের উপরে ঈমান

আল্লাহ তা'আলা বলেছেন:﴿إِنَّا كُلَّ شَيْءٍ خَلَقْنَاهُ بِقَدَرٍ﴾ "তোমরা বল, 'আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি এবং যা আমাদের নিকট নাযিল হয়েছে, এবং যা ইবরাহীম, ইসমা'ঈল, ইসহাক, ইয়া'কূব ও তার বংশধরদের প্রতি নাযিল হয়েছে, এবং যা মূসা, ঈসা ও অন্যান্য নবীগণকে তাদের রবের নিকট হতে দেওয়া হয়েছে। আমরা তাদের মধ্যে কোন তারতম্য করি না। আর আমরা তাঁরই কাছে আত্মসমর্পণকারী।"[সূরা আল বাকারাহ: ১৩৬]

আমরা ঈমান আনি যে, আল্লাহ তা'আলা তাঁর রাসূলদের উপরে কিতাব নাযিল করেছেন, সৃষ্টিজগতসমূহের (অথবা জ্ঞানীদের) উপরে প্রমাণ হিসেবে এবং আমলকারীদের জন্য পথনির্দেশ হিসেবে।

তারা তাদেরকে এগুলো দ্বারা হিকমাত শিক্ষা দেন এবং তাদেরকে পরিশুদ্ধ করেন।

আল্লাহ তা'আলা তাঁর কিতাবে যে সমস্ত আসমানী গ্রন্থের উল্লেখ করেছেন, সেগুলো হচ্ছে:

আল-কুরআনুল কারীম: এটি আল্লাহ তা'আলা তাঁর নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপরে নাযিল করেছেন।

তাওরাত: এটি আল্লাহ তা'আলা তাঁর নবী মূসা আলাইহিস সালামের উপরে নাযিল করেছেন।

ইনজিল: এটি আল্লাহ তা'আলা তাঁর নবী ঈসা আলাইহিস সালামের উপরে নাযিল করেছেন।

যাবূর: এটি আল্লাহ তা'আলা তাঁর নবী দাঊদ আলাইহিস সালামের উপরে নাযিল করেছেন।﴿إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ﴾ইবরাহীমের সহীফাহসমূহ: এটি আল্লাহ তা'আলা তাঁর নবী ইবরাহীম আলাইহিস সালামের উপরে নাযিল করেছেন।চতুর্থ রুকন: রাসূলদের উপরে ঈমানআল্লাহ তা'আলা বলেছেন:"আর আমি অবশ্যই প্রত্যেক জাতিতে একজন রাসূল প্রেরণ করেছি যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর এবং পরিহার কর তাগূতকে।"

আমরা বিশ্বাস করি যে, আল্লাহ তা'আলা তাঁর সৃষ্টিজগতের কাছে রাসূলদেরকে প্রেরণ করেছেন, যারা তাদেরকে এক আল্লাহর ইবাদাতের প্রতি আহ্বান করেছেন, যার কোন শরীক নেই এবং আল্লাহ তা'আলা ছাড়া যাদের ইবাদাত করা হয়, সেগুলোকে অস্বীকারের প্রতি আহ্বান করেছেন।

তাদের প্রত্যেকেই ছিলেন পুরুষ ও আল্লাহর বান্দা। তারা ছিলেন সত্যবাদী, সত্যায়নকৃত, পরহেযগার, বিশ্বস্ত, সুপথপ্রাপ্ত, পথের দিশারী। আল্লাহ তাঁদেরকে তাদের সত্যতার প্রমাণকারী নিদর্শনসমূহ দিয়ে শক্তিশালী করেছিলেন। আল্লাহ তাদেরকে যা দিয়ে প্রেরণ করেছিলেন,তারা তার সবটুকুই পৌঁছে দিয়েছিলেন। তারা প্রত্যেকেই ছিলেন সুস্পষ্ট সত্য ও প্রকাশিত হিদায়াতের পথে।

দীনের মৌলিক বিষয়ে তাদের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সবার দাওয়াত একই ছিল। তা হচ্ছে: ইবাদাতের ক্ষেত্রে আল্লাহ তা'আলার তাওহীদ ঠিক রাখা এবং তাঁর সাথে শিরক না করা।

পঞ্চম রুকন: আখিরাতের উপরে ঈমান

আমরা ঈমান আনি শেষ দিবসের উপরে। তা হচ্ছে কিয়ামাতের দিন, এর পরে আর কোন দিন নেই। আমরা আরো ঈমান আনি এর সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়গুলোর উপরে, যে সম্পর্কে আমাদের প্রতাপশালী মহাসম্মানিত রব তাঁর কিতাবের মধ্যে আমাদেরকে সংবাদ দিয়েছেন অথবা যে সম্পর্কে আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংবাদ দিয়েছেন, যেমন: মানুষের মৃত্যু, পুনরুত্থান, প্রত্যাবর্তন, শাফা'আত, মীযান, হিসাব, জান্নাত ও জাহান্নামসহ আখিরাত দিবসের সাথে সংশ্লিষ্ট আরো অন্যান্য বিষয়াবলী।

ষষ্ঠ রুকন: তাকদীরের ভালো-মন্দের উপরে ঈমান রাখা

আমরা তাকদীরের ভালো-মন্দের উপরে ঈমান রাখি। তা হচ্ছে: সৃষ্টিজগতের জন্য আল্লাহ তা'আলা কর্তৃক নির্ধারিত তাকদীর, যা তিনি তাঁর কাছে থাকা ইলম এবং হিকমাতের চাহিদা অনুযায়ী করেছেন। আর প্রতিটি বিষয় যা মাখলূকাতের উপরে এ দুনিয়াতে থাকাকালীন সময়ে আপতিত হয়, তার সবকিছুই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার ইলম, তাঁর তাকদীর ও একক পরিচালনার মাধ্যমেই হয়ে থাকে, এতে তাঁর কোন শরীক নেই। আর এ সব তাকদীর মানুষকে সৃষ্টি করার আগেই লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। তবে মানুষ ইচ্ছা ও সংকল্প করতে পারে। সে তার কাজের প্রকৃত কর্তা; কিন্তু তা কখনো আল্লাহর ইলম, ইচ্ছা ও সংকল্পের বাইরে যেতে পারে না।

সুতরাং তাকদীরের উপরে ঈমান চারটি স্তরে বিভক্ত:

প্রথমত: আল্লাহর ব্যাপক ও পরিব্যপ্ত ইলম সম্পর্কে ঈমান আনা।

দ্বিতীয়ত: কিয়ামাত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে, তার সবকিছুই আল্লাহ লিপিবদ্ধ করেছেন, এ বিষয়ে ঈমান আনা।

তৃতীয়ত: আল্লাহর কর্যকরী ইচ্ছা ও পরিপূর্ণ ক্ষমতার উপরে ঈমান আনা। সুতরাং তিনি যা চেয়েছেন তাই হয়েছে এবং তিনি যা চাননি, তা হয়নি।

চতুর্থত: আল্লাহ প্রতিটি বস্তুর সৃষ্টিকর্তা, আর সৃষ্টির ক্ষেত্রে তাঁর কোন শরীক নেই, এ বিষয়ে ঈমান আনা।

তৃতীয় স্তর: ইহসান

পবিত্রতা





সুতরাং বান্দা তার রবের প্রতি একদিকে উযূর মাধ্যমে বাহ্যিক পবিত্রতা আর অন্যদিকে এ ইবাদাত আদায়ের মাধ্যমে আত্মিক পবিত্রতা সহকারে পবিত্র অবস্থায় অগ্রসর হয়, আল্লাহ তা'আলার প্রতি একনিষ্ঠ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাতের অনুসরণকারী হিসেবে।

যেসব কাজের জন্যে অযু আবশ্যক:

১. সকল প্রকার সালাত, হোক তা ফরয অথবা নফল।

২. কা'বাতে তাওয়াফ করা।

৩. মুসহাফ (কুরআন) স্পর্শ করা।

আমি পবিত্র পানি দ্বারা অযু ও গোসল করব:

পবিত্র পানি হচ্ছে: প্রতিটি এমন পানি যা আসমান থেকে পতিত হয়, অথবা জমিন ফুড়ে বের হয়, আর তার মৌলিক বৈশিষ্ট্যের উপরে অবশিষ্ট থাকে, যার তিনটি বৈশিষ্ট্য: রঙ, স্বাদ এবং গন্ধ। এগুলোর কোন একটিও পানির পবিত্রতাকে বিনষ্ট করে না।

অযু

প্রথম ধাপ: নিয়ত করা। এটি অন্তরের বিষয়। নিয়তের অর্থ: আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে ইবাদাত সম্পাদনের ব্যাপারে অন্তরের দৃঢ় সংকল্প।

দ্বিতীয় ধাপ: আমি বলব: 'বিসমিল্লাহ' [যার অর্থ: আল্লাহর নামে শুরু করছি]

তৃতীয় ধাপ: তিনবার কবজি পর্যন্ত হাত ধোয়া।

চতুর্থ ধাপ: তিনবার কুলি করা।

কুলি করা হচ্ছে: মুখের অভ্যন্তরে পানি প্রবেশ করিয়ে তা নাড়াচাড়া করে ফেলে দেওয়া।

পঞ্চম ধাপ: তিনবার নাকে পানি দেওয়া, তারপরে নাক ঝেড়ে ফেলা। নাকে পানি দেওয়া: নিঃশ্বাসের সাথে পানি নাকের শেষ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া।

নাক ঝাড়া: নাকের মধ্যে থাকা নাকের ময়লা ও অন্যান্য বস্তু নিঃশ্বাসের দ্বারা বের করে ফেলা।

ষষ্ঠ ধাপ: তিনবার মুখমণ্ডল ধোয়া।

মুখমণ্ডলের সীমা:

মুখমণ্ডল: যা দ্বারা মুখোমুখি হতে হয়।

প্রস্থের দিক থেকে সীমা: এক পাশের কান থেকে অন্য পাশের কান পর্যন্ত।

দৈর্ঘ্যের দিক থেকে সীমা: মাথার চুল গজানোর সাধারণ স্থান থেকে চিবুকের শেষ পর্যন্ত যে অংশটুকু রয়েছে।

মুখ ধোয়া (উক্ত সীমার মধ্যে) যাবতীয় সব কিছুকে অন্তর্ভুক্ত করবে,যেমন: পাতলা চুল, এবং অনুরূপভাবে "আল বিয়াদ"এবং"আল আজার"।

বায়াদ্ব হচ্ছে (البياض): যা কানের লতি ও কানের বিপরীতে চোয়ালের হাড়ের উপরে থাকা দাঁড়ির মধ্যবর্তী খালি জায়গা।

"আল আজার: হলো:কানের ছিদ্র বরাবর তার বিপরীতে অবস্থিত হাড়, যেটা মাথার ভেতরে চলে গেছে, সেটাতে গজানো চুল। আর যা কানের লতির সরাসরি উপরের অংশ (Antitragus)পর্যন্ত নেমে আসে।

অনুরূপভাবে মুখমণ্ডল ধোয়া অন্তর্ভুক্ত করবে দাঁড়ির ঘন চুলসহ যা ঝুলে থাকে প্রতিটি এমন বাহ্যিক স্থানকে।

সপ্তম ধাপ: তিনবার আঙ্গুলের মাথার দিক থেকে শুরু করে দুই হাতকে কনুই পর্যন্ত ধোয়া।

দুই হাত ধোয়ার ফরযের মধ্যে দুই কনুইও প্রবেশ করবে।

অষ্টম ধাপ: একবার দুই হাত দিয়ে গোটা মাথা দুই কানসহ মাসেহ করা।

যা মাথার প্রথম থেকে শুরু করে ঘাড় পর্যন্ত নিয়ে যেতে হয়, এরপরে আবার হাতদুটি ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হয়।

অযুকারী তার দুই কানে তার দুই শাহাদাত আঙ্গুল প্রবেশ করাবে এবং এর বিপরীতে কানের বাইরের দিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দুটি লাগাবে; এভাবে করে সে কানের বাইরে এবং ভিতরে মাসেহ করবে।

নবম ধাপ: দুই পায়ের আঙ্গুল থেকে শুরু করে টাখনু পর্যন্ত তিনবার ধোয়া। দুই পা ধোয়ার ফরযের মধ্যে দুই টাখনুও প্রবেশ করবে।

টাখনুদ্বয় হচ্ছে: পায়ের গোছা থেকে নিচে ফুলে থাকা দুটি হাড়।

দশম ধাপ: মুসলিমের জন্য অযুর পরে এমন বলা সুন্নাত: أشهَدُ أن لا إلهَ إلَّا اللهُ وحدَه لا شريكَ له، وأشهَدُ أنَّ مُحمَّدًا عبدُه ورسولُه، اللَّهمَّ اجعَلْني مِن التَّوَّابِينَ، واجعَلْني مِن المُتطهِّرِينَ অর্থ: "আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোন প্রকৃত মাবূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। হে আল্লাহ! আমাকে তাওবাকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন। আর আমাকে পবিত্রতা অর্জনকারীদের মধ্যেও শামিল করুন।" যেহেতু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: "যে ব্যক্তি সুন্দর করে অযু করে বলবে: أشهَدُ أن لا إلهَ إلَّا اللهُ وحدَه لا شريكَ له، وأشهَدُ أنَّ مُحمَّدًا عبدُه ورسولُه، اللَّهمَّ اجعَلْني مِن التَّوَّابِينَ، واجعَلْني مِن المُتطهِّرِينَ অর্থ: "আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোন প্রকৃত মাবূদ নেই, তিনি একক, তাঁর কোন শরীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। হে আল্লাহ! আমাকে তাওবাকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন। আর আমাকে পবিত্রতা অর্জনকারীদের মধ্যেও শামিল করুন।' তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হবে, যেটি দ্বারা সে খুশি প্রবেশ করবে।"

নিন্মোক্ত কাজের কারণে অযু বাতিল হয়ে যায়:

১।প্রসাব ও পায়খানার রাস্তা দিয়ে কোন কিছু বের হওয়া, যেমন: প্রসাব, পায়খানা, বায়ু, বীর্য ও তরল পদার্থ।

২। পাগল, মাতাল, অচেতন হওয়া অথবা গভীর ঘুম জনিত কারণে জ্ঞান হারানো।

৩। যা গোসল ফরয করে এমন প্রতিটি কারণ, যেমন: শারীরিক অপবিত্রতার কারণ,হায়িয ও নিফাস।

মানুষ যখন তার প্রাকৃতিক প্রয়োজন শেষ করবে, তখন তার উপরে নাপাকী দূর করা ওয়াজিব হবে। হয়তো পবিত্র পানির মাধ্যমে, এটিই উত্তম, অথবা পবিত্র পানি ব্যতীত অন্য কিছু, যা দ্বারা নাপাকী দূর করা যায়, এমন কিছু যেমন:পাথর, কাগজ ও কাপড় টুকরা ইত্যাদির মাধ্যমে, তা হতে হবে তিনবার পরিপূর্ণ মুছে ফেলার দ্বারা অথবা প্রয়োজনে তার থেকে অধিকবার। এবং পরিষ্কার বৈধ কোন বস্তু দিয়ে তা পরিষ্কার করা।

চামড়া ও কাপড়ের দুই মোজার উপরে মাসেহ করা

কাপড় অথবা চামড়ার মোজা পরে থাকা অবস্থায় তার উপরে মাসেহ করা যাবে, দুই পা ধোয়ার দরকার হবে না। তবে তা নিম্নোক্ত শর্তে:

১। মোজা পরতে হবে ছোট অথবা বড় নাপাকী থেকে পরিপূর্ণ পবিত্র অবস্থায়।

২। মোজাদ্বয় পবিত্র হবে, অপবিত্র থাকবে না।

৩। মাসেহ শুধুমাত্র মাসেহের জন্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হতে হবে।

৪। মোজাদ্বয় হালাল হতে হবে। সুতরাং সেগুলো -উদাহরণস্বরূপ- চুরিকৃত অথবা ছিনতাইকৃত হবে না।

খুফ (চামড়ার মোজাদ্বয়): পাতলা চামড়া বা অনুরূপ কিছু থেকে তৈরী, যা পায়ে পরা হয়। অনুরূপ দুই পায়ের পাতা ঢেকে রাখে এমন জুতা। জাওরাব (কাপড়ের মোজা): কাপড় বা অনুরূপ কিছু থেকে তৈরী এমন পরিধেয় বস্তু, যা মানুষ পায়ে পরে থাকে। অনুরূপ এমন মোজা যাকে আরবীতে 'শাররাব' বলা হয়।

মোজার উপরে মাসেহ বৈধ হওয়ার হিকমাত: মোজার উপরে মাসেহ করার হিকমাত হচ্ছে: পরিহিত অবস্থায় চামড়ার অথবা কাপড়ের মোজা খোলা ও পা ধুয়ে ফেলা, মুসলিমদের মধ্য হতে যাদের উপরে কঠিন হয়ে যায়, তা হালকা ও সহজ করা, বিশেষভাবে সফর, প্রচন্ড ঠান্ডা ও শীতের সময়ে।

মাসেহের সময়কাল: মুক্বীম (নিজ এলাকাতে অবস্থানকারী): একদিন ও একরাত (২৪ ঘন্টা)। মুসাফির: রাতসহ তিনদিন (৭২ ঘন্টা)।

অযু নষ্ট হওয়ার পরে প্রথম মাসেহের সময় থেকে কাপড়ের অথবা চামড়ার মোজাদ্বয়ের উপরে মাসেহের সময় শুরু হবে।

কাপড়ের অথবা চামড়ার মোজাদ্বয়ের উপরে মাসেহের পদ্ধতি:

১। দুই হাত ভিজাতে হবে।

২। পায়ের উপরিভাগে হাত বোলাতে হবে (পায়ের আঙ্গুলের মাথা থেকে পায়ের গোছা শুরু হওয়া পর্যন্ত)।

৩। ডান পা মাসেহ করতে হবে ডান হাত দ্বারা এবং বাম পা মাসেহ করতে হবে বাম হাত দ্বারা।

মাসেহ বাতিলকারী বিষয়সমূহ: ১. যা গোসল ওয়াজিব করে ২. মাসেহের সময়কাল শেষ হয়ে যাওয়া।

গোসল

গোসল করার পদ্ধতি:

মুসলিম তার পুরো শরীরে পানি ঢেলে ধুয়ে ফেলবে, তা যেভাবেই হোক না কেন। এর মধ্যে কুলি করা এবং নাকে পানি দেওয়াও অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যখন তার শরীর পানি দ্বারা ধুয়ে ফেলবে, তখন তার থেকে বড় অপবিত্রা দূর হয়ে তার পবিত্রতা অর্জিত হয়ে যাবে।

এর থেকে পরিপূর্ণ পদ্ধতি রয়েছে, তা হচ্ছে: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে করতেন, তা হচ্ছে:

১। অপবিত্রতা দূরীকরণের নিয়ত করা।

২।"বিসমিল্লাহ" বলা, তিনবার হাত ধোয়া, এরপরে যৌনাঙ্গ ধুয়ে ফেলা।

৩। পূর্ণভাবে উযূ করা, যেভাবে সালাতের জন্য একজন মুসলিম অযু করে।

৪। মাথার উপরে তিনবার পানি ঢালা, এর মাধ্যমে চুলের গোঁড়াতে পানি পৌঁছাবে।

৫। সমস্ত শরীর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা। ডান পাশের দিক থেকে শুরু করবে, তারপরে বাম পাশ। এর সাথে দুই হাত দ্বারা কচলাবে, যাতে শরীরের সমস্ত স্থানে পানি পৌঁছে যায়।

গোসল না করা পর্যন্ত গোসল ফরয ব্যক্তির উপরে যা নিষিদ্ধ:

১। সালাত আদায় করা।

২। কা'বাতে তাওয়াফ করা।

৩। মসজিদে অবস্থান করা; তবে অবস্থান না করে মসজিদ অতিক্রম করা বৈধ।

৪। কুরআন স্পর্শ করা।

৫। কুরআন পাঠ করা।তায়াম্মুমমুসলিম ব্যক্তি যখন পবিত্র হওয়ার জন্য পানি পাবে না অথবা অসুস্থ বা অনুরূপ কারণে পানি ব্যবহার করতে অপারগ হবে এবং আশঙ্কা করবে যে সালাতের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যাবে, তখন সে মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করবে।﴿بسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ (1)الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ (2)الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ (3)مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ (4)إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ (5)اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ (6)صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ(7)﴾.

তায়াম্মুমের পদ্ধতি হচ্ছে: সে তার দুই হাত মাটিতে একবার মারবে, তারপরে তা দ্বারা তার মুখ এবং দুইহাত কব্জি পর্যন্ত মাসেহ করে নেবে। তবে মাটি পবিত্র হওয়া শর্ত।

নিন্মোক্ত কাজলো তায়াম্মুম বাতিল করে দেয়:

১। যে কারণে অযু বাতিল হয়, সে কারণে তায়াম্মুমও বাতিল হয়।

২। যে ইবাদাতের জন্য তায়াম্মুম করা হয়েছে, সে ইবাদাত শুরু করার আগেই যদি পানি পাওয়া যায়।

সালাত

প্রতিদিন রাতে ও দিনে মুসলিম ব্যক্তির উপরে আল্লাহ পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরয করেছেন। সেগুলো হচ্ছে: ফজর, যোহর, আসর, মাগরিব এবং ইশা।

\সালাতের প্রস্তুতি

যখন সালাতের ওয়াক্ত হবে, তখন মুসলিম ছোট নাপাকী থেকে এবং যদি বড় নাপাকী থেকে থাকে, তাহলে বড় নাপাকী থেকে পবিত্রতা অর্জন করবে।বড় অপবিত্রতা হচ্ছে: যা মুসলিমের উপরে গোসল ফরয করে।

ছোট অপবিত্রতা হচ্ছে: যা মুসলিমের উপরে অযু ফরয করে।

সতর ঢেকে, পবিত্র স্থানে, পবিত্র জামা-কাপড় পরিধান করে মুসলিম ব্যক্তি সালাত আদায় করবে।

সে উপযুক্ত পোশাকে সালাতের ওয়াক্তে তার শরীর আবৃত করে সজ্জিত হবে। কোন পুরুষের জন্য নাভী ও হাঁটুর মধ্যবর্তী স্থানের কোন অংশ সালাতের মধ্যে প্রকাশ করা বৈধ হবে না।﴿يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِأَزْوَاجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَابِيبِهِنَّ ذَلِكَ أَدْنَى أَنْ يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَحِيمًا﴾আর নারীর জন্য মুখমণ্ডল ও দুই হাতের তালু ছাড়া সালাতের মধ্যে সমস্ত শরীর ঢেকে রাখা ফরয।

সালাতরত অবস্থায় মুসলিম সালাতের জন্য নির্দিষ্ট কথা (কিরাত ও দুআ) ছাড়া অন্য কিছু বলবে না। ইমামের প্রতি খেয়াল করে চুপ থাকবে, সালাতে এদিক ওদিক তাকাবে না্ আর যদি সালাতের নির্ধারিত কথা (দু'আ ও যিকর) সে হিফজ করতে না পারে, তবে সে সালাত শেষ করা পর্যন্ত আল্লাহর যিকির করবে এবং তাসবীহ (সুবহানাল্লাহ) পড়বে। তবে তার উপরে আবশ্যক হবে অতিদ্রুত সালাত ও তার নির্দিষ্ট কথাসমূহ (দু'আ ও যিকর) শিখে নেওয়া।

আল্লাহর ইচ্ছায় আমরা যেন সহীহভাবে সালাত আদায় করতে পারি, সে জন্য আমরা নিম্নোক্ত ধাপসমূহ অনুসরণ করব এবং এগুলোর প্রতি যত্নবান হব:

প্রথম ধাপ: যে ফরয সালাত আমি আদায় করতে চাই, তার নিয়ত করা, এর স্থান হচ্ছে অন্তর।

অযু করার পরে আমি কিবলামুখী হব, এবং দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করব, যদি আমি সেক্ষেত্রে সক্ষম হয়ে থাকি।

দ্বিতীয় ধাপ: সালাতে প্রবেশের নিয়ত করে দুই হাত কাঁধ বরাবর উত্তোলন করে আমি বলব: 'আল্লাহু আকবার'।




তারপরে আমি বলব: آمين "আমীন।" যার অর্থ: হে আল্লাহ, আপনি কবূল করুন।

সূরা ফতিহা পাঠ করা শেষে কুরআন থেকে আমার জন্য যা সহজ তা শুধু প্রথম ও দ্বিতীয় রাকাতে পড়ব। এটা ওয়াজিব নয়, তবে এটা পড়াতে অসংখ্য ছওয়াব রয়েছে।﴿إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللَّهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ آيَاتُهُ زَادَتْهُمْ إِيمَانًا وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ﴾

ষষ্ঠ ধাপ: আমি বলব: الله أكبر "আল্লাহু আকবার", তারপরে আমি রুকু করব এমনভাবে যাতে আমার পিঠ সোজা থাকে, আমার হাত দুটি আমার হাঁটুর উপরে আঙ্গুলগুলি আলাদাভাবে থাকবে। তারপরে আমি রুকুতে তিনবার বলব: سبحان ربي العظيم "সুবহানা রব্বিয়াল 'আযীম"।

সপ্তম ধাপ: আমি আমার দুই হাত কাঁধ বরাবর উত্তোলন করে سمع الله لمن حمده "সামি'আল্লাহু লিমান হামিদাহ" বলে রুকু থেকে উঠব। যখন দাঁড়িয়ে আমার শরীর সোজা হয়ে যাবে, তখন আমি বলব: ربنا ولك الحمد "রব্বানা ওয় লাকাল হামদ"।

অষ্টম ধাপ: আমি "আল্লাহু আকবার" বলে আমার দুই হাত, দুই হাঁটু, পায়ের দুই পাতা, কপাল ও নাকের উপরে ভর দিয়ে সিজদা করব আর সিজদাতে তিনবার বলব: سبحان ربي الأعلى "সুবহানা রব্বিয়াল আ'লা"।

নবম ধাপ: আমি "আল্লাহু আকবার" বলে সিজদা থেকে উঠব, যাতে বাম পায়ের পাতার উপরে বসে ডান পায়ের পাতা উঁচু করে বসা অবস্থায় আমার পিঠ সোজা হয়। আর আমি তিনবার বলব: ربي اغفر لي "রব্বিগফিরলী"।

দশম ধাপ: আমি "আল্লাহু আকবার" বলব, এবং পুনরায় প্রথম সিজদার মত আরেকটি সিজদা করব।

এগারোতম ধাপ: আমি "আল্লাহু আকবার" বলে সিজদা থেকে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়াব। আর প্রথম রাকাত আমি যেমন করে আদায় করেছি, সেভাবে বাকী রাকাতগুলো আদায় করব।



বারোতম ধাপ: তারপরে সালাত থেকে বের হওয়ার নিয়তে আমি ডানদিকে সালাম ফিরিয়ে বলব: السلام عليكم ورحمة الله "আস-সালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহ", আবার বামদিকে সালাম ফিরিয়ে বলব: "আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ"। আর এর মাধ্যমেই আমি আমার সালাত আদায় সমাপ্ত করব।

মুসলিম নারীর পর্দা

মুসলিম নারীর উপরে আল্লাহ তা'আলা তার নিজস্ব দেশে প্রচলিত কাপড়ের মাধ্যমে হিজাব অবলম্বন করা, তার সতর ও সমস্ত শরীর অপরিচিত পুরুষের কাছ থেকে ঢেকে রাখা আবশ্যক করে দিয়েছেন। তার স্বামী ও মাহরামগণ ছাড়া অন্য কারো সামনে তার হিজাব খোলা বৈধ হবে না। মাহরাম হচ্ছে: কোন মুসলিম নারীর জন্য পুরুষদের মধ্য হতে যাদেরকে বিবাহ করা চিরস্থায়ীভাবে অবৈধ। তারা হচ্ছে: পিতা -যতই ঊর্ধতন হোক না কেন-, পুত্র -যতই অধঃস্তন হোক না কেন-, চাচাগণ, মামাগণ, ভাই, ভাইয়ের পুত্র, বোনের পুত্র, মায়ের স্বামী (সৎ পিতা), স্বামীর পিতা -যতই ঊর্ধতন হোক না কেন-, স্বামীর পুত্র (সৎ ছেলে) -যতই অধঃস্তন হোক না কেন-, দুধভাই, দুধ মায়ের স্বামী। এবং বংশগত কারণে যারা হারাম হয়, দুধ সম্পর্কের কারণেও তারা হারাম হয়।

মুসলিম নারী তার পোষাকের ব্যাপারে কয়েকটি মূলনীতি খেয়াল রাখবে:

প্রথমত: সমস্ত শরীর ঢেকে রাখা।

দ্বিতীয়ত: যখন সে পরপুরুষের সামনে উপস্থিত হবে তখন মহিলারা সাধারণত সাজগোজের জন্য যে পোষাক পরিধান করে, এটি এমন পোষাক হবে না।

তৃতীয়ত: এটি এমন স্বচ্ছ হবে না, যা তার শরীরকে প্রকাশ করে দেয়।

চতুর্থত: পোষাকটি ঢিলেঢালা হবে। এমন আটোসাটো হবে না, যা তার শরীরের কোন অঙ্গকে বুঝতে সাহায্য করবে।

পঞ্চমত: সেটি সুগন্ধিযুক্ত হবে না, যখন সে কোন পরপুরুষের পাশ দিয়ে অতিক্রম করবে, আর তারা তার থেকে উক্ত সুগন্ধ গ্রহণ করবে।

ষষ্ঠত: পুরুষের পোষাকের সাথে সাদৃশ্য রাখবে না।

সপ্তমত: অমুসলিম মহিলারা তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান অথবা ইবাদাতের ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকে, এমন পোষাকের সাথে সাদৃশ্য রাখবে না।

অষ্টমত: পোষাকটি খ্যাতির পোষাক হবে না।

মুমিন ব্যক্তির গুণাবলী:

- সে তার কথায় সত্যবাদী, সে মিথ্যা বলে না।﴿مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِنْ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُمْ بِأَحْسَنِ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾- ওয়াদা ও চুক্তি পূর্ণ করে।﴿وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ فَلْيَسْتَجِيبُوا لِي وَلْيُؤْمِنُوا بِي لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُونَ﴾﴿وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ﴾

- বিবাদের সময়ে পাপাচার করে না।

- আমানত আদায় করে।﴿اللَّهُ وَلِيُّ الَّذِينَ آمَنُوا يُخْرِجُهُمْ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ﴾

- সে তার মুসলিম ভাইয়ের জন্য সেটাই পছন্দ করে, যা সে তার নিজের জন্য পছন্দ করে।

- দয়াশীল।

- মানুষের প্রতি উত্তম আচরণকারী।

- আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে।

- আল্লাহর তাকদীরে সন্তুষ্ট থাকে, আনন্দের সময়ে তাঁর শুকরিয়া আদায় করে আর বিপদে সবর করে।﴿الَّذِينَ آمَنُوا وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُمْ بِذِكْرِ اللَّهِ أَلَا بِذِكْرِ اللَّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ﴾- লজ্জার গুণে ভূষিত।﴿وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمْرًا أَنْ يَكُونَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ وَمَنْ يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا مُبِينًا﴾

- সৃষ্টির প্রতি দয়ালু।

- হিংসা থেকে অন্তর পবিত্র এবং তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অন্যের উপরে বাড়াবাড়ি করা থেকে পবিত্র।

- মানুষকে ক্ষমা করে।

- সুদ খায় না এবং এর কোন লেনদেনও করে না।

- যিনা করে না।

- মদ পান করে না।

- প্রতিবেশীর সাথে উত্তম আচরণ করে।

- সে জুলুমও করে না আবার ধোঁকাও দেয় না।

- চুরি করে না আবার কূটকৌশলও অবলম্বন করে না।

- তার পিতামাতার সাথে সদাচরণকারী; যদিও তারা অমুসলিম হোক না কেন, ভালোকাজে তাদের অনুগত হয়।

- স্বীয় সন্তানদেরকে সম্মানের সাথে প্রতিপালন করে, তাদেরকে শরী'আতের কর্তব্য সম্পর্কে আদেশ করে এবং হারাম ও মন্দ কাজ থেকে তাদেরকে নিষেধ করে।

- অমুসলিমদের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করে না, তাদের ধর্মীয় বিশেষ বৈশিষ্ট্যের মধ্যে অথবা এমন অভ্যাসের মধ্যে, যা তাদের বৈশিষ্ট্য ও নির্দেশক হিসেবে গণ্য হয়েছে।

- তার ইবাদতে কমতি ও পাপ থেকে আল্লাহর কাছে তাওবা করে এবং ক্ষমা চায়।

মুসলিমের আকীদার ক্ষেত্রে কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি:

১। আল্লাহ আমাদের রব, তিনি ছাড়া কোন প্রকৃত মাবূদ নেই। তিনি ছাড়া কোন প্রকৃত রব নেই, তিনি ছাড়া কোন প্রকৃত ইলাহ নেই, কোন বস্তুই তাঁর মত নয়, কোন বস্তু তাঁকে অক্ষম করতে পারে না। তিনিই সর্বশ্রোতা এবং সর্বদ্রস্টা।

২। আল্লাহ সুবহানাহু ওয় তা'আলা আসমানের উপরে সকল মাখলুক থেকে ঊর্ধ্বে, তাদের থেকে পৃথক অবস্থায় রয়েছেন। তাঁর ঊর্ধ্বে অবস্থান করা সবদিক থেকেই সার্বজনীন; সত্তাগতভাবে ঊর্ধ্বে থাকা, মর্যাদাগতভাবে ঊর্ধ্বে থাকা, শক্তির দিক থেকে ঊর্ধ্বে থাকা। আর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা সকল বিষয় সম্পর্কে সম্যক অবগত।

৩। আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর ক্ষেত্রে আমরা সেগুলো সাব্যস্ত করি, যা আল্লাহ তা'আলা তাঁর নিজের জন্য অথবা তাঁর নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জন্য সাব্যস্ত করেছেন। আর আমরা সেগুলোকে নাকচ করি, যা আল্লাহ তাঁর নিজের ক্ষেত্রে এবং তাঁর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ক্ষেত্রে নাকচ করেছেন।

৪। আল্লাহ তা'আলা বান্দার আহ্বানে সাড়া দেন, তাদের প্রয়োজনসমূহ পূরণ করেন এবং তিনিই উপকার ও ক্ষতি করতে পারেন। চোখের একটি পলকও বান্দা তাঁর থেকে অমুখাপেক্ষী হতে পারে না। কোন মুসলিমের জন্য বৈধ হবে না যে, সে তার কোন প্রকারের ইবাদত আল্লাহ ছাড়া অন্যের উদ্দেশ্যে করবে, যেমন: দু'আ, সালাত, মানত, যবাই, ভয়, আশা, ভরসা ইত্যাদি ইবাদাতসমূহ, এসব ইবাদত হোক তা প্রকাশ্য অথবা অপ্রকাশ্য। আর যে আল্লাহ ছাড়া অন্যের জন্য কোন ইবাদাত করে, সে আল্লাহর সাথে শিরককারী (মুশরিক)।

৫। সবচেয়ে ঘৃণিত ও সবচেয়ে বড় গুনাহ হচ্ছে আল্লাহর সাথে শিরক করা। যে ব্যক্তি শিরকের উপরে মারা যাবে, তার উপরে আল্লাহ জান্নাতকে হারাম করে দিবেন এবং তার আবাসস্থল হবে জাহান্নাম। শিরক এমন পাপ, যদি বান্দা এর উপরে থেকে মারা যায় এবং তাওবা না করে, তাহলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন না।

৬। কোন বান্দা যে ভুল করেছে, তা সঠিক হওয়ার ছিল না আবার যা সে সঠিক করেছে, তাও ভুল হওয়ার ছিল না। মুসলিমের উপরে ওয়াজিব হচ্ছে, সে আল্লাহর তাকদীর ও ফয়সালার উপরে সন্তুষ্ট থাকবে। আল্লাহ তা'আলার ফয়সালার উপরে সন্তুষ্ট থাকবে, স্বীয় রবের প্রশংসা করবে এবং সকল অবস্থায় সে তাঁর শুকরিয়া জ্ঞাপন করবে।

৭। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নবী, সর্বশ্রেষ্ঠ মানব, সর্বশেষ রাসূল। তিনি কিয়ামাতের দিন শাফা'আতকারী এবং তার শাফা'আত গ্রহণ করা হবে। আল্লাহ তাঁকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন, যেমন তিনি ইবরাহীম আলাইহিস সালামকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন।

মুসলিমের উপকারী সংক্ষিপ্ত নির্দেশিকা

ভূমিকা:

আল-ওয়াকীল (পরম নির্ভরযোগ্য কর্ম-সম্পাদনকারী): স্বীয় মাখলুকের রিযিক সম্পাদনের দায়িত্বশীল। তাদের যাবতীয় কল্যাণের তত্ববধায়ক। আর যিনি তার ওলীদের অভিভাবক। ফলে সকল কর্মকে তাদের জন্য সহজ করে দেন এবং কঠিন থেকে তাদের দূরে সরান। আর তাদের যাবতীয় বিষয়ের জন্য তিনিই যথেষ্ট।

মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ প্রদত্ত রহমত:

মানুষের জন্য ফরয হচ্ছে তিনি যার আদেশ করেছেন তার অনুসরণ করা, যার ব্যাপারে সংবাদ দিয়েছেন তা সত্য বলে বিশ্বাস করা, তিনি যা থেকে নিষেধ করেছেন অথবা সতর্ক করেছেন তা থেকে বিরত থাকা এবং তিনি যা শরী'আতবদ্ধ করেছেন তা ব্যতীত আল্লাহর ইবাদাত না করা।

لا إله إلا الله বা আল্লাহ ব্যতীত কোনো প্রকৃত মাবূদ নেই, একথার অর্থ: আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন মা'বূদ নেই।

ইনজিল: এটি আল্লাহ তা'আলা তাঁর নবী ঈসা আলাইহিস সালামের উপরে নাযিল করেছেন।

মুখমণ্ডলের সীমা:

চামড়া ও কাপড়ের দুই মোজার উপরে মাসেহ করা

কাপড়ের অথবা চামড়ার মোজাদ্বয়ের উপরে মাসেহের পদ্ধতি:

সতর ঢেকে, পবিত্র স্থানে, পবিত্র জামা-কাপড় পরিধান করে মুসলিম ব্যক্তি সালাত আদায় করবে।